গোদাগাড়ী উপজেলা বিএনপি’র কাউন্সিল অনুষ্ঠিত
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:১৮ পিএম, ১২ ডিসেম্বর,রবিবার,২০২১ | আপডেট: ০৬:৫৪ পিএম, ২৭ নভেম্বর,
বুধবার,২০২৪
অত্যন্ত উৎসব মুখর পরিবেশে এবং সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ ভাবে গোদাগাড়ী উপজেলা বিএনপি’র ত্রি-বার্ষিক কাউন্সিল গতকাল শনিবার দিনব্যাপি অনুষ্ঠিত হয়। কাউন্সিলে সভাপতি পদে দুইজন, সাধারণ সম্পাদক দুইজন ও সাংগঠনিক পদে চারজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
এরমধ্যে ছাতা প্রতিক নিয়ে সভাপতি পদে আব্দুস সালাম সাওয়াল ৫০১ ভোট পেয়ে সভাপতি নির্বাচিত হন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি নাসির উদ্দিন বাবু মোটর সাইকেল প্রতিক নিয়ে পেয়েছেন ১১৮ ভোট। সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুল ইসলাম দোয়াত কলম প্রতিক নিয়ে ৪১২ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি আমিনুল ইসলাম ফটিক মোরগ প্রতিক নিয়ে পেয়েছেন ২০৩ ভোট।
সাংগঠনিক সম্পাদক পদে মাহবুবুল ইসলাম মই প্রতিক নিয়ে ৪৩০ ভোট পেয়ে ১নং এবং আজিমুসান উজ্জল টিবওয়েল প্রতিক নিয়ে ৩১৯ ভোট পেয়ে ২নং সাংগঠনিক সম্পাদক পদে নির্বাচিত হন। এছাড়াও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে পরাজিত অপর দুই প্রার্র্থীর মধ্যে সৈইবুর রহমান কাপ পিরিচ মার্কায় ভোট পেয়েছেন ২৩০ এবং আব্দুল হামিদ বাবলু দেয়াল ঘড়ি মার্কায় পেয়েছেন ১০০ ভোট।
ফলাফলের বিষয়টি নিশ্চিত করে নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা সদর উদ্দিন বলেন, কাউন্সিলে মোট কাউন্সিলর ছিলেন ৬৪৫ জন। এর মধ্যে দুই জন মৃত্যুবরণ করায় ৬৪৩জন কাউন্সিলর ছিলেন। তাদের মধ্যে ৬২২ জন কাউন্সিলর তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট প্রদান করেন। ভোট পোল হওয়ার হার ছিলো ৯৬ ভাগ। সকাল সাড়ে ১০টা থেকে ভোট শুরু হয়ে একটানা সাড়ে ৩টা পর্যন্ত ভোট গ্রহন চলে বলে জানান তিনি।
কাউন্সিলে সভাপতিত্ব করেন গোদাগাড়ী উপজেলা বিএনপি’র আহবায়ক প্রভাষক আব্দুল মালেক। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল শরিফ উদ্দিন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও রাজশাহী জেলা বিএনপি’র আহবায়ক আবু সাইদ চাঁদ, বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও জেলা কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম মার্শাল, এ্যাডভোকেট মতিউর রহমান মন্টু, জেলা বিএনপি’র সদস্য সচিব অধ্যাপক বিশ্বনাথ সরকার, জেলা বিএনপি’র সাবেক সভাপতি ও বর্তমান সদস্য এ্যাডভোকেট তোফাজ্জল হোসেন তপু, সদস্য সৈয়দ মোহাম্মদ মহসিন, আব্দুর রশিদ, জাহান পান্না, গোলাম মোস্তফা মামুন, মকবুল হোসেন, জাকিরুল ইসলাম বিকুল, আমিনুল হক মিন্টু, রায়হানুল আলম রায়হান, তাজমুল তান টুটুল, শাহাদাত হোসেন, আলী হোসেন, তোফায়েল হোসেন রাজু, সিরাজুল ইসলাম ও বিএনপি নেতা আনোয়ার হোসেন উজ্জল।
উপস্থিত ছিলেন কৃষকদল কেন্দ্রীয় কমিটির রাজশাহী বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা কৃষকদলের আহবায়ক আলামিন সরকার টিটো, সদস্য সচিব নাজমুল হক, যুগ্ম আহবায়ক আলম মাস্টার ও মান্নাফ মাস্টার, দুলাল ও মুহিব্বুল হহক রুবেল, জেলা মহিলা দলের সভাপতি এ্যাডভোকেট সামসাদ বেগম মিতালী, সাধারণ সম্পাদক ফরিদা পারভীন ও সাংগঠনিক সম্পাদক রত্না বেগমসহ কাউন্সিলর ও অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন জেলা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি রবিউল ইসলাম কুসুম।
কাউন্সিলে উপস্থিত নেতৃবৃন্দ তাদরে বক্তব্যে নির্বাচিত সদস্যদের শুভেচ্ছা জানান। সেইসাথে পরাজিতদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। তাঁরা বলেন, বিএনপি বরাবরই একটি গণতান্ত্রিক দল। আজকের এই কাউন্সিল আবারও এর প্রমান দিল। অথচ কয়েকদিন পূর্বে মহানগর যুবলীগের কাউন্সিলে ব্যাপক মারপিট হয় এবং কাউন্সিল বন্ধ হয়ে যায়। অথচ আওয়ামী লীগ বলে বেড়ায় বিএনপিতে গণতন্ত্র চর্চা নাই। প্রকৃত পক্ষে আওয়ামী লীগ গণতান্ত্রিক নয়। তারা হচ্ছে লুটেরার দল। তারা গণতন্ত্রকে বিশ্বাস করে না বলে রাতের অন্ধকারে ভোট চুরি করে এবং আইন শংখলা বাহিনী ও প্রশাসনকে দিয়ে ভোট ডাকাতী করে দলীয় প্রার্থীদের নির্বাচিত করে। এর বহু প্রমান রয়েছে। সাম্প্রতিক গোদাগাড়ীর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনেই বিজিত প্রার্থীদের জোর করে রাতের অন্ধকারে ভোট সেন্টারের ঘোষনাকৃত ফলাফল বাতিল করে কেন্দ্রে থেকে অন্য দুইজন নৌকার প্রার্থীকে বিজয়ী ঘোষনা করে বলে জানান তারা।
বক্তারা আরো বলেন, সরকারের কুলাঙ্গার পদত্যাগকারী তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রীকে কানাডায় প্রবেশ করতে দেয়নি সে দেশের সরকার। শুধু তাই নয় বাংলাদেশের আইন শৃংখলা বাহিনীর উর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং বেশ কয়েকজন মন্ত্রীকে আমেরিকা প্রবেশে উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এর কারন হচ্ছে এই সরকার গণতন্ত্রকে হত্যা করে এক নায়কতন্ত্র কায়েম করায় সে দেশের সরকার এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে বলে জানান তারা। শুধু তাই নয় এমাসেই গণতন্ত্র বিষয়ে আমেরিকাতে শুরু হতে যাওয়া সম্মেলনে বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। এটাই প্রমান করে এই সরকারের আসল চেহারা।
তারা আরো বলেন, বেগম খালেদা জিয়া অত্যন্ত অসুস্থ। জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে আছেন। এ অবস্থায় এই বিনা ভোটের সরকার বেগম জিয়াকে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসা নিতে দিচ্ছে না। উপরন্ত অপপ্রচার চালাচ্ছে। বেগম জিয়ার মুক্তি, বিদেশে চিকিৎসা, গণতন্ত্র পুণরুদ্ধার এবং এই বাকশালী সরকারের কবল থেকে দেশকে রক্ষা করতে আসছে সরকার পতনের আন্দোলনে নব-নির্বাচিত কমিটির সদস্য ও জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী সকলকে জীবন বাজি রেখে রাজপথে নামার আহবান জানান তারা।
শান্তপূর্ণভাবে কাউন্সিল শেষ করতে সহযোগিতা করায় সভার সভাপতি সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে সভার কার্যক্রম শেষ করেন।