ভীতি থেকেই তারেক-জুবাইদার বানোয়াট মামলা সচল করেছে - মির্জা ফখরুল
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:৪১ এএম, ২১ এপ্রিল,বৃহস্পতিবার,২০২২ | আপডেট: ০১:২৯ পিএম, ২০ নভেম্বর,
বুধবার,২০২৪
২০০৭ সালে জরুরি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার পুত্র তারেক রহমান ও পুত্রবধূ ডা. জুবাইদা রহমানের রিট মামলার রুল শুনানির দিন পিছিয়ে আগামী ২৯ মে দিন ধার্য করেছেন হাইকোর্ট। তারেক রহমান-জুবাইদা রহমানের আইনজীবীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজ বুধবার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের বেঞ্চ এদিন ধার্য করেন। আদালতে তারেক রহমান-জুবাইদা রহমানের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, দুদকের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খুরশিদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক। এর আগে গতকাল ১৫ বছর পর ২০০৭ সালে জরুরি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার পুত্র তারেক রহমান ও পুত্রবধূ ডা. জুবাইদা রহমানের রিট মামলার রুল শুনানির জন্য আজকের দিন ধার্য করেছিলেন আদালত।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০০৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর ঘোষিত আয়ের বাইরে ৪ কোটি ৮১ লাখ ৫৩ হাজার ৫৬১ টাকার মালিক হওয়া ও সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে রাজধানীর কাফরুল থানায় এ মামলা করা হয়। মামলায় তারেক রহমান, তার স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমান ও শাশুড়ি ইকবাল মান্দ বানুকে আসামি করা হয়। পরে একই বছরে তারেক রহমান ও তার স্ত্রী পৃথক রিট আবেদন করেন। রিটে জরুরি আইন ও এ মামলার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করেন। হাইকোর্ট রুল জারি করে স্থগিতাদেশ দেন। এরপর রিট মামলাগুলো মঙ্গলবার কার্যতালিকায় আসে। এরপর রুল শুনানির জন্য দিন ঠিক করেন হাইকোর্ট।
এদিকে একই মামলার বৈধতা নিয়ে আরেকটি ফৌজদারি আবেদন করেছিলেন ডা. জুবাইদা রহমান। ওই সময় ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে রুল জারি করেছিলেন হাইকোর্ট। ওই রুলের শুনানি শেষে ২০১৭ সালের ১২ এপ্রিল রায় দেন হাইকোর্ট। রায়ে মামলা বাতিলে জারি করা রুল খারিজ করে দেন। একই সঙ্গে জুবাইদা রহমানকে আট সপ্তাহের মধ্যে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণেরও নির্দেশ দিয়েছিলেন। ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করেন জুবাইদা রহমান। যা গত ১৩ এপ্রিল খারিজ করেন আপিল বিভাগ।
ভীতি থেকেই তারেক-জুবাইদার বানোয়াট মামলা সচল করেছে : সবদিক থেকে ব্যর্থ হয়ে সরকার আশঙ্কা ও ভীতি থেকেই বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং তার সহধর্মিণী প্রখ্যাত চিকিৎসক ডা. জুবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে বানোয়াট মামলা সচল করেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বিএনপির সহ-দফতর সম্পাদক মোহাম্মাদ মুনির হোসেন স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে তিনি এই অভিযোগ করেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ২০০৭ সালে জরুরি সরকারের সময় চক্রান্তমূলকভাবে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে অসত্য মামলা রুজু করা হয়। তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা ছিল তাঁকে রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে হেয় করার এক সুপরিকল্পিত মাস্টারপ্ল্যানের অংশ। একই পদ্ধতিতে অন্যান্য নেতৃবৃন্দের নামে দায়ের করা মামলার কার্যক্রম উচ্চ আদালত কর্তৃক স্থগিত থাকলেও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং তাঁর সহধর্মিণী প্রখ্যাত চিকিৎসক ডাঃ জুবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে বানোয়াট মামলা এখনো সচল রাখা হয়েছে। সরকারের এহেন ষড়যন্ত্র রাজনৈতিক প্রতিহিংসার চরম বহিঃপ্রকাশ। হঠাৎ করে আজকে মামলাগুলো তালিকায় নিয়ে এসে শুনানির দিন ধার্য করা, সমগ্র প্রক্রিয়াটাই দুরভিসন্ধিমূলক, অশুভ নীল নকশা বাস্তবায়নের পথে এগিয়ে যাওয়া।
তিনি বলেন, গুম, বিচার বহির্ভূত হত্যায় সারা বিশ^ যখন সোচ্চার, গণতন্ত্রহীনতায় সারা জাতি যখন বাকরুদ্ধ, আবশ্যকীয় জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধিতে মানুষের যখন নাভিশ্বাস উঠেছে, অর্থ পাচার করে বিদেশে লুন্ঠনের অঢেল সম্পদ গড়ে ওঠার সংবাদ যখন মানুষের মুখে মুখে, তখন তারেক রহমান ও ডাঃ জুবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার কার্যক্রম চালু রাখা অবৈধ সরকারের টিকে থাকার জন্য মরণ কামড়। সবদিক থেকে ব্যর্থ হয়ে সরকার আশংকা ও ভীতি থেকেই মামলা সচল করেছে। ক্ষমতাসীনরা দৃশ্যমান লুটপাটে জড়িত থাকলেও এ নিয়ে আইন-প্রশাসন ও দুদকের মতো সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে। বর্তমানে রাষ্ট্রের সকল অঙ্গই সরকারের আজ্ঞাবাহী। তবে চক্রান্তজাল যতই বুনে যাক না কেন তাতে সরকারের কোনো লাভ হবে না। নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য এক দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলতে জনগণ অঙ্গীকারাবদ্ধ।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আকস্মিকভাবে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মামলার যে কার্যক্রম শুরু হলো তা নিঃসন্দেহে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।