নৌকায় শীল মারার ভিডিও ধারণ করায় সাংবাদিকের উপর হামলা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১১:৫৬ পিএম, ১১ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২১ | আপডেট: ০৪:২৩ এএম, ১৬ নভেম্বর,শনিবার,২০২৪
সারাদেশে দ্বিতীয় ধাপে ইউপি নির্বাচনে শরীয়তপুর সদর উপজেলার তুলাসার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রকাশ্যে নৌকা প্রতীকে সিল মারার ভিডিও ধারণ করায় সাংবাদিকের ওপর সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে। তাকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার বেলা দেড়টার দিকে ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কেন্দ্রের সামনের মাঠে এ ঘটনা ঘটে। আহত বিএম ইশ্রাফিল ডিবিসি চ্যানেলের শরীয়তপুর প্রতিনিধি।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আজ শরীয়তপুর সদর উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচন। সেই ধারাবাহিকতায় তুলাসার ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ চলছিল। তখন ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য প্রার্থী ‘বই প্রতীক’ জিয়াসমিন বেগমের দেবর ও তার আত্মীয় স্কুলছাত্ররা প্রিসাইডিং অফিসারের সামনে প্রকাশ্যে নৌকা ও বই মার্কায় সিল (জাল ভোট) দিচ্ছিল।
আরও জানা যায়, তখন ডিবিসির সাংবাদিক বিএম ইশ্রাফিল ভিডিও ধারণ করায় নৌকা ও বই মার্কার সমর্থক প্রার্থীর স্বামী ও দেবরের নেতৃত্বে শতাধিক লোক তার ওপর হামলা করে আহত করে। তখন সন্ত্রাসীরা অন্যান্য সাংবাদিকদের ধাক্কা মারে ও মোবাইল ক্যামেরা ভাঙচুর করে। ইশ্রাফিলকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আহত সাংবাদিক বিএম ইশ্রাফিল বলেন, ‘আমি একজন সাংবাদিক হিসেবে পেশাগত দায়িত্ব পালন করছিলাম। তখন ‘বই প্রতীক’ জিয়াসমিন বেগমের দেবর ও তার আত্মীয় স্কুলছাত্ররা প্রকাশ্যে প্রিসাইডিং অফিসারের সামনে নৌকা ও বই মার্কায় সিল মারছিল। তখন আমি ভিডিও ধারণ করি। এ সময় ক্ষিপ্ত হয়ে আমার ওপর সন্ত্রাসী হামলা করে প্রার্থীর স্বামী, দেবররা। তখন দৈনিক দেশ রূপান্তর ছগির, আরটিভির ইব্রাহীম, দীপ্ত টিভির রাজিব, বৈশাখী টিভির খালেক, ঢাকা পোস্টের মেহেদী ও নিউজ১৬বিডির সাংবাদিক আমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। আমি সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে মামলা করব। এই হামলার বিচার দাবি করছি।’
পোলিং এজেন্ট প্রকাশ্যে নৌকা প্রতীকে সিল মারার ঘটনা এবং সাংবাদিককে হামলার ঘটনার বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রিসাইডিং অফিসার শামীম মাহবুব বলেন, ‘ভোট চলাকালীন সময় পোলিং এজেন্টদের সঙ্গে সাংবাদিকরা তর্কে জড়ায়। এতে অপ্রীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি হয়।’
তিনি বলেন, এই কেন্দ্রে ৯৫২ ভোট। এতে নারী ভোটার ৪৩৫ জন ও পুরুষ ভোটার ৫১৭ জন।
হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক সাবিকুন নাহার জানিয়েছেন, তার মাথায় আঘাত রয়েছে। তার কারণে ভর্তি দিয়েছি। তবে বমি হলে বড় ধরনের সমস্যা হতো।
শরীয়তপুর ইলেকট্রনিক মিডিয়া জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রোকনুজ্জামান পারভেজ বলেন, ‘পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় সন্ত্রাসীরা সাংবাদিক ইশ্রাফিলের ওপর হামলা চালায়। এই হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। দোষীদের আটক করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।’
শরীয়তপুর সদরের পালং মডেল থানার (ওসি) মোহাম্মদ আক্তার হোসেন বলেন, ‘সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনাটি দুঃখজনক। হামলার বিষয়টি আমি শুনেছি। অভিযোগ পেলে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. জাহিদ হোসেন বলেন, ‘বিষয়টি প্রিসাইডিং অফিসারের কাছে জানব। পরে তদন্ত করে দেখব।’