শিক্ষার উন্নয়ন এবং জনপ্রশাসনে শিক্ষা ক্যাডারের গুরুত্ব
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১১:৩০ পিএম, ২ জানুয়ারী,বৃহস্পতিবার,২০২৫ | আপডেট: ০৫:০৭ এএম, ৫ জানুয়ারী,রবিবার,২০২৫
যে কোনো দেশের উন্নয়নে দক্ষ এবং আধুনিক জনপ্রশাসন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। Blavatnik Index of Public Administration এ একটি দেশের জিডিপির সাথে জনপ্রশাসনের দক্ষতাসূচক স্কোরের তাৎপর্যপূর্ণ ধনাত্মক সম্পর্ক দেখা যায়। দুঃখজনক হলেও সত্য যে, বাংলাদেশের জনপ্রশাসনের দক্ষতা সূচকের মান অত্যন্ত নিম্ন । ২০২৪ সালের প্রকাশিত প্রতিবেদনে এই মান মাত্র শতকরা ৪০ ভাগ, যা ১২০ টি দেশের মধ্যে ৯৩তম। তাই জনপ্রশাসনের দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে দেশের উন্নয়নের গতি বৃদ্ধির সুযোগ রয়েছে। অবশ্য সাম্প্রতিককালে বাংলাদেশের সিভিল সার্ভিসের জনগণনির্ভর সেবাপ্রদানের চেয়ে ক্ষমতাসীন দল তোষণ প্রবণতার কারণে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে। এই ব্যবস্থার সংস্কার করে রাষ্ট্রযন্ত্রকে জনসেবামুখি (সার্ভিস প্রোভাইডার এপ্রোচ) করার লক্ষ্যে গঠিত হয়েছে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন। একটি যুগোপযোগী জনপ্রশাসন গড়ে তোলায় গঠিত কমিশন সুনির্দিষ্ট সুপারিশ প্রদান করবে বলে জনগণ আশাবাদী।
দেশের জনপ্রশাসন ২৬ টি ক্যাডার নিয়ে গঠিত যার মধ্যে দ্বিতীয় বৃহত্তম হচ্ছে সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার। এর সদস্য সংখ্যা বর্তমানে ১৬ হাজার। দেশের কলেজ পর্যায়ে সরাসরি শিক্ষাদান এবং মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা (বিশ্ববিদ্যালয় ব্যতীত) সংশ্লিষ্ট প্রশাসন এই ক্যাডারের কর্মপরিধির আওতাভুক্ত। উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত শিক্ষার পাঠ্যক্রম প্রণয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা এনসিটিবি, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষাঅধিদপ্তর, ৯টি শিক্ষা বোর্ড, শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউটসহ শিক্ষার সাথে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন সারাদেশ জুড়েই বিস্তৃত এবং এদের সঠিক ব্যবস্থাপনা দেশের উন্নয়নে অনস্বীকার্য। নীতিনির্ধারক এবং শাসকগোষ্ঠীর কাছ থেকে যথাযথ গুরুত্ব না পাওয়ায় শিক্ষাখাত দীর্ঘদিন ধরে সঠিক ব্যবস্থাপনার অভাবে ভুগছে। এর ফলে বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা আমলাতান্ত্রিকতার বৃত্তে বন্দি। প্রাথমিক হতে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত প্রতিটি স্তরে শিক্ষার মান হতাশাজনক।
দেশের শিক্ষাখাতের দুর্বলতা এবং ঘাটতিসমূহ নিয়ে লেখালেখি কম হয় নি। অপর্যাপ্ত বাজেট বরাদ্দ এবং অশিক্ষাবিদ দ্বারা শিক্ষাসংক্রান্ত নীতিপ্রণয়ন শিক্ষাখাতের বিবর্তনের প্রধানতম বাধা। প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষকদের সমাজে যথাযথ মর্যাদা প্রতিষ্ঠা না হওয়ার কারণে শিক্ষকের মান বৃদ্ধি ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি শিক্ষার মানোন্নয়ন থমকে আছে। সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের স্বল্পতা, যোগ্য শিক্ষকের অভাব, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দুর্বল ও বিশৃঙ্খল ব্যবস্থাপনা, স্থানীয় প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণ, দুর্নীতি, রাজনীতিকরণ এবং আধুনিক শিক্ষা উপকরণের অভাবে কাঙ্খিত মানের শিক্ষা নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। অথচ একবিংশ শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে দেশকে উন্নয়নের ধারায় নিয়ে যেতে হলে একটি আধুনিক ও যুগোপযোগী শিক্ষাখাতের অস্তিত্ব অত্যাবশ্যক। যোগ্য শিক্ষক সমাজ এবং শিক্ষাবিদ কর্তৃক শিক্ষা প্রশাসনের পরিচালন ও নীতিপ্রণয়ন কার্যকর এবং ফলপ্রসূকরণ শিক্ষাব্যবস্থার পূর্বশর্ত। এই আলোকেই জনপ্রশাসনে শিক্ষা ক্যাডারের গুরুত্ব মূল্যায়ন করতে হবে।
নাজুক অবস্থায় থাকা দেশের শিক্ষাব্যবস্থার ব্যাপক সংস্কার এবং উন্নয়ন প্রয়োজন। যেহেতু একজন ব্যক্তির শিক্ষার ভিত্তিই হচ্ছে তার প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষা, তাই সবচেয়ে বেশিু গুরুত্ব দেওয়া দরকার প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়নে। এই লক্ষ্যে সর্বাগ্রে সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবকাঠামোর আধুনিকায়ন জরুরি। মান্ধাতার আমলের জীর্ণ ঘরের বিদ্যালয় হতে শিশুদের মুক্তি দিতে হবে। শহর ও গ্রামের প্রতিটি বিদ্যালয়ের প্রতিটি শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের বসার ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনার পাশাপাশি পর্যায়ক্রমে ডিজিটাল উপকরণ সংযুক্ত করার পদক্ষেপ নেওয়া আবশ্যক। এই জন্য প্রয়োজন হবে সুবৃহৎ প্রকল্প গ্রহণের। ইতোপূর্বে নানামুখি প্রকল্প গ্রহণ করা হলেও সেইসব প্রকল্প ছিল আমলা নির্ভর ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত। ফলে ওইসব প্রকল্পের সুফল আমরা খুব কমই পেয়েছি। প্রকৃতপক্ষে, এই সমস্ত প্রকল্পের পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং বাস্তবায়ন শিক্ষাবিদগণ দ্বারা সম্পন্ন হওয়াই বাঞ্ছনীয়।
শিক্ষকদের মর্যাদা বৃদ্ধি ছাড়া কোনো সমাজে শিক্ষার মান বৃদ্ধি পেতে পারে না। একজন কোমলমতি শিক্ষার্থী তার শিক্ষককে সমাজে সম্মানিত অবস্থানে না দেখলে তার কাছে শিক্ষা গ্রহণের গুরুত্ব হ্রাস পায়। তাই সমাজে শিক্ষকদের যথাযথ সম্মানের আসনে অধিষ্ঠিত করতে হবে। বিশেষ করে প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষকদের বর্তমান দুরাবস্থা হতে মুক্ত করে তাদেরকে জাতির শিক্ষক হিসাবে মর্যাদার আসনে উন্নীত করার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি।
প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষকদের মর্যাদা এবং এই স্তরের শিক্ষার মান বৃদ্ধির জন্য পর্যায়ক্রমে কয়েকটি পদক্ষেপ গ্রহণ করা যায়। যেমন- সকল প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষকদের ধাপে ধাপে বৈদেশিক প্রশিক্ষণের আওতায় নিয়ে আসা, স্থানীয় প্রশাসনের সাথে প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষকদের সম্পর্ক নিয়ে নীতিমালা প্রণয়ন করা যাতে করে শিক্ষকদের মর্যাদা সমুন্নত থাকে, পিটিআইগুলো অগ্রাধিকারভিত্তিতে Centre of Excellence হিসাবে গড়ে তোলা এবং নিয়মিত উন্নত প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করার মাধ্যমে শিক্ষকতার মান বৃদ্ধি করা, নব-নিয়োগপ্রাপ্ত প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষকদের জন্য যুগোপযোগী বুনিয়াদী প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা, প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষকদের বেতন ও গ্রেড উন্নয়নের জন্য জাতীয় পর্যায়ে কমিটি গঠন ও তাদের সুপারিশের ভিত্তিতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা, তাদের নিয়মিত পদোন্নতি ও স্থানীয় শিক্ষা প্রশাসনে পদায়নের ব্যাপারে জোর দেওয়া, বেতন ও গ্রেড বৃদ্ধি সাপেক্ষে প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষক পদে যোগদানের জন্য শিক্ষাগত যোগ্যতা বৃদ্ধি করার পাশাপাশি কোমলমতি শিক্ষার্থীদের শিক্ষক হিসাবে যোগদানের জন্য যোগ্যতা হিসাবে বিশেষ কোনো পূর্ব-প্রশিক্ষণ অন্তর্ভুক্ত করা যায় কিনা তা বিবেচনা করা, স্থানীয় বিভিন্ন সামাজিক কমিটিতে প্রধান শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে তাদের ক্ষমতায়ন করা। এই সমস্ত মৌলিক কর্মকান্ড সঠিকভাবে পরিচালন করার জন্য শিক্ষা প্রশাসনে অভিজ্ঞ এবং দক্ষ ব্যক্তির প্রয়োজন হবে।
দেশের মাধ্যমিক শিক্ষার বর্তমানের হতাশাজনক অবস্থা হতে উত্তরণের জন্য কয়েকটি পদক্ষেপ গ্রহণ অত্যাবশ্যক। প্রতিটি জেলায় অবস্থিত বয়েজ ও গার্লস স্কুলগুলোকে বিশ্বমানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার জন্য অবকাঠামোগত উন্নয়ন করা, শ্রেণি কক্ষগুলোতে ডিজিটাল উপকরণ সংযুক্ত করা, খেলাধুলা এবং পাঠ্যক্রম বহির্ভূত কার্যক্রম পরিচালনার জন্য প্রতিটি স্কুলে একটি করে বিশেষ সেন্টার স্থাপন করা, ভালো স্কুলের প্রতি চাহিদার কথা বিবেচনা করে প্রতিটি জেলায় কমপক্ষে একটি করে নতুন স্কুল প্রতিষ্ঠা করা, প্রতিটি মাধ্যমিক স্কুলে একটি করে বৈদেশিক ভাষা প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন করে আরবিসহ অন্যান্য ভাষা শেখানোর উদ্যোগ নেওয়া, মাধ্যমিক স্কুলের সহকারী শিক্ষকদের পদ প্রথম শ্রেণিতে উন্নীত করে এই স্তরের জন্য স্বতন্ত্র অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠা করা, নব-নিয়োগপ্রাপ্ত মাধ্যমিক শিক্ষকদের জন্য বিশ্বমানের বুনিয়াদি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করার লক্ষ্যে ঢাকার বাহিরে আধুনিক মাধ্যমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ একাডেমি গড়ে তোলা, পর্যায়ক্রমে সকল মাধ্যমিক শিক্ষককে বৈদেশিক প্রশিক্ষণের আওতায় নিয়ে আসার পাশাপাশি নিয়মিত একাডেমিক ট্রেনিং নিশ্চিত করা, এবং মাধ্যমিক শিক্ষকদের নিয়মিত পদোন্নতি এবং শিক্ষা প্রশাসনে তাদের পদায়নের ব্যবস্থা গ্রহণ ইত্যাদি ব্যবস্থা কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।
উচ্চ মাধ্যমিক ও কলেজভিত্তিক উচ্চ শিক্ষা মানবসম্পদ উন্নয়নে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়, কেননা এই স্তরসমূহের পরেই একজন শিক্ষার্থী চাকুরি বাজারে প্রবেশ করে। তাই এই স্তরসমূহে শিক্ষার উন্নয়নে কোনোভাবেই অবহেলা করা যাবে না। প্রয়োজনীয়তা বিশ্লেষণের মাধ্যমে শহর এবং শহরাঞ্চলের বাহিরে নতুন নতুন উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা জরুরি। স্নাতক কলেজসমূহে চাকুরি বাজারের সাথে সংশ্লিষ্ট বিষয়সমূহকে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত। ব্যবসায় প্রশাসন, কম্পিউটার সায়েন্স, হসপিটালিটি এন্ড ট্যুরিজম, এপ্লায়েড ক্যামেস্ট্রি, বায়োকেমিস্ট্রি, নগরায়ন, উন্নয়ন অধ্যয়ন প্রভৃতি বিষয়ে বিভাগ স্থাপনে উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে। একইসাথে চাকুরি বাজারের সাথে সংশ্লিষ্টতা কম এইরকম বিভাগসমূহে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ধীরে ধীরে কমিয়ে আনা যেতে পারে। তবে জ্ঞানভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কোনো বিভাগেরই গুরুত্ব কম বলে বিবেচনা করা যাবে না। স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসাসমূহের সাথে কারিগরি শিক্ষাকে সম্পৃক্ত করার মাধ্যমে ভৌত অবকাঠামোর সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করা যায় কিনা তা মূল্যায়ন করে পরিকল্পনা গ্রহণের জন্য উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করা যেতে পারে। শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়নে সরকারি ও বেসরকারি স্কুল, কলেজ, ও মাদ্রাসাকে সমান গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করতে হবে। এমপিওভুক্তি প্রক্রিয়াকে সহজীকরণ এবং সম্প্রসারণের লক্ষ্যে পৃথক কর্তৃপক্ষ গঠন করা যেতে পারে।
প্রাথমিক হতে উচ্চ শিক্ষা পর্যন্ত ব্যাপক এবং বহুমুখি সংস্কার এবং উন্নয়ন প্রয়োজন এবং তা বাস্তবায়ন করে দীর্ঘমেয়াদে কার্যকর রাখার জন্য প্রতিযোগিতামূলক বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে গঠিত সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার ভূমিকা রাখতে পারে, যদিও এই ক্যাডার বিদ্যমান ক্যাডার কাঠামোতে সবচেয়ে বেশি অবহেলিত ও বঞ্চনার শিকার। নখদন্তহীন শিক্ষক সমাজ হিসাবে ‘জোর যার মুল্লুক তার’ নীতিতে পরিচালিত আমাদের এই সমাজে শিক্ষা ক্যাডার না গুরুত্ব পায় শাসক শ্রেণির কাছে, না পায় সাধারণ মানুষের কাছে। আত্মবিধ্বংসী এই জাতি শিক্ষক সমাজের মেধাবী এই অংশকে অবমূল্যায়ন করে দেশের টেকসই উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করছে। শুধুমাত্র সচেতন ব্যক্তিই শিক্ষা ক্যাডারের গুরুত্ব অনুধাবন করতে পারবে।
অনেক অবহেলার মাঝেও শিক্ষা ক্যাডারের সদস্যবৃন্দ চারমাস মেয়াদী একটি উন্নতমানের বুনিয়াদী প্রশিক্ষণ লাভ করে থাকে। অন্যান্য সকল ক্যাডারের ন্যায় রাষ্ট্রের সংবিধান এবং মৌলিক আইনগত কাঠামোর উপর যথেষ্ট জ্ঞান অর্জন সাপেক্ষে শিক্ষা ক্যাডারের সদস্যবৃন্দ পদোন্নতিপ্রাপ্ত হয়ে থাকেন। যদিও পদোন্নতিযোগ্য হবার পরেও তাকে বছরের পর বছর পদোন্নতি বঞ্চিত থাকতে হয়। এমনকি পনেরো সালের পেস্কেলের মাধ্যমে শিক্ষা ক্যাডার সদস্যদের তৃতীয় গ্রেড থেকে চতুর্থ গ্রেডে নামিয়ে আনা হয়। যেখানে প্রথম, দ্বিতীয় গ্রেডে আপগ্রেড করে নতুন পদবিন্যাস হবার কথা ছিল, সেখানে পদের আরও অবনমন ঘটিয়ে বছরের পর বছর তাদের পদোন্নতিবঞ্চিত রাখা হচ্ছে। অনেকে নিজ প্রচেষ্টা অথবা অপ্রতুল সরকারি সুযোগের মাধ্যমে গ্রহণ করে থাকেন বৈদেশিক প্রশিক্ষণ। এমন পরিস্থিতির মধ্যে শিক্ষকতার পাশাপাশি এই ক্যাডার সার্ভিসের একটা উল্লেখযোগ্য অংশ শিক্ষা প্রশাসনের বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করে প্রশাসনিক দক্ষতা অর্জন করে থাকেন। বিষয়ভিত্তিক জ্ঞানের সাথে যুক্ত হয়ে এই অভিজ্ঞতাসম্পন্ন শিক্ষা ক্যাডারের সদস্যবৃন্দ শিক্ষাব্যবস্থার আধুনিকায়নের মাধ্যমে দেশের উন্নয়ন নিশ্চিতকরণে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালনে সক্ষম। তাই এই ক্যাডারকে অবদমনের যে কোনো অপচেষ্টা জাতির জন্য হবে আত্মবিধ্বংসী।
মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন, পিএইচডি, অর্থনীতির শিক্ষক