ফরিদপুরের বোয়ালামরীতে আওয়ামী লীগের দুগ্রুপের সংঘর্ষ নিহত এক
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১১:২৪ পিএম, ২৪ জুলাই,শনিবার,২০২১ | আপডেট: ০৫:১৫ পিএম, ২১ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার পরমেশ্বর্দী এলাকায় আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে একজন নিহত হওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভাঙচুর ও লুটপাট হয়েছে।
গতকাল শুক্রবার রাতে ওই এলাকার অর্ধশত বাড়িতে হামলা ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে।
পুরুষ শুন্য এলাকায় বিরাজ করছে থমথমে ভাব, অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। আগামী ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সক্রিয় হয়ে উঠেছে সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থীরা। আর এই কারনে নিজেদের আধিপত্যকে টিকিয়ে রাখতে ঘটছে ছোট বড় মারামারি, হামলা, সংর্ঘষের মতো ঘটনা। শুক্রবার পরমেশ্বরদী ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য নুরুল আলম মিনার গ্রুপ ও গত নির্বাচনের পরাজিত ইউপি প্রার্থী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানব সম্পদ বিষয়ক সম্পাদক মান্নান মাতুব্বর গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ঘের ঘটনা ঘটে। এতে পুলিশসহ আহত হয় অর্ধশত। এদের মধ্যে শুক্রবার রাত ৮টার দিকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ট্রমা সেন্টারে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ইউপি চেয়ারম্যান গ্রুপের সমর্থক কৃষক শহীদ ফকির (৫৭) । শহীদ ফকিরের মৃত্যুর খবর এলাকায় পৌছলেই রাত থেকে দফায় দফায় কাটা খাল ও ফকির পাড়ার অর্ধশত বসবাড়ি ও দোকান পাটে হামলা ও লুটপাট চালায় নিহত পক্ষের সমর্থকরা।
জানা গেছে, বর্তমানে প্রতিপক্ষের মামলার ভয়ে পুরো এলাকা পুরুষশূন্য, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে মোতায়েন রয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ। নিহত শহীদ ফকিরের বাড়ী ছাড়া অন্য কোন বাড়িতে পুরুষ সদস্যদের দেখা মেলেনি। নারীরা বর্ননা দেন লুটপাট ও হামলাকারীদের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের। ক্ষতিগ্রস্ত পরমেশ্বরর্দী এলাকার বাসিন্দা লতিফা বেগম(৩৫) জানান, শুক্রবার রাতে পার্শবর্তী খারদিয়া গ্রামের লোকেরা তাদের বাড়ীর গোলা থেকে ধান ও পাট লুট করে নিয়ে যায়। দেশী অস্ত্রের মুখে আমরা নিজেরাই ঘরের তালা খুলে দিতে বাধ্য হই। ওই গ্রামের অপর ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার রুবেল আকনের স্ত্রী রাবেয়া আক্তার (২৫)জানান, ‘হামলাকারিরা আমাদের বাড়ী গরু, পাট, পিয়াজ এমনকি ফ্রিজটাও লুটে নিয়ে গেছে ।
একই গ্রামের খাদিজা আক্তার বলেন, ‘আমাদের বাড়ীর তিনটি গোয়ালের ১০টি গরুই নিয়ে গেছে ওরা, বাড়ীর মজুত যা ছিলো সবই বস্তায় ভরে মাথায় করে লুট করে নিয়ে গেছে। এখন আমাদের ঘরে খাবার কিছুই নেই।
ফরিদপুরের বোয়ালমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নুরল আলম বলেন, ‘এলাকায় নতুন করে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আমরা তৎপর রয়েছি, মারামারির ঘটনায় কেউ এখনো লিখিত অভিযোগ না দিলেও প্রকৃত অপরাধিদের আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে।’
ওসি আরও বলেন, এ পর্যন্ত এ ঘটনায় ২২জনকে আটক করা হয়েছে। বর্তমানে নিহত শহীদ ফকিরের দাফনের প্রক্রিয়া চলছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোন মামলা হয়নি। শুক্রবার রাতে লুটপাট হয়েছে কিনা তা তার জানা নেই, দাবি করে ওসি বলেন, কেউ লুটপাটের শিকার হয়েছেন বলে তার কাছে কেউ কোন অভিযোগ করেন নি।