পদ্মা সেতু আওয়ামী লীগ সরকারের দুর্নীতির মাইলফলক - সোহেল
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:৪০ পিএম, ১৯ এপ্রিল,মঙ্গলবার,২০২২ | আপডেট: ০১:৩৪ পিএম, ২২ নভেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হলে পদ্মা সেতু আওয়ামী লীগ সরকারের দুর্নীতির একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল। দশ হাজার কোটি টাকা থেকে শুরু করে শেষ অবধি এই সেতুর নির্মাণ ব্যয় দাঁড়াবে ৫০ হাজার কোটি টাকা।
সরকারকে মহাচোর আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, চুরির দায়ে কেউ কেউ দুবাইয়ের আদালতে সপরিবারে হাজিরা দিতে যান। তাদের সময় ফুরিয়ে এসেছে। মাত্র আর কটা দিন। খুব শিগগিরই কেন্দ্র থেকে আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা হবে। রাজপথে থেকে অবৈধ অনির্বাচিত নিশিরাতের সরকারকে মোকাবেলা করার জন্য দলীয় নেতাকর্মীদের প্রতি আহবান জানান তিনি।
আজ মঙ্গলবার খুলনায় বিএনপি আয়োজিত এক কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় কেন্দ্রীয় নেতা সোহেল এসব কথা বলেন। দুপুরে সোনাডাঙ্গা থানার নবপল্লী কমিউনিটি সেন্টারে সদর ও সোনাডাঙ্গা থানার প্রাথমিক সদস্য ফরম বিতরণ ও তথ্য সংগ্রহ কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণ দিচ্ছিলেন তিনি।
হাবিব উন নবী খান সোহেল বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান শুধু স্বাধীনতার ঘোষকই নন, রণাঙ্গণের বীর মুক্তিযোদ্ধাও। যারা তার সমালোচনা করেন, তাদের বড় নেতা যুদ্ধেই ছিলেন না। এমনকি অন্য নেতারাও ছিলেন ভারতে। ৭ মার্চের ভাষণে যদি যুদ্ধের ঘোষণা থাকে তাহলে ওই দিন বা পরদিন থেকে যুদ্ধ শুরু হয়নি কেন- প্রশ্ন রাখেন তিনি? এরপরও পাকিস্তানী শাসকদের সাথে আলোচনা চালিয়েছিলেন কেন? ৭২ থেকে ৭৫ সালের ভয়াবহ দু:শাসনকে স্মরণ করে তিনি বলেন, ব্যাংক ডাকাতি, শহীদ মিনার থেকে ছাত্রী অপহরণ সহ অসংখ্য অপকর্মে জড়িত সন্তানদের সুযোগ্য পিতা যিনি হতে পারেননি, তিনি গোটা জাতির পিতা দাবি করেন কি করে?
মাত্র সাড়ে তিন বছরের শাসনামলে জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের এমন কোন সেক্টর নেই যেখানে উন্নয়ন ও উতপাদনের ছোঁয়া লাগাননি উল্লেখ করে তিনি বলেন, তিনি ড্রইংরুম নির্ভর রাজনীতিকে জনগনের মাঝখানে নিয়ে গিয়েছিলেন। এবং রাজনীতিবদিদের বাধ্য করেছিলেন জনতার কাতারে গিয়ে অবস্থান নিতে। জিয়াউর রহমানকে হত্যা করা গেলেও তার আদর্শকে হত্যা করা যায়নি দাবি করে কেন্দ্রীয় নেতা সোহেল বলেন, এতো অত্যাচার, নির্যাতন, হামলা, মামলা, আদালত ও কারাগারে অসহনীয় দিনযাপন, খুন-গুম-অপহরণ, পুলিশী নির্যাতন ভীতি প্রদর্শন- তবুও একজন নেতাকর্মীকেও আদর্শচ্যুত করা সম্ভব হয়নি। রোজার মধ্যে তীব্র খরতাপ উপেক্ষা করে এখানে উপস্থিতি তার প্রমাণ করে।
বিএনপির দুয়ার সবার জন্য উন্মুক্ত জানিয়ে সোহেল বলেন, সবার দুয়ারে দুয়ারে গিয়ে সদস্য ফমর পৌছে দিতে হবে। বয়স্ক, নিস্ক্রিয়, নীরব সমর্থক সবাইকে বিএনপির পতাকাতলে নিয়ে আসতে হবে। বিএনপির ৩৫ লক্ষ নেতাকর্মী প্রতিনিয়ত আদালতে হাজিরা দিচ্ছেন জানিয়ে সোহেল বলেন, আমরা আদালতে যাই প্রতিহিংসার গায়েবী মামলায় হাজিরা দিতে। আ্র কেউ কেউ দুবাইয়ের আদালতে সপরিবারে হাজিরা দেন চুরি করার দায়ে। তাদের সময় ফুরিয়ে এসেছে।
সোনাডাঙ্গা থানা সাংগঠনিক কমিটির আহবায়ক কাজী মাহমুদ আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন মহানগর বিএনপির আহবায়ক শফিকুল আলম মনা। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সদর থানা সাংগঠনিক কমিটির আহবায়ক আজিজুল হাসান দুলু। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, নির্বাহী কমিটির সদস্য খান রবিউল ইসলাম রবি, মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিন, সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক মো: তারিকুল ইসলাম জহির, স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় নেতা নজরুল ইসলাম।
মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক বদরুল আনাম খান ও শেখ সাদীর সঞ্চালনায় এ সময় উপস্থিত ছিলেন খান জুলফিকার আলী জুলু, মোল্লা খায়রুল ইসলাম, শের আলম সান্টু, আবুল কালাম জিয়া, শেখ তৈয়েবুর রহমান, মাহবুব হাসান পিয়ারু, চৌধুরী শফিকুল ইসলাম হোসেন, একরামুল হক হেলাল, হাফিজুর রহমান মনি, আশফাকুর রহমান কাকন, ওয়াহিদুর রহমান দীপু, বেগ তানভিরুল আযম, কে এম হুমায়ুন কবির, সৈয়দ সাজ্জাদ আহসান পরাগ, এহতেশামুল হক শাওন, একরামুল হক মিল্টন, তারিকুল ইসলাম, শেখ জামালউদ্দিন, মোল্লা ফরিদ আহমেদ, নাসির খান, মিজানুর রহমান মিলটন, শফিকুল ইসলাম শফি, মুজিবর রহমান, জেলা ছাত্রদল সভাপতি আব্দুল মান্নান মিস্ত্রি, মহানগর ছাত্রদল আহবায়ক ইসতিয়াক আহমেদ ইস্তি, সদস্য সচিব তাজিম বিশ^াস, মহানগর মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট কানিজ ফাতেমা আমিন প্রমুখ।
কর্মসূচির শুরুর আগে নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত পুলিশ সদস্যরা অডিটোরিয়ামের বাইরে রাস্তায় স্থাপিত কয়েকটি মাইক খুলে ফেলত বাধ্য করেন। এ নিয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে পুলিশের বাকবিতন্ডা হয়। সাময়িক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
বিশেষ অতিথির বক্তৃতাকালে আজিজুল বারী হেলাল পুলিশের এহেন আচরণের তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, ২০২৩ সালের নির্বাচনের আগেই আমরা শেখ হাসিনার সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করবো। আগামী নির্বাচন হবে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে। দেশে ফ্যাসিবাদী শাসন জেকে বসেছে। প্রশাসনের ভাইয়েরা এই নিশিরাতের সরকারকে আর লালন পালন করবেন না। তারা এখন পালাবার পথ খুজবে। খুব শিগগিরই কাবুল বিমানবন্দরের চিত্র দেখতে পাবেন।
বক্তব্য শেষে সদর ও সোনাডাঙ্গা থানা প্রতিটি ওয়ার্ডের সিনিয়র নেতাদের হাতে প্রাথমিক সদস্য ফরম তুলে দেয়া হয়।