বোয়ালমারীতে আ.লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, পাল্টাপাল্টি পাঁচ মামলা, ধরা পড়েনি মূল আসামিরা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:০২ পিএম, ১৪ আগস্ট,শনিবার,২০২১ | আপডেট: ০৫:২৫ পিএম, ২৩ নভেম্বর,শনিবার,২০২৪
বোয়ালমারীতে দুদল গ্রামবাসির সংঘর্ষে একজন নিহত হওয়ার ঘটনা ২৪ দিন অতিবাহিত হয়ে গেছে। এঘটনায় পরস্পরবিরোধী পাঁচ মামলার দুই শতাধিক আসামির মূল ব্যক্তিরা এখনও ধরা পড়েননি। সর্বশেষ মামলা দুটি দায়ের হয়েছে গত সোমবার (৯ আগস্ট) ও বুধবার (১১ আগস্ট)। আসামিদের ধরতে ফরিদপুরের পুলিশ সুপারের আশ্বাসের প্রতিফলনও ঘটতে দেখা যায়নি।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, পরমেশ্বরদী ইউনিয়নের পরমেশ্বরদী গ্রামের মনিরুল কাজী ও নজরুল মোল্লার মধ্যে পাটের জাগ হারিয়ে যাওয়া নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। এ ঘটনার জের ধরে গত ২৩ জুলাই দুই পক্ষের সংঘর্ষে শহিদ ফকির নামে একজন নিহত হন। ওই সংঘর্ষে পুলিশসহ অর্ধশত লোক আহত হন।
নিহত শহিদ ফকিরের মামাতো ভাই পরমেশ্বরদী গ্রামের আব্দুল মান্নান শেখ বাদি হয়ে গত ২৬ জুলাই থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। ওই দিন রাতে ময়েনদিয়া গ্রামের মালা চৌধুরী বাদি হয়ে থানায় পাল্টা মামলা করেন। ডহরনগর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের (আইসি) উপ-পরিদর্শক তোতা মিয়া বাদি হয়ে দ্রুত বিচার আইনে তৃতীয় মামলাটি করেন।
গত সোমবার (৯ আগস্ট) হওয়া দ্রুত বিচার আইনের চতুর্থ মামলার বাদি পরমেশ্বরদীর কাজীপাড়ার মাবিয়া বেগম। সর্বশেষ গত বুধবার (১১ আগস্ট) প্রতিপক্ষ পরমেশ্বরদীর মো. নাজমুল শেখ বাদি হয়ে আরও একটি মামলা করেছেন।
হত্যা মামলায় এক নম্বর আসামি করা হয়েছে উপজেলা আওয়ামী লীগের নির্বাহী সদস্য এবং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল মান্নান মাতবরকে। এছাড়া তাঁর ভাই পরমেশ্বরদী ইউনিয়নের এক নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি সিদ্দিক মাতবরকেও আসামি করা হয়েছে।
আর লুটপাটের মামলায় এক নম্বর আসামি করা হয়েছে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য ও পরমেশ্বরদী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. নুরুল আলম মিনা মুকুলকে। এছাড়া আসামি করা হয়েছে ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি মো. মাসুদ শেখকেও। পাঁচ মামলায় আসামি হয়েছেন দুই শতাধিক ব্যক্তি। মামলার প্রধান আসামিদের কাউকেই এখন পর্যন্ত পুলিশ গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
একটি মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) উপপরিদর্শক দ্বীপঙ্কর সান্যাল জানান, গত সোমবার (৯ আগস্ট) ৬৪ জনের নামে দ্রুত বিচার আইনে পুলিশের করা মামলার অভিযোগপত্র (চার্জশিট) আদালতে দাখিল করা হয়েছে। উভয় পক্ষের নেতৃত্বদানকারী প্রথম সারির নেতারা অভিযোগপত্রভূক্ত (চার্জশিট) আসামির তালিকায় রয়েছেন বলে তিনি স্বীকার করেছেন।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ নুরুল আলম বলেন, শহিদ ফকির হত্যা মামলাটি গত ২ আগস্ট সিআইডিতে গেছে। মামলাগুলোর প্রধান আসামিদের এখনও গ্রেপ্তার করা যায়নি, তবে তাঁদের গ্রেপ্তারে পুলিশের নিয়মিত অভিযান চলছে। পাঁচ মামলায় এ পর্যন্ত গ্রেপ্তার হয়েছেন মোট ২৫ জন।
ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. আলিমুজ্জামান গত ২৮ জুলাই ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন। সহকারী পুলিশ সুপার (মধুখালী সার্কেল) ও মামলার তদন্ত তদারক কর্মকর্তা সুমন কর বলেন, `এসপি স্যারের নির্দেশে আমিসহ পুলিশের একটি চৌকষদল পরমেশ্বরদী এলাকাকে সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রেখেছি। মামলার আসামিদের যখন যাকে পাওয়া যাচ্ছে, তুলে আনা হচ্ছে। আশা করছি সামনের স্বল্পতম সময়ের মধ্যে প্রধান অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করতে পারবো’।