দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির একটি অলীক চিত্র তৈরি করেছে সরকার : বিএনপি
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:১৬ এএম, ২ নভেম্বর,মঙ্গলবার,২০২১ | আপডেট: ১২:৫৮ পিএম, ২০ সেপ্টেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
অর্থনীতির বিভিন্ন খাতে উৎপাদন বৃদ্ধির দাবি এবং তাকে সমর্থনের জন্য বিভিন্ন খাতের কল্পিত তথ্য প্রচার দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির একটি অলীক চিত্র তৈরি করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। গত শনিবার রাতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল সভায় এ অভিযোগ করা হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সভায় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বেগম সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।
সভায় নিম্ন বর্ণিত সিদ্ধান্তসমূহ গৃহীত হয় :
১। সভায় বিগত ২৩ অক্টোবর অনুষ্ঠিত জাতীয় স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল সভায় গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহ পঠিত ও অনুমোদিত হয়।
২। সভায় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরিস্থিতি সম্পর্কে সদস্যবৃন্দকে অবহিত করেন। সভায় দেশনেত্রীর আশু রোগ মুক্তির জন্য দোয়া করা হয়।
৩। সভায় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের দুর্গোৎসবে সরকারি দল আওয়ামী লীগ ও প্রশাসনের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ প্রশ্রয়ে সারা দেশে সহিংসতা সৃষ্টি, বিএনপি নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা, গ্রেফতার ও নির্যাতন অব্যাহত রাখার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়। এই সব ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রায় ২২টি জেলায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলুসহ প্রায় ১২ হাজার নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা ও প্রায় ২০০ নেতা-কর্মী গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়। সভা মনে করে, জনগণের দৃষ্টি মূল সমস্যা, গণতন্ত্রের মুক্তির আন্দোলন থেকে অন্যত্র দৃষ্টি সরিয়ে নেয়ার হীন প্রচেষ্টা এবং গণতন্ত্রের মোড়কে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা বাকশাল প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বর্তমান সাম্প্রদায়িক সহিংসতা সৃষ্টি করা হচ্ছে। সভায় অবিলম্বে এই সকল মামলা প্রত্যাহার এবং গ্রেফতারকৃত সকল নেতা-কর্মীর মুক্তি দাবি করা হয়।
৪। সভায় আইএমএফ-এর হিসাব মতে বাংলাদেশে জুন ২০২১-এর শেষ দিকে ৪০ বিলিয়ন ডলারের যে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থাকার কথা উল্লেখ করা হয়েছে সরকার তা ১৫ শতাংশ বাড়িয়ে বলেছে। সভা মনে করে, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নিয়ে তথ্য জালিয়াতি দেশে সামগ্রিক অর্থনৈতিক চিত্র সম্পর্কে সরকারের মিথ্যাচারের নিকৃষ্ট উদাহরণ। ইতিপূর্বেও অর্থনীতির বিভিন্ন খাতে উৎপাদন বৃদ্ধির দাবি এবং তাকে সমর্থনের জন্য বিভিন্ন খাতের কল্পিত তথ্য প্রচার দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির একটি অলীক চিত্র তৈরি করা হয়েছে। অর্থনীতির সামগ্রিক চিত্র নিয়ে বিভ্রান্তির বিস্তারিত তথ্য সংবলিত সংবাদ সম্মেলনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
৫। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যান্য দেশগুলোর মধ্যে টিকাদানে সব চেয়ে পিছিয়ে আছে। এখন পর্যন্ত মাত্র ১/৮ ভাগ মানুষ এখন পর্যন্ত টিকা পেয়েছেন। ৮০% মানুষকে টিকার আওতায় আনতে প্রায় ২৬ কোটি টিকার প্রয়োজন। আরো শতকরা ৮০ জন মানুষকে টিকা প্রদান করতে হবে। অবিলম্বে প্রয়োজনীয় টিকা সংগ্রহের কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
৬। সভায় সারা দেশে দলের সাংগঠনিক কার্যক্রমে পুলিশের বাধার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়। সভা মনে করে, বিরোধী দলের স্বাভাবিক রাজনৈতিক কার্যক্রমে বাধা প্রদান করে সরকার গণতন্ত্রের পরিবেশকে একেবারেই সংকুচিত করছে এবং বহুদলীয় গণতন্ত্রের সকল পথ বন্ধ করে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা বাকশাল প্রতিষ্ঠার নীল নকশা বাস্তাবায়নের চক্রান্ত করছে। সভা অবিলম্বে এই সকল প্রতিবন্ধকতা দূর করে স্বাভাবিক সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনার পথ সুগম করার আহ্বান জানানো হয়।