উপদেষ্টা কথা না বলায় ক্ষুব্ধ আহতরা, পঙ্গু হাসপাতালের সামনের রাস্তা আটকে বিক্ষোভ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৩:৪৭ পিএম, ১৩ নভেম্বর,
বুধবার,২০২৪ | আপডেট: ০৯:০৪ এএম, ১৪ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
জুলাই আন্দোলনে আহতরা রাজধানীতে সড়ক আটকে বিক্ষোভ করছেন। জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (নিটোর) চিকিৎসাধীন ব্যক্তিরা এই বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন।
আজ বুধবার (১৩ নভেম্বর) দুপুরে তারা হাসপাতালের সামনের আগারগাঁও থেকে শ্যামলীমুখী সড়ক বন্ধ করে দেন। এতে শ্যামলীমুখী সড়কে যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
বিক্ষোভকারীরা জানান, জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলন আহতদের মধ্যে পাঁচ শতাধিক ব্যক্তি পঙ্গু (নিটোর) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাদের সুচিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে না। পাশাপাশি আহতের চিকিৎসা ভাতাও দেওয়া হচ্ছে না। এমন অবস্থায় আজ বুধবার (১৩ নভেম্বর) সকালে হাসপাতালে আসেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা ও ব্রিটিশ হাইকমিশনার। তারা একটি ফ্লোরে কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে চলে যান। অন্যদের সঙ্গে কথা না বলায় বা খোঁজ না নেওয়ায় তারা ক্ষুদ্ধ হন। ক্ষোভ থেকে তারা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন।
কয়েকজন বিক্ষোভকারী ঘটনা বর্ণনা করে বলেন, বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক এবং স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম নিটোর পরিদর্শনে আসেন। তারা চতুর্থতলার পুরুষ ওয়ার্ড এক ঘণ্টারও বেশি সময় নিয়ে ঘুরে দেখে বের হওয়ার প্রস্তুতি নেন। কিন্তু তিনতলার ওয়ার্ডে থাকা আহতদের দেখতে না যাওয়ায় তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। একপর্যায়ে তারা নিচে এসে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একটি গাড়ি আটকে দেয়। তাদের মধ্যে কেউ একজন গাড়ির সামনে বসে পড়েন। আরেকজন গাড়ির ছাদে উঠে পড়েন।
এমন অবস্থায় স্বাস্থ্য উপদেষ্টা ও ব্রিটিশ হাইকমিশনার অন্য একটি গাড়িতে বেরিয়ে যান। বিক্ষোভকারীরা এসময় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অন্য একটি গাড়ি ও প্রটোকলে থাকা পুলিশের একটি গাড়ি আটকে দেয়। একপর্যায়ে তারা রাস্তায় নেমে আসেন।
জুলাই আন্দোলনে আহত শিক্ষার্থী মো. হাসান বলেন, আমাদের এক-একটা ওয়ার্ডে ৪৮ জন করে মানুষ আছে। কিন্তু উনারা উনাদের পছন্দের বিদেশি পাঁচ সাংবাদিক নিয়ে এসেছেন এবং আমাদের দেশীয় কোনও সাংবাদিকদের ঢুকতে দেওয়া হয়নি। তারা দু-একজনের সঙ্গে কথা বলে চলে গেছেন। কিন্তু আমাদের সঙ্গে কোনও কথা বলেননি। আমরা কথা বলতে গেলেও আমাদের বাধা দেওয়া হয়েছে। আমাদের সামান্য ট্রিটমেন্ট (চিকিৎসা) দিয়ে তিন মাস বসিয়ে রাখা হয়েছে। আমার পায়ে ৯টি অপারেশন করা হয়েছে, তারপারেও এখন পর্যন্ত সুস্থ হতে পারিনি। আমরা চাই তারা সবাই আমাদের সঙ্গে কথা বলুক। আমাদের জন্য ঘোষণা করা সেই ১ লাখ টাকা দিক এবং ভালোমানের চিকিৎসা সেবা দিক।
এ বিষয়ে ডিএমপি তেজগাঁও বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ (এডিসি) মোহাম্মদ জিয়াউল হক বলেন, জুলাই ও ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আহতদের সুচিকিৎসা ও ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণের দাবিতে তারা হাসপাতালে সামনে সড়কে বিক্ষোভ করছেন। আমরা আহত, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বিষয়টি সমাধানের জন্য আলোচনা করছি। দ্রুতই সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে।
স্বাস্থ্য উপদেষ্টা এবং ব্রিটিশ হাইকমিশনারের গাড়িতে হামলা বিষয়ে এডিসি জিয়াউল হক বলেন, তারা আহত রোগী। তারা কীভাবে গাড়িতে হামলা বা ভাঙচুর করবে? মূলত ক্ষোভের জায়গা থেকে তারা গাড়ি আটকে দিয়েছে।
দিনকাল/এসএস