ঘিওরে সামাজিক ক্লাব দখল করে আওয়ামী লীগের অফিস!
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:২৬ পিএম, ২৭ সেপ্টেম্বর,সোমবার,২০২১ | আপডেট: ১১:০০ পিএম, ১৭ নভেম্বর,রবিবার,২০২৪
মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার নালী বাজারে অবস্থিত “বর্ণালী সংঘ” নামে একটি সামাজিক ক্লাব দখলে নিয়েছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। গতকাল রোববার সন্ধ্যায় ক্লাবটি দখলে নেয় তারা। এরপর সেখানে নালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের প্রধান কার্যালয় সংবলিত একটি সাইনবোর্ড টাঙানো হয়।
এ সময় ঘিওর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও দুর্নীতির দায়ে বহিষ্কৃত চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের বিশ্বাস, নালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদ খান, যুগ্ম সম্পাদক আশিস কুমার সেন, ২ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জনি, ৪ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ছবেদ আলী, সাধারণ সম্পাদক চঞ্চল শিকদার, ৫ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি সূর্য্য, সাধারণ সম্পাদক গোবিন্দ নন্দী, কৃষক লীগ নেতা আব্দুল কাদের, রায়হান মুন্সী, সাবেক যুবলীগ নেতা হাবিবুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
স্থানীয়রা জানান, প্রায় ৪০ বছর আগে স্থানীয় শ্রদ্ধাভাজন পরিতোষ কুমার সেনের উদ্যোগে “বর্ণালী সংঘ” নামে এই ক্লাবটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। উভাজানী, নালী, বানজান, তীর্থ ঘাটা ও নয়াচর গ্রামের বাসিন্দারা এই ক্লাবের সদস্য। গ্রামবাসীর চাঁদায় ক্লাবের পক্ষ থেকে খেলাধুলাসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজন করা হতো।
৫-৬ বছর ধরে ক্লাবটির সকল কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। ক্লাবটির সদস্যরা বিএনপির রাজনীতি করে, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা এমন অভিযোগ করলে মূলত ক্লাবের কার্যক্রমে ভাটা পড়ে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পরিতোষ কুমার সেন, রজব আলী মাস্টার, আনিসুর রহমান (আনিস স্যার), মিতা সেন, সীমা সেন, উমা সেন, নুরু, আলতামাশ, রঞ্জিত মন্ডল, সুধির সরকার, আনন্দ সরকার, অনিল সরকারসহ ক্লাবের অনেক সদস্যই আওয়ামী রাজনীতির সক্রিয় সদস্য।
জানতে চাইলে ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আনিসুর রহমান বলেন, ১৯৮২ সালে পরিতোষ কুমার সেনের উদ্যোগে আশপাশের এলাকার যুবকদের জন্য ক্লাবটি গঠন করা হয়েছিল। এটি একটি সামাজিক ক্লাব। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা গতকাল জোর করে ক্লাবটি দখলে নিয়েছে। ক্লাবের জায়গায় কোন রাজনৈতিক দলের অফিস হোক সেটা আমরা চাইনা। এই ক্লাবটি এলাকার সব শ্রেণী পেশার মানুষের।
নালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদ খান বলেন, প্রায় ৪০ বছর আগে সেখানে ক্লাব ছিল। অনেক দিন ধরে জায়গাটা পতিত পড়েছিল। আমরা কোন ক্লাব দখলে নেইনি। যারা বলেছে আমরা তারা জামায়াত-বিএনপির লোক। এটা সরকারি জায়গা। আমরা দলীয় অফিস বানানোর জন্য লিজ নেওয়ার আবেদন করেছি। তবে কোন কাগজপত্র এখনো পাইনি। কর্তৃপক্ষ আমাদের বলেছে লিজ না হলেও ভাড়া সিস্টেমে আমাদের জায়গাটা দিবে। তাই আমরা সেখানে দলীয় অফিস বানিয়েছি।
এ বিষয়ে ঘিওর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও দুর্নীতির দায়ে বহিষ্কৃত চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের বিশ্বাসের মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে পরে কথা বলবো বলে ফোন কেটে দেন তিনি।
নালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও নালী ইউপি চেয়ারম্যান আব্দলু কুদ্দুস মধু বলেন, ওখানে একটা ক্লাব ছিল। তবে দীর্ঘ দিন ক্লাবের কোন কার্যক্রম নেই। তাই আমরা ওখানে দলীয় অফিসের একটা সাইনবোর্ড লাগিয়েছি। তবে ওই জায়গার জন্য লিজের আবেদন করা হয়েছে কি’না সেটা আমার জানা নেই।
ঘিওর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ওয়াদিয়া শাবাব বলেন, বিষয়টা তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।