জামায়াত আর বিএনপি ভেতরে ভেতরে মধুর বন্ধনে আবদ্ধ : কাদের
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:৩৭ এএম, ১৮ অক্টোবর,সোমবার,২০২১ | আপডেট: ০৮:৫৮ পিএম, ১৬ সেপ্টেম্বর,সোমবার,২০২৪
জামায়াত ছাড়া বিএনপি অচল বলে মন্তব্য করেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, জামায়াত আর বিএনপি ভেতরে ভেতরে যে মধুর পীরিতির বন্ধন কোনো দিনও শেষ হবে না। জামায়াত ছাড়া বিএনপি অচল। এটা প্রমাণ হয়ে গেছে।
আজ রবিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুল এন্ড কলেজে শেখ রাসেলের ৫৮তম জন্মদিন উপলক্ষে শিক্ষার্থীদের মাঝে মেধা বৃত্তি, শিক্ষা উপকরণ বিতরণ ও আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি। অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপকমিটি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, অনেকেই বলেন জামায়াত, বিএনপি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে। আমি বলতে চাই, জামায়াতেরও বিএনপি ছাড়া নির্ভরশীল কোনো ছাতা নেই। ভেতর ভেতর তারা মধুর বন্ধনে আবদ্ধ। এ বন্ধন কখনও ছুটবে না। সব সাম্প্রদায়িক শক্তির ঠিকানা একটা। সবার ঠিকুজি হচ্ছে বিএনপি। তাদের মধ্যে যে মধুর সম্পর্ক কোনোদিন শেষ হবার নয়। তাদের ছাড়া অন্য কোনো শক্তি নেই বিএনপির। দেশের সকল সাম্প্রদায়িক শক্তির ঠিকানা হচ্ছে বিএনপি।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ২১ বছর সাম্প্রদায়িক অপশক্তির বিষবৃক্ষ ডালপালা ছড়িয়েছে। এদের ডালপালা অনেক দূর ছড়িয়ে। এদের শেকড় মাটির নিচেও চলে গেছে। এই অপশক্তি সুযোগ পেলেই ছোবল মারে। সাম্প্রদায়িক অপশক্তি বিষধর সাপ। এরা সুযোগ পেলেই ছোবল মারে, এবারের দুর্গাপূজায় এটাই হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, ৭৫-পরবর্তীকালে শেখ হাসিনার চেয়ে মাইনরিটি বান্ধব সরকার এদেশে আসেনি। এদেশের সনাতন ধর্মাবলম্বীসহ সবাইকে তিনি নিরাপত্তা দিয়েছেন। অপকর্ম করে কেউ রেহাই পায়নি। মনে রাখবেন যারা এসব অপকর্ম করে, তাদের কোনো দল নেই, দলীয় পরিচয় নেই, এরা হচ্ছে দুর্বৃত্ত। দুর্বৃত্তদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিরোধ করতে হবে। শেখ হাসিনা সরকার বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্মের চেতনা বিশ্বাস করে, ধারণ করে, পালন করে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রশ্ন রেখে বলেন, গত ১২ বছরে কি কখনও কোনো সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট হয়েছে? একটা দুর্গাপূজার মন্ডপ ভাঙতে পেরেছে কেউ? এবার আমাদের আরও সর্তক হওয়া উচিত ছিলো। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী সর্তকবাণী উচ্চারণ করার পর, হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করার পর, ২-১টা জায়গায় ষড়যন্ত্রকারীরা সহিংসতার চেষ্টা করেছিলো। তারা ব্যর্থ হয়েছে। এ নগরীতে তারা পারে নাই। তান্ডবের মধ্যেও রাজধানীর ঢাকায় সুবিধা করতে পারেনি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দিয়েছে এখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে কেন্দ্র করে অনেক ষড়যন্ত্র চলছে। এজন্য ছাত্রলীগসহ সকল নেতাকর্মীকে সজাগ থাকতে হবে। পৃথিবীর ইতিহাসে অনেক রাজনৈতিক হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়েছে কিন্তু কোনো হত্যাকন্ডে শিশু ও অবোলা নারীকে টার্গেট করা হয়নি। সবচেয়ে জঘন্য ও নৃশংসতম হত্যাকান্ড ১৫ আগস্ট। ১৫ আগস্ট ৭১-এর পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতে হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটিয়েছে পরাজিত শক্তি। বাংলাদেশের রাষ্ট্রের জন্মের চেতনা ধ্বংস করতে চেয়েছিল তারা। এজন্য শিশু শেখ রাসেল তাকেও হত্যা করা হয়েছে। শেখ হাসিনার উন্নয়ন দেখে বিএনপি যড়যন্ত্র করছে এমন মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, পৃথিবীতে যে পাঁচটি দেশ উন্নয়নে অগ্রসর তার মধ্যে বাংলাদেশ একটি। শেখ হাসিনা উন্নয়ন করেছেন বলেই বাংলাদেশ এখন ভোট হলে শেখ হাসিনা বিপুল ভোটে বিজয়ী হবেন। পদ্মাসেতুর অর্থায়ন নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ করেছিল বিশ্বব্যাংক কিন্তু শেখ হাসিনা প্রমাণ করেছেন বাংলাদেশ চোর নয়, বীরের জাতি। আগামী বছরে ৪টি মেগা প্রকল্প উদ্বোধন করা হবে। তখন বিএনপি অন্ধকার দেখবে। দেশের উন্নয়নে বিএনপির গাত্রদাহ। মেগা প্রকল্পের কাজ শেষ হলে তারা অন্ধকার দেখবে, তারা সরকারের উন্নয়ন দেখে না, ষড়যন্ত্র দেখে।
তিনি বলেন, সাম্প্রদায়িক শক্তি তৎপর হয়ে উঠেছে কারণ তারা বুঝে ফেলছে শেখ হাসিনাকে ভোটে হারানো যাবে না। দেশের মানুষ শেখ হাসিনার ওপর খুশি। সারাবিশ্বের মানুষ তাকে বিশ্বাস করে। বিএনপি হচ্ছে সাম্প্রদায়িক শক্তির নাম্বার ওয়ান। সকল অপর্কমের শক্তি ও ঠিকানা হচ্ছে বিএনপি। আওয়ামী লীগ সতর্ক আছে সাম্প্রদায়িক শক্তি মাথা তুলে দাঁড়াতে পারবে না। আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহামুদ স্বপন, দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া। এ সময় আরো উপস্থিত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়, সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবদুল হালিম।