জামালপুরে বিএনপির সমাবেশে - রুমিন ফারহানা এমপি
জনগণের সাথে মশকারা করার ফলে ২১ বছর রাস্তায় রাস্তায় ঘুরেছেন ক্ষমতায় আসতে পারেন নাই
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:৩৩ পিএম, ২ মার্চ,
বুধবার,২০২২ | আপডেট: ০১:৪৬ এএম, ১৭ নভেম্বর,রবিবার,২০২৪
বিএনপির আর্ন্তজাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা এমপি বলেছেন, সংসদে আমি বলেছিলাম বাজারে আগুন। এই যে ভয়াবহ করোনা গেল কত মানুষ চাকুরী হারিয়েছে, কত মানুষ বেকার হয়েছে, পেশা পরিবর্তন করতে বাধ্য হয়েছে, আজকে অনেকের ঘরে চাল নেই, তারা ঘরের ভাড়া দিতে পারে না শেখ হাসিনা আপনি জবাব দেন আপনি কোন জবাব দিতে পারেননি।
আজ বুধবার দুপুরে শহরের স্টেশন রোডে জামালপুর জেলা বিএনপি কার্যালয়ের সামনে তেল, গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধগতির প্রতিবাদে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান বক্তার বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
রুমিন ফারহানা এমপি বলেন, আজকে সাড়ে ৫ কোটি থেকে ৬ কোটি মানুষ দারিদ্রসীমার নিচে চলে গেছে এই করোনায়। আরও কত মানুষ কাজ হারিয়েছে। বহু মানুষ চিরতরে শহর ছেড়ে গ্রামে চলে গেছে এই সরকারের কাছে কোন হিসাব নাই। সরকার বলে মাথা পিছু আয় নাকি বেড়ে গেছে, আরে মাথাপিছু আয় কারে বলে সরকারের সাথে আমার সাধারণ ভাইয়ের যখন আয় যুক্ত করো তখনতো মাথা পিছু আয় বেশিই মনে হবে। এটা তো মাথা পিছু আয় না, এটা হলো লুটেরা সরকারের বানানো আয়। আজ সাধারণ মানুষের অবস্থা দিনের পর দিন খারাপের দিকে যাচ্ছে। সরকারের কোন নজর নেই।
তিনি আরও বলেন, যখন আমরা ছিলাম ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল তখন চালের দাম ১৭ থেকে ২০টাকা কেজি, আর এখন সেই চালের দাম বাড়িয়েছে ৭০ টাকা কেজিতে। ৭০ টাকা কেজি চাল প্রধানমন্ত্রী আপনি কিনে খেতে পারেন আমরাতো পারিনা, সাধারণ মানুষ কিনে খেতে পারেনা। আমাদের সময় পেঁয়াজের দাম ছিল ৮ টাকা কেজিতে, এখন সেই পেঁয়াজের দাম বাড়িয়েছে ৫৫ টাকা করে, সেই পেঁয়াজ দিয়ে আপনার বাসায় রান্না হয়। আপনি মশকারা করে বলতে পারেন রান্নায় পেঁয়াজ খাওয়া কমাইয়া দেন, জনগণের সাথে মশকারা করবেন না। পরিস্কার করে বলতে চাই জনগণের সাথে মশকারা করার মাশুল কিন্তু অনেক চড়াও। আপনারা দেখেছেন জনগনের সাথে মশকারা করার ফলে ২১ বছর রাস্তায় রাস্তায় ঘুরেছেন ক্ষমতায় আসতে পারেন নাই।
জামালপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফরিদুল কবীর তালুকদার শামীমের সভাপতিত্বে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির ময়মনসিংহ বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও জামালপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট শাহ্ মো. ওয়ারেছ আলী মামুন জলবায়ু বিষয়ক সহ-সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, কেন্দ্রীয় যুবদলের সহ-সভাপতি খন্দকার মাসুদুল আলম ও কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সভাপতি আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ। এছাড়া অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জামালপুর জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি সফিউর রহমান সফি, অ্যাডভোকেট মনজুর কাদের বাবুল খান, লিয়াকত আলী, সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুল ইসলাম খান সজিব প্রমুখ। বিক্ষোভ সমাবেশে বিএনপিসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এমরান সালেহ প্রিন্স বলেছেন, জনগণ জেগে উঠেছে, সকল রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তি খালেদা জিয়ার পাশে এসে দাড়িয়েছে। দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিতে বিএনপি সারাদেশে কর্মসূচী ঘোষণা করেছে। আমরা সরকারকে বলেছিলাম দ্রব্যমূল্যের দাম কমাও জনগণকে বাচাঁও তারা বলেছে দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়লে সরকারের কোন কিছু করার নাই। যে সরকার মানুষের দুংখ বুঝে না, মানুষকে কস্ট দেয় রাংলাদেশের মানুষ সেই ব্যর্থ সরকারকে আর চাই না। তাই আমরা জামালপুরে বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে এই সরকারের পদত্যাগ চাই।
বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় এডভোকেট শাহ্ মো. ওয়ারেছ আলী মামুন বলেছেন, স্বাধীনতার মূলমন্ত্র গণতন্ত্রকে অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করে দিয়েছে বর্তমান সরকার। মানুষ জীবন বাজী রেখে যুদ্ধ করে দেশকে স্বাধীন করেছিল, তারা স্বপ্ন দেখেছিল স্বাধীন বাংলাদেশের মালিক হবে জনগণ। আজকে সেই মালিকানা জনগণের কাছে নেই। কারণ বাংলাদেশের মানুষের সেই মালিকানার জায়গাটি হচ্ছে মানুষের ভোট, ভোটের অধিকার। আজকে সেই ভোটের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। বর্তমান সরকার আজ দেশের সরকার নয়, আওয়ামী লীগের দলীয় সরকারে পরিণত হয়েছে। তিনি আগামী দিনে খালেদা জিয়ার মুক্তির মধ্য দিয়ে গণতন্ত্র ও ভোটের অধিকার আদায়ে সকলকে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে শরিক হওয়ার আহ্বান জানান।