মওলানা ভাসানীর আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করতে হবে - মঞ্জু
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:২৬ এএম, ১৮ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২১ | আপডেট: ০৪:৫৪ এএম, ১৯ নভেম্বর,মঙ্গলবার,২০২৪
বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও খুলনা মহানগর বিএনপির সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু বলেছেন, জনগণের প্রতি মমতাসিক্ত মনের অধিকারী মওলানা ভাসানী শুধু জনগণের জন্যই রাজা-মহারাজার বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন, ব্রিটিশ শাসকদের বিরুদ্ধে জনমত সংগঠন করেছেন, ১৯৫৪ সালে মুসলিম লীগের ভরাডুবি ঘটিয়েছেন, ১৯৫৭ সালে কাগমারী সম্মেলনে পশ্চিম পাকিস্তানিদের ‘আসসালামু আলাইকুম’ বলার মাধ্যমে বাঙালিকে স্বাধীনতার মন্ত্র শিখিয়েছেন-স্বপ্ন দেখিয়েছেন, ‘৬৯-এর গণআন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছেন। রাজনীতিবিদ হয়েও তিনি জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত জনগণের সেবায় নিজের জীবন নিঃশেষে ব্যয় করে গেছেন, শিক্ষকের মতো নির্দেশ দিয়ে গেছেন। আজীবন আপসহীন, সাম্রাজ্যবাদ-আধিপত্যবাদ বিরোধী সংগ্রাম আর জাতীয়তাবাদী ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মহান সাধক উপমহাদেশের নির্যাতিত-নিপীড়িত মানুষের অধিকার আদায়ের বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর ছিলেন মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী। তার রাজনৈতিক জীবনের একটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল, তিনি প্রতিক্রিয়াশীল সমাজ ও পরিবেশের মাঝেও তার রাজনীতি সঠিকভাবে প্রয়োগে পিছপা হতেন না। দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জীবনের মানোন্নয়ন ও সার্বিক সমাজ প্রগতি অর্জনে তার প্রচেষ্টা ছিল নিরলস। মওলানা ভাসানী আজীবন জমিদার-জোতদার-মহাজন-সাম্রাজ্যবাদী-আধিপত্যবাদী শক্তির দালালদের বিরুদ্ধে লড়াই-সংগ্রাম করেছেন। উপমহাদেশের আজাদী-সংগ্রামে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে খেলাফত আন্দোলন, মুসলিম লীগ, পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে সামনের কাতারে থেকে লড়াই-সংগ্রাম করেছেন ও নেতৃত্ব দিয়েছেন।
আজ বুধবার জননেতা মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর ৪৫তম মৃত্যুবার্ষিকীতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) কেন্দ্রীয় কর্মসূচীর অংশ হিসেবে খুলনা মহানগর ও জেলা বিএনপি উদ্যোগে দুপুর পৌনে ১২টায় দলীয় কার্যালয়ে আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সাবেক সাংসদ মঞ্জু বলেন, শত্রুর চোখ রাঙানি, জেলজুলুমের মুখে অকম্পিত হৃদয়ের বিশাল মহীরুহের মতো যিনি এদেশের মানুষকে অন্যায়-অসত্যের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর বাণী শুনিয়েছেন, তিনি হলেন অগ্নিপুরুষ মওলানা ভাসানী। তার বর্ণাঢ্য ও কর্মময় জীবন কাহিনী কথার মালা গেঁথে শেষ করা যাবে না। সিরাজগঞ্জের ধানগড়া গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করে শৈশবেই পিতৃহীন হন তিনি। অল্প বয়সেই বোগদাদের আধ্যাত্মিক ব্যক্তিত্ব মাওলানা শাহ নাসিরউদ্দিন বোগদাদীর (রহ.) সংস্পর্শে এসে তিনি নতুন জীবনবোধে অনুপ্রাণিত হন। মাত্র ২৬ বছর বয়সে তিনি বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতের আসামে চলে যান। সেখানে তখন অসমীয় ও বাঙালি জনগোষ্ঠীর মধ্যে খারাপ সম্পর্ক যাচ্ছিল।
বাঙালি জনগোষ্ঠীর অধিকার ছিনতাই করছিল শাসকগোষ্ঠী। আসামে গিয়ে মওলানা ভাসানী লাইন প্রথার নিষ্পেষণে জর্জরিত বাঙালিদের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে নেতৃত্ব দেন। তারই প্রেরণায় ও সংগ্রামী জীবনাদর্শের ডাকে নিপীড়িত জনতার মাঝে বিদ্রোহের অগ্নি জ্বলে ওঠে। কেঁপে ওঠে ব্রিটিশ সরকারের ভিত। সরকার তাকে গ্রেফতার করে কারাবন্দি করে। মূলত তার সংগ্রামী আন্দোলনের কারণেই সিলেট পাকিস্তানের অন্তর্গত হয়; আজ যা বাংলাদেশের অংশ। মজলুম জননেতা তার রাজনৈতিক জীবনে দলবদল করেছেন, তৈরি করেছেন দল। কিন্তু তার আদর্শ কখনও বদল করেননি। তার স্বপ্ন সাম্রাজ্যবাদ ও আধিপত্যবাদমুক্ত একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম থেকে এতটুকু বিচ্যুত হননি। দেশপ্রেম, গণতন্ত্রের প্রতি অঙ্গীকার, স্রােতের বিপরীতে দাঁড়ানোর সাহস, নির্যাতনের মুখেও অবিচলতা মানুষকে মৃত্যুঞ্জয়ী করে। মওলানা ভাসানী ছিলেন তেমনই একজন মানুষ, একজন রাজনীতিবিদ। তিনি প্রগতিশীল এবং শোষণমুক্ত সমাজধারার সঙ্গে ধর্মের সুমহান আদর্শের রাখিবন্ধন ঘটাতে চেয়েছিলেন। তার সারা জীবনের সংগ্রাম ছিল সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ মানুষের মুক্তি ও কল্যাণ সাধনের। ১৯৭৬ সালের ১৭ নভেম্বর ৯৬ বছর বয়সে তার মৃত্যু হয়। আমাদের জাতীয় ইতিহাসের একজন অন্যতম দেশপ্রেমিক ছিলেন মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানী। স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব এবং গণতন্ত্র সুরক্ষায় মওলানা ভাসানী যুগ যুগ ধরে আমাদেরকে প্রেরণা জোগাবে, দেশ প্রেমে উদ্বুদ্ধ করবে। মওলানা ভাসানীর আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে দেশ ও জাতির কল্যাণে আত্মনিবেদিত হওয়ার জন্য তিনি সবার প্রতি আহ্বান জানান।
বিএনপি নেতা আবু হোসেন বাবুর পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন ও উপস্থিত ছিলেন মহানগর বিএনপির সাধারন সম্পাদক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মনিরুজ্জামান মনি, জেলা সাধারন সম্পাদক আমির এজাজ খান, এড. গাজী আব্দুল বারী, শেখ মোশাররফ হোসেন, অধ্যাপক আব্দুল মান্নান, অধ্যক্ষ তারিকুল ইসলাম, শেখ আব্দুর রশিদ, অধ্যাপক মনিরুল হক বাবুল, মোল্লা খায়রুল ইসলাম, অধ্যাপক আরিফুজ্জামান অপু, সিরাজুল হক নান্নু, মো. মাহবুব কায়সার, আশরাফুল আলম নান্নু, মোল্যা মোশারফ হোসেন মফিজ, মেহেদী হাসান দিপু, মহিবুজ্জামান কচি, ইকবাল হোসেন খোকন, আনোয়ার হোসেন, ইউসুফ হারুন মজনু, হাসানুর রশিদ মিরাজ, সাংবাদিক মিজানুর রহমান মিলটন, শামসুজ্জামান চঞ্চল, মজিবর রহমান ফয়েজ, কাজী শফিকুল ইসলাম শফি, নাজির উদ্দিন নান্নু, জহর মীর, কাজী আব্দুল লতিফ, এনামুল হাসান ডায়মন্ড, শেখ জামিরুল ইসলাম জামিল, ইশহাক তালুকদার, আফসার উদ্দিন মাস্টার, শাহাবুদ্দিন মন্টু, রবিউল ইসলাম রবি, মোস্তফা কামাল, ইমতিয়াজ আলম বাবু, মোল্যা মুজিবর রহমান, গোলাম কিবরিয়া আশা, আসাদুজ্জামান, রিয়াজুর রহমান, আব্দুর রহমান, খন্দকার ফারুক হোসেন, সামসুল বারী পান্না, সাইমুন ইসলাম রাজ্জাক, মোহাম্মদ আলী, রাহাত আলী লাচ্চু, তানভরি আজম রুম্মান, সিরাজুল ইসলাম লিটন, কাজী নাজমুল কবির টিটো, জাহাঙ্গীর হোসেন, ডা. ফারুক হোসেন, জাকারিয়া লিটন, ইকবাল হোসেন, মুন্সি আব্দুর রব, আসলাম হোসেন, মনিরুজ্জামান লেলিন, এনামুল হক সজল, শেখ সরোয়ার হোসেন, লিটু পাটোয়ারী, শামীম আশরাফ, নুরে আব্দুল্লাহ, হুমায়ুন কবির, আশরাফ হোসেন, জামাল উদ্দিন, সেলিম বড় মিয়া, আবু তালেব, গোলাম নবী ডালু, ডা. হালিম মোড়ল, সাজ্জাদ হোসেন জিতু, এরশাদ হোসেন, দেলোয়ার হোসেন, নাসরিন পলি, রেহানা ইসলাম, মশিউর রহমান লিটন, হারুন গাজী, বায়েজিদ হোসেন, স ম মারুফ হোসেন, আনিসুর রহমান প্রমূখ। দোয়া পরিচালনা করেন মাওলানা আব্দুল গফ্ফার।