আ'লীগের দুঃশাসন থেকে বাঁচার জন্য জনগণ বিএনপিকে ভোট দেবে - ডা. শাহাদাত
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:৩৫ পিএম, ৮ অক্টোবর,শুক্রবার,২০২১ | আপডেট: ০৩:৪৯ এএম, ২০ নভেম্বর,
বুধবার,২০২৪
বিএনপিকে জনগণ কেন ভোট দেবে প্রধানমন্ত্রীর এমন মন্তব্যের সমালোচনা করে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহবায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, আওয়ামী লীগের দুঃশাসন থেকে বাঁচার জন্য জনগণ বিএনপিকে ভোট দেবে। তারা দেশের যে অবস্থা তৈরি করেছেন, তাতে মানুষের জীবন জীবিকার কোনো নিরাপত্তা নেই। চারদিকে ভয় ও ত্রাস, সন্ত্রাস, ছাড়া আর কোনো কিছুই নেই। তাই মানুষ এখন শেখ হাসিনার সরকার থেকে মুক্তি চায়। বিএনপিই একমাত্র দল যারা অতীতে দেশের মানুষকে শান্তিতে রেখেছিল। এজন্যই জনগণ বিএনপিকে ভোট দেবে। আওয়ামী লীগ যদি এতই উন্নয়ন করে থাকে তাহলে সুষ্টু নির্বাচন দিতে ভয় কেন?
তিনি বলেন, চট্টগ্রামে উন্নয়নের নামে বড় বড় প্রজেক্ট নিয়ে সরকারের নেতাকর্মীরা শুধু পকেট ভারি করছে। চট্টগ্রামের উন্নয়ন ও জলবদ্ধতা নিরসনে সরকার দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে কার্যকর কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারেনি। ফলে চট্টগ্রামবাসী এখন নাগরিক সেবা থেকে বঞ্চিত। বিদেশগামী প্রবাসীরা প্রতিদিন সীমাহীন হয়রানীর শিকার হচ্ছে। চট্টগ্রামের প্রধান সড়কগুলোর বেহাল দশা। চাল, তেল, মুরগী, পিয়াজসহ খাদ্যদ্রব্যের দাম অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু বাজারে মুনাফালোভী সিন্ডিকেটগুলোর বিরুদ্ধে সরকার কোন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। দায়িত্বশীল সংস্থাগুলোর অবহেলা ও ব্যর্থতার কারণে চট্টগ্রাম এখন মুমূর্ষ নগরীতে পরিণত হয়েছে।
আজ শুক্রবার বিকালে নগরীর কালামিয়া বাজারস্থ কুইন্স কমিউনিটি সেন্টারে বাকলিয়া থানা বিএনপির মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বর্তমানে সাধারণ মানুষের কোন নিরাপত্তা নেই। চারিদিকে শুধু অস্বাভাবিক মৃত্যু। স্বাভাবিক মৃত্যুর কোন নিশ্চয়তা নেই। সরকারের অবহেলায় নালায় পড়ে মানুষ মারা যাচ্ছে। সরকারের ব্যর্থতায় টেকনাফে রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহকে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে। চট্টগ্রাম এখন মাদকের আখড়ায় পরিণত হয়েছে। আওয়ামী লীগ নেতাদের ছত্রছায়ায় সন্ত্রাসও ব্যাপক আকারে বৃদ্ধি পেয়েছে। বাজারে হঠাৎ করে একদম অযৌক্তিকভাবে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়ে গেছে। তিনি সরকারের এসব অন্যায় অপকর্মের জবাব দেয়ার জন্য তৃণমূল পর্যায়ে নেতাকর্মীদের সংগঠিত করে আগামী দিনের আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত থাকার আহবান জানান।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর বলেন, আওয়ামী লীগ ভোট চুরি করে ক্ষমতায় এসে মানুষের সাংবিধানিক সকল অধিকার ক্ষুন্ন করেছে। গণমাধ্যমের মুখ বন্ধ করতে সরকার এখন নানা কালাকানুন করছে। আদালত দিয়ে অনলাইন নিউজ পোর্টাল বন্ধ করার চেষ্টা করছে। সাংবাদিকদের মুখ বন্ধ করতে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে চিঠি দিয়ে হয়রানি করছে। মূলত মানুষের মুখ স্তব্ধ করে দিতে তারা এসব পদক্ষেপ নিচ্ছে। গণমাধ্যমের মুখ বন্ধ করে দিতে চায় তারা।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার হরণ করে একদলীয় বাকশাল কায়েম করেছে। তাদের হাতে দেশ ও স্বাধীনতা নিরাপদ নয়। এর থেকে উত্তোরণের জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ভোট ডাকাতদের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। তিনি তৃণমূল পর্যায়ে নেতাকর্মীদের সংগঠিত করে সংগঠনকে শক্তিশালী করার মাধ্যমে তারেক রহমানের নেতৃত্বে আগামী দিনের আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত থাকার জন্য আহবান জানান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কেন্দ্রীয় বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক জালাল উদ্দীন মজুমদার বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া হচ্ছেন বর্তমান অবৈধ প্রধানমন্ত্রীর সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্ধী। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে মিথ্যা মামলা দিয়ে তাকে বেআইনিভাবে আটকে রেখেছে। এত বেশি ভয় পায় যে, বেগম খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে পর্যন্ত দিতে চান না। এই দেশে তাকে রাজনীতি করতে দিচ্ছেন না।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কেন্দ্রীয় বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক হারুনুর রশীদ ভিপি বলেন, নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনে সার্চ কমিটি ধোঁকাবাজি ছাড়া কিছু নয়। গতবারের সার্চ কমিটি সম্পূর্ণভাবে সরকার তাদের নিজেদের পছন্দের লোকদের দিয়ে তৈরি করেছে। যে কারণে হুদা কমিশন সরকারের চেয়েও অনেক ক্ষেত্রে আগ বাড়িয়ে দলীয় ভূমিকা পালন করেছে। যেটা কোনোমতেই গ্রহণযোগ্য নয়।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক আবু সুফিয়ান বলেন, নির্বাচনকালে নিরপেক্ষ সরকার না থাকলে নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু হয় না। নির্বাচন কমিশনকে সরকার কাজ করতে দেয়নি বলেই নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি। আগামীতে আওয়ামী সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন হবে না। নির্বাচন নিয়ে কোন ষড়যন্ত্র জনগণ মেনে নেবে না। নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠনের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে গঠন করতে হবে।
বাকলিয়া থানা বিএনপির সি. সহসভাপতি এম.আই চৌধুরী মামুনের সভাপতিত্বে ও নগর বিএনপির সাবেক গণশিক্ষা সম্পাদক ইব্রাহিম বাচ্চু এবং থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আলমগীরের যৌথ পরিচালনায় মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক এস.এম সাইফুল আলম, এস.কে খোদা তোতন, ইয়াছিন চৌধুরী লিটন, আহবায়ক কমিটির সদস্য অধ্যাপক নুরুল আলম রাজু, আনোয়ার হোসেন লিপু, গাজী মো. সিরাজ উল্লাহ, মো. কামরুল ইসলাম। বক্তব্য রাখেন নগর বিএনপি নেতা ইসহাক চৌধুরী আলীম, আমিন মাহমুদ, অধ্যক্ষ খোরশেদ আলম, মো. শাহজান, হাশেম সওদাগর, ইউনুছ চৌধুরী হাকিম, আলী ইউসুফ, এস এম সেলিম, এম.এ ছবুর, রেজিয়া বেগম মুন্নী, কোতোয়ালি থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন, ওয়ার্ড় বিএনপির সভাপতি হাজী নবাব খান, আবদুল্লাহ আল ছগির, মো. সেকান্দর, সাধারণ সম্পাদক হাজী মো. মহিউদ্দীন, মো. ইমরান উদ্দীন, ইয়াকুব চৌধুরী নাজিম, এটিএম ফরিদ প্রমুখ।