জাহাঙ্গীরের দুর্নীতির অনুসন্ধান ৬ মাসে শেষ করার নির্দেশ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:৩০ পিএম, ১৫ ফেব্রুয়ারী,
বুধবার,২০২৩ | আপডেট: ০৫:৫২ পিএম, ১৯ নভেম্বর,মঙ্গলবার,২০২৪
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের বরখাস্ত মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগের অনুসন্ধান ছয়মাসের মধ্যে শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। অনুসন্ধান শেষে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে প্রতিবেদন জমা দিতে বলেছেন আদালত।
আজ বুধবার হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে আজ রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল আবু মোহাম্মদ (এএম) আমিন উদ্দিন। তার সঙ্গে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক। অন্যদিকে দুদকের পক্ষে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান। তার সঙ্গে ছিলেন অ্যাডভোকেট টাইটাস হিল্লোল রেমা। রিটকারীর পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলাম (জেড আই) খান পান্না ও অ্যাডভোকেট ইকরামুল হক টুটুল। এছাড়া বহিস্কৃত মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট সারোয়ার আহমেদ।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে কটূক্তি ও মুক্তিযুদ্ধে বীর শহীদের সংখ্যা নিয়ে বিতর্কিত বক্তব্য দেয়ার অভিযোগে ২০২১ সালের ১৯ নভেম্বর জাহাঙ্গীর আলমকে গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও দলের সদস্যপদ থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়। তবে সম্প্রতি আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে তাকে সাধারণ ক্ষমা করা হয়। গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে ভুয়া টেন্ডার, আরএফকিউ, বিভিন্ন পদে অযৌক্তিক লোকবল নিয়োগ, একই কাজ বিভিন্ন প্রকল্পে দেখিয়ে অর্থ আত্মসাৎ ও প্রতিবছর হাট-বাজার ইজারার অর্থ যথাযথভাবে নির্ধারিত খাতে জমা না রাখাসহ নানাবিধ অভিযোগে ২০২১ সালের ২৫ নভেম্বর সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। পরে গাজীপুর সিটির প্যানেল মেয়র মো. আসাদুর রহমানকে ভারপ্রাপ্ত মেয়রের দায়িত্ব দেয়া হয়। সেদিন তার অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে তদন্তের জন্য তিন সদস্যের কমিটি গঠন করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। অতিরিক্ত সচিব মুস্তাকিম বিল্লাহ ফারুকীকে প্রধান করে এ কমিটি করা হয়।
এদিকে, ২০২২ সালের জুনে জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতি ও অনিয়মের অনুসন্ধান শুরু করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ওই বছরের ২৬ জুন দুদক সচিব মো. মাহবুব হোসেন গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প থেকে অনিয়মের মাধ্যমে কোটি টাকা আত্মসাৎ করা ও ভুয়া ব্যাংক অ্যাকাউন্টে কোটি টাকা লেনদেনের একটি অভিযোগ অনুসন্ধানের জন্য কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অভিযোগটি অনুসন্ধানের জন্য একটি অনুসন্ধান টিম গঠনের প্রস্তাবসহ কমিশনের অনুমোদনের জন্য নথি উপস্থাপন করা হয়েছে। প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে দুদক উপ-পরিচালক নারগিস সুলতানা ও সহকারী পরিচালক মো. আশিকুর রহমানের সমন্বয়ে অনুসন্ধান টিম গঠন করে দুদক।
এদিকে, গত ৩ ফেব্রুয়ারি ‘গ্রাফ্ট ইজ হিজ মিডল নেইম’ শিরোনামে একটি ইংরেজি দৈনিকে সংবাদ প্রকাশ হয়। ওই প্রতিবেদন যুক্ত করে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের পশ্চিম ভিরুলিয়া সরকার বাড়ির ওসমান গনি সরকারের ছেলে মো. আব্দুর রহিম সরকার হাইকোর্টে এ রিট করেন। রিটে জাহাঙ্গীর আলম মেয়র থাকাকালে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগ দুদক আইনে বেঁধে দেয়া সময়ে অনুসন্ধান শুরু বা শেষ করতে বিবাদীদের ব্যর্থতা ও নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ হবে না এবং অবিলম্বে দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত সম্পন্ন এবং আইন অনুসারে যথাযথ কার্যক্রম গ্রহণের নির্দেশ কেন দেয়া হবে না মর্মে রুল জারির আর্জি জানানো হয়। পাশাপাশি তদন্ত রিপোর্ট হাইকোর্টে দাখিলের নির্দেশনাও চাওয়া হয়। রিটে দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব, অতিরিক্ত সচিব মোস্তাকিম বিল্লাহ ফারুকী, বিএফআইউ, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র এবং জাহাঙ্গীর আলমকে বিবাদী করা হয়।