স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র এই সরকার সুপরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করে দিচ্ছে : মির্জা ফখরুল
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২:১৫ এএম, ২৫ ডিসেম্বর,শনিবার,২০২১ | আপডেট: ১০:৩০ পিএম, ২৭ নভেম্বর,
বুধবার,২০২৪
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধের মধ্যে অর্জিত স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র এই সরকার সুপরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করে দিচ্ছে। এ সময় তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ১০ টাকা কেজি দরে চাল দেয়ার কথা বললেও এখন ৭০ টাকায় কিনতে হচ্ছে।
আজ শুক্রবার (২৪ ডিসেম্বর) গাজীপুর শহরের শহিদ বরকত স্টেডিয়ামে এক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সুচিকিৎসার দাবিতে এ জনসভার আয়োজন করা হয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘১৯৭১ সালে আমরা মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে যা অর্জন করেছিলাম, সেই গণতন্ত্র, সকল প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করা হয়েছে। ভোটাধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছে। ভোটাররা কেন্দ্রে গিয়ে দেখতে পান, ভোট দেয়া হয়ে গেছে। অথচ আমরা বলেছিলাম, আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশি তাকে দেব। এখন কি সেই ব্যবস্থা আছে? এখন আপনারা কি ভোট দিতে পারেন?’
কক্সবাজারে পর্যটক ধর্ষণের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ‘মানুষ কোথাও নিরাপদ নয়। আমাদের এক বোন স্বামী-সন্তান নিয়ে গিয়েছিলেন কক্সবাজারে, সেখানে তিনি ধর্ষিত হয়েছেন।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই সরকার যতদিন ক্ষমতায় থাকবে, ততদিন এদেশ পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যাবে। ব্যাংক লুট হচ্ছে, আজকে সরকার অর্থনীতির মেগা প্রজেক্ট করছে।’ তিনি অভিযোগ করে বলেন, এসব প্রকল্প থেকে সরকারের লোকজন কমিশন নিচ্ছে।
এ সময় তিনি জনতার উদ্দেশে জানতে চান চালের দাম এখন কত? তিনি বলেন, ‘৭০ টাকা। অথচ বলেছিল ১০ টাকা কেজি চাল দিবে, বিনামূল্যে সার দেবে, আর আজকে তিনগুণ বেশি দামে এসব কিনতে হচ্ছে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এই সরকার সুপরিকল্পিতভাবে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের যে অর্জন, স্বাধীনতা আর গণতন্ত্র ধ্বংস করে দিচ্ছে। আমরা যুদ্ধ করেছিলাম গণতন্ত্রের জন্য, একদলীয় শাসন ব্যবস্থার জন্য নয়। আমার দলের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন। দেশে একদলীয় শাসন ব্যবস্থার বদলে বহুদলীয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রবর্তন করেছিলেন।’
তিনি নির্বাচন কমিশন গঠনের চলমান সংলাপের সমালোচনা করে বলেন, ‘এখন চলছে সংলাপ। রাষ্ট্রপতি বিভিন্ন দলের নেতাদের দাওয়াত দিচ্ছেন, দাওয়াত দিয়ে বঙ্গভবনে খাওয়া-দাওয়া করাচ্ছেন। তারা নির্বাচন কমিশন গঠন করে কিন্তু নির্বাচন কমিশন কাজ করতে পারে না।’
প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, “কে এম নুরুল হুদাকে অনেকে বলে- বেহুদা। কোনো নির্বাচনের পরে তিনি বলেন, ‘সকল নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ হয়েছে’।”
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আয়োজিত নির্বাচন সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ হয়েছিল। যখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলো, তখন তারা দেখল নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে, তারা ক্ষমতায় ফিরে আসতে পারবো না। তাই তারা দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন করার লক্ষ্যে তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল করে দিল। তাই নির্বাচন কমিশন গঠনের আগে সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে।’
সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান, গাজীপুর জেলা বিএনপির আহবায়ক আলহাজ্ব সালাউদ্দিন সরকার, কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-সম্পাদক কামরুজ্জামান রতন, বিএনপি'র কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সালাম আজাদ, বিএনপি'র কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আলহাজ্ব হাসান উদ্দিন সরকার, জাতীয়তাবাদী যুবদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাইফুল আলম নীরব, কেন্দ্রীয় কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল, কেন্দ্রীয় বিএনপির শ্রম বিষয়ক সহ-সম্পাদক হুমায়ুন কবির, বিএনপির কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বাচ্চু, বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-দফতর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু, মরহুম সাদেক হোসেন খোকার ছেলে ইশরাক হোসেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ডা: মাজহারুল আলম, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি আবদুল কাদের ভূইয়া জুয়েল, গাজীপুরের কালিয়াকৈর পৌরসভার মেয়র মো: মজিবুর রহমান, কেন্দ্রীয় কৃষক দলের সহসভাপতি ওমর ফারুক, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম গাজীপুরের সভাপতি অ্যাডভোকেট সিদ্দিকুর রহমান, কেন্দ্রীয় জাতীয়তাবাদী যুবদলের সহ-সভাপতি জাকির হোসেন নান্নু, কেন্দ্রীয় মৎস্যজীবী দলের সদস্য সচিব আব্দুর রহিম, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ফিরোজ, কাপাসিয়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক শাহ রিয়াজুল হান্নান, শ্রীপুর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক শাহজাহান ফকির প্রমুখ।