সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল মোড়ে আ’লীগের চাঁদাবাজদের এককালীন চাঁদা আদায়ে অভিযোগ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:৫৪ পিএম, ২৬ ফেব্রুয়ারী,শনিবার,২০২২ | আপডেট: ০৩:২৯ পিএম, ২০ নভেম্বর,
বুধবার,২০২৪
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের ঢাকা-চট্রগ্রাম-সিলেট মহাসড়কের শিমরাইল মোড়ে ভাগাভাগি করে চাঁদা আদায়ের সংবাদ অন লাইন ও পত্রিকায় প্রকাশের পর দু’একদিন চাঁদা আদার বন্ধ থাকার পর আবারো চাঁদা আদায় শুরু করছে সরকার দলীয় চাঁদাবাজরা।
তারা ফুটপাতের ব্যবসায়ীদের কাছে সাংবাদিক ও পুলিশ ম্যানেজের নামে দোকান প্রতি ১০ হাজার টাকা আদায় করতে ব্যবসায়ীদের নানাভাবে হুমকি ধামকি দিচ্ছে বলে নাম না প্রকাশের শর্তে জানিয়েছে একাধিক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। এ ঘটনায় তাদের মধ্যে চাঁপা ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, সামান্য কিছু ইস্যু নিয়েই চাঁদাবাজরা কিছুদিন পরপর তাদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিলেও কয়েকদিন পরপর পুলিশের সাথে তাদের ইদুর বিড়াল খেলা করতে হয়। সাইফুল, জনি ও মুরগী রিপনের বাহিনীসহ অন্যান্য চাঁদাবাজরা একত্রিত হয়ে এভাবে নানা কৌশলে বছরে কয়েকবার চাঁদাবাজি করছে।
এদিকে দিনদিন নতুন নতুন চাঁদাবাজদের সৃষ্টি ও তাদের উৎপাতে অতিষ্ঠ ফুটপাতের ব্যবসায়ীরা। অন্যদিকে চাঁদা আদায়ের এরিয়া বাড়ানো নিয়ে চাঁদাবাজদের মধ্যে চলছে অন্ত:দ্বন্ধ। আর তাদেরকে নেপথ্যে থেকে নিয়ন্ত্রন করছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ ও জনপ্রতিনিধি, সরকার দলীয় মার্কেট মালিক ও প্রভাবশালী মহল। ফলে যে কোনো সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের নাশকতা।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ ও জনপ্রতিনিধি, মার্কেট মালিক ও সরকার দলীয় প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় শিমরাইল মোড় এলাকায় চিটাগাং রোড সংলগ্ন এলাকায় অবস্থিত বিভিন্ন মার্কেটের সামনে উপরে ও নিচের ফুটপাত ও রেন্ট এ কারসহ এর চারপাশের জায়গায় চাঁদাবাজ সিন্ডিকেটরা বিভিন্ন কৌশলে স্থান ভাগকরে করছে চাঁদাবাজী।
মহাসড়কের দক্ষিন পাশে নির্মিত যান চলাচলের জন্য বাই লেন দখল করে দোকান বসিয়ে সাধারণ নিরীহ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে জোরপূর্বক হুমকি-ধমকি দিয়ে চাঁদা আদায় করছেন স্থানীয় নামধারী যুবলীগ নেতা সাইফুল ইসলাম, জনি গং ও নামধারী সেচ্ছাসেবকলীগ নেতা সিব্বির গংরা।
আফির উদ্দিন সুপার মার্কেটের সামনের উপরে ও নিচে চাঁদাবাজ সাইফুল ইসলাম ও জনি গংয়ে আওতায় রছেছে প্রায় ১৫০টিরও বেসি দোকান এবং নামধারী সেচ্ছাসেবকলীগ নেতা সিব্বির গংদের রয়েছে প্রায় ৭০ থেকে ৮০টিরও বেসি দোকান।
তবে স্থানীয় নামধারী যুবলীগ নেতা সাইফুল ইসলাম ফুটপাতের চাঁদাবাজির পাশাপশি রয়েছে চিটাগাং রোড স্ট্যান্ডে অবস্থিত মনজিল পরিবহনের চাঁদাবাজি। আর জনির ফুটপাতের চাঁদাবাজির পাশাপশি রয়েছে ছিনতাইকারিদের একটা সিন্ডিকেট।
ছিনতাই করতে গিয়ে প্রায় দুই মাস আগেও জনি ছিনতাই মামলায় জেল থেকে বের হয়ে দুই লাখ টাকা মনির স্বর্নকার নামে এক ব্যাক্তিকে ছিনতাই হওয়া স্বর্নের চেইনের জন্য জরিমানা দেয়। জনির ছিনতাইকারীর রয়েছে একটি সিন্ডিকেট এদের মধ্যে অন্যতম হলো মহসিন ও রানা নামে এদুই ব্যক্তি। নাম না জানা আরও অনেকেই রয়েছে তাদের ছিনতাইকারী সিন্ডিকেটে।
ওদিকে ফুটপাতের চাঁদাবাজির প্রায় দেড় শতাধিক দোকান থেকে দৈনিক প্রতি দোকান থেকে চাঁদা আদায় করছে সাইফুল ও জনি গংয়ের সহকারী ডিম ওয়ালা জাকির।
অপরদিকে পুটপাতের চাঁদাবাজির প্রায় ৭০থেকে ৮০টি দোকান থেকে মাসিক ৮০হাজার টাকা চাঁদা আদায় করছে সাব্বির গংয়ের সহকারী মনির।
সিদ্ধিরগঞ্জের চিটাগাং রোড কোমল বাসস্ট্যান্ডের ওভার ব্রিজ থেকে পূর্ব দিকের ও দক্ষিনে এবং আফির উদ্দিন সুপার মার্কেটের ফুটপাতের প্রতি দোকান চাঁদাবাজি করে আসছে। এবং কোমল বাস স্ট্যান্ডের ওভার ব্রিজের পশ্চিম পাশে চাঁদা উত্তলন করছে মুরগি রিপন সিন্ডিকেটের বাহিনীরা।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক একাধিক পুটপাত দোকানদার চাপা কষ্ট নিয়ে জানান, প্রতিদিন সন্ধ্যার পরে ডিমওয়ালা জাকির প্রতি দোকান থেকে টাকা উত্তলন করে সাইফুল ও জনির কাছে নিয়ে যায়।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, নামধারী যুবলীগ সাইফুল ইসলাম মৃত আফির উদ্দিনের ছেলে ও জনি, নুরুল ইসলামের ছেলে। এবং তাদের সহযোগী ডিম ওয়ালা জাকির। সড়ক দখল করে চাঁদাবাজি করে গড়ে উঠা ফুটপাতের অবৈধ দোকান-পাট স্থায়ীভাবে উচ্ছেদ হয় না। চাঁদাবাদ সাইফুল ও জনি সম্পর্কে তারা দুইজন চাচা-ভাতিজা। বরং বছরের পর বছর ধরে ইদুর-বিড়াল খেলা চলে উচ্ছেদের নামে। আর ভোগান্তি ও হয়রানীর শিকার হচ্ছে সাধারন পথচারীরা।
সাম্প্রতিক সময়ে কাঁচপুর হাইওয়ে পুলিশ ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে সড়কটিতে যান চলাচলের ব্যবস্থা করলেও তা বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। কারণ চাঁদাবাজদের শেল্টারদাতা সরকার দলীয় প্রভাবশালী হওয়ায় নানাভাবে দেনদরবার করে পুনরায় সড়ক দখলে উৎসাহ পাচেছ অবৈধ দখলদাররা।
এছাড়াও আফির উদ্দিন সুপার মার্কেটে অবস্থিত সুগন্ধা হাসপাতালের পশ্চিম পাশে খাল পাড় দিয়ে গড়ে উঠা কয়েকটি দোকান থেকে করছে চাঁদা উত্তলন। চাঁদাবাজ এই সিন্ডিকেটরা আফির উদ্দিন সুপার মার্কেটের সুগন্ধা হাসপাতালের সামনের রাস্তায় দোকানদার দের এক একজনকে ডেকে নিয়ে চাঁদা দেওয়ার জন্য বিভিন্ন ভাবে হুমকি ধমকি করে আসছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
চাঁদাবাজরা প্রতি দোকান থেকে ৩০০ টাকা করে চাঁদা দেওয়ার জন্য বিভিন্ন ভাবে হুমকি ধমকি করে আসছে চাঁদাবাজরা। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাইফুলের মোবাইল নাম্বারে একধিকবার ফোন করলে তিনি রিসিভ করেননি।
কাঁচপুর হাইওয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাজ্জাদ খান বলেন, শিমরাইল মোড়ে মহাসড়কের দক্ষিন পাশে বাই লেন দিয়ে যান চলাচল করবে। এখানে কোনো দোকানপাট বসানো যাবেনা। যথাশীঘ্র আবার এসব দোকানপাট উচ্ছেদ করা হবে।