তথ্য প্রতিমন্ত্রী শপথ ভঙ্গ করেছে : জাপা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:০২ এএম, ১৮ অক্টোবর,সোমবার,২০২১ | আপডেট: ০৬:০৮ পিএম, ২২ নভেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
কুমিল্লায় পূজামন্ডপে কথিত কোরআন অবমাননার ঘটনায় সারা দেশে থমথমে পরিস্থিতির মধ্যে ‘রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম মানি না’ বলে তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান যে উস্কানীমূলক বক্তব্য ভাইরাল করেছেন, তার সাথে এই ষড়যন্ত্রের যোগসূত্র আছে কিনা তাও খতিয়ে দেখতে সরকারকে আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় উপনেতা জনবন্ধু গোলাম মোহাম্মদ কাদের। তিনি বলেন, দেশে অস্বাভাবিক পরিবেশ বিরাজ করছে। হিন্দু সম্প্রদায় কখনোই তাদের উৎসবমূখর পূজা বানচাল করতে কোরআনকে অবমাননা করবে না। আবার সামান্যতম ঈমান থাকলে কোনো মুসলিম কোরআনকে অবমাননা করতে ষড়যন্ত্র করতে পারে না।
আজ রবিবার জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয় মিলনায়তনে জাতীয় পার্টি খুলনা বিভাগীয় প্রতিনিধি সভা ও নব-নিযুক্ত মহাসচিবকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানোর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান এ কথা বলেন।
গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেন, কোরআন অবমাননার খবর সারা দেশে ছড়িয়ে দিয়ে দাঙ্গা-হাঙ্গামা ছড়িয়ে দিতে অপচেষ্টা করেছে একটি চক্র। পরিকল্পিতভাবে দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। সরকারি সহায়তা এবং আইনশৃংখলা রক্ষা বাহিনীর পাহারার মাঝে কেমন করে পূজামন্ডপে কোরআন রাখা হলো তা তদন্ত করতে হবে। কেন আইনশৃংখলা রক্ষা বাহিনী ব্যর্থ হলো, এটা বের করতে হবে।
তিনি বলেন, একজন অর্বাচীন ব্যক্তির মত ঐ প্রতিমন্ত্রী জননন্দিত প্রয়াত রাষ্ট্রপতি পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে কটূক্তি করেছে, কটাক্ষ করেছে দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীকে। আবার সংবিধান পরিপন্থি কথা বলে, শপথ ভঙ্গ করেছেন। জাপা চেয়ারম্যান বলেন, পাশাপাশি আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটের পঞ্চাদশ সংশোধনীর বিরুদ্ধে কথা বলে দলীয় শৃংখলা ভঙ্গ করেছেন। তার বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষ ব্যবস্থা নেয়া জরুরি। খতিয়ে দেখতে হবে, অস্বাভাবিক পরিস্থিতিতে প্রতিমন্ত্রী কেন উস্কানীমূলক বক্তব্য দিয়েছেন। হাজার বছরের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশে কোনভাবেই সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে দেবো না। এদেশে একই চত্বরে মসজিদ ও মন্দিরে উপসনা চলছে শত শত বছর ধরে। আমাদের পূর্ব পূরুষরাও একই সাথে ধর্মীয় আচার-আচরণ পালন করেছে। কখনো কোনো সমস্যা হয়নি, এখন কেন হচ্ছে তা খতিয়ে দেখতে হবে। সাম্প্রদায়িক বিশৃংখলা সৃষ্টির উদ্যেশ্যে যে কোনো ষড়যন্ত্রই ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ। এ সময় জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের আরো বলেন, মরহুম রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ছিলেন গণমানুষের ভালোবাসার প্রতিক। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ সকল ধর্ম পালনে শ্রদ্ধাশীল ছিলেন। তিনি দেশের ৯২ ভাগ মানুষের অন্তরের ভাষা বুঝেই ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম করেছিলেন। পাশাপাশি সকল ধর্ম পালনে সমান অধিকার নিশ্চিত করেছিলেন। পল্লীবন্ধু গরীবের হজ্জ জুমার নামাজ আদায় করার কথা বিবেচনায় রেখে শুক্রবারকে সরকারি ছুটি ঘোষণা করেছিলেন।
তিনি বলেন, দাঙ্গাজনিত কারণে, প্রায় ৫০ বছর রাজধানীতে জন্মাষ্টমীর শোভাযাত্রা বের হয়নি। পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের দেশ পরিচালনার সময় ১৯৮৯ সালে আবারো জন্মাষ্টমীর আনন্দ শোভাযাত্রা বের হয়। পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ জন্মাষ্টমীর শুভ দিনটিকে সরকারি ছুটি ঘোষণা করেন। পল্লীবন্ধু গঠন করেছিলেন হিন্দু কল্যাণ ট্রাস্ট। মন্দির নির্মাণ ও সংস্কারে পল্লীবন্ধুর আন্তরিক সহায়তা ছিলো সর্বজনবিদিত। মসজিদ-মন্দিরসহ সকল উপাসনালয়ের বিদ্যুৎ ও পানির বিল মওকুফ করেছিলেন পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। প্রেসিডিয়াম সদস্য ও অতিরিক্ত মহাসচিব (খুলনা বিভাগ) সাহিদুর রহমান টেপার সভাপতিত্বে এ সময় বক্তব্য রাখেন জাপার মহাসচিব মজিবুল হক চুন্নু, প্রেসিডিয়াম সদস্য লেঃ জেঃ (অব.) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী এমপি, অ্যাডভোকেট মোঃ রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, সৈয়দ দিদার বখত প্রমুখ।