নালিতাবাড়ীতে পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে তারানি-পানিহাটা পাহাড়
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪:২৬ পিএম, ২৮ এপ্রিল,
বুধবার,২০২১ | আপডেট: ০২:০৪ এএম, ১৬ সেপ্টেম্বর,সোমবার,২০২৪
শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার রামচন্দ্রকুড়া ইউনিয়নের প্রকৃতির নৈসর্গিক শোভা মন্ডিত পানিহাটা-তারানি পাহাড়ি এলাকা। জীবনের একঘেয়েমি আর ক্লান্ত পরিশ্রান্ত মনকে প্রফুল্ল করতে শহর ছেড়ে চলে আসতে পারেন এই পাহাড়ে।
উত্তরে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের তুড়া জেলার সীমান্তঘেঁষা ঘন সবুজ শ্যামল বন, খরস্রোতা পাহাড়ি ভোগাই নদীর পাহাড়ের সঙ্গে মিতালী আর বৃক্ষরাজি দেখে ভ্রমণ পিয়াসীদের মন আনন্দিত হয়। তারা কিছুক্ষণের জন্য হলেও ভুলে যান শহরের জীবনের কর্মক্লান্তি। প্রকৃতির নিঁখুত ভালোবাসায় হারিয়ে যান তারা স্বপ্নের রাজ্যে।
ভারত সীমান্তবর্তি হওয়ায় চিরসবুজ বাংলা মায়ের অপরুপ দৃশ্য দেখার পাশাপাশি ভারতের সবুজ বনানী দর্শনার্থীদের অনেক বেশি মনের তৃপ্তি মেটায়। পানিহাটা পাদ্রি মিশনের পশ্চিম পাশে উঁচু পাহাড়ে দাঁড়িয়ে উত্তর দিকে চাইলে চোখে পড়ে নীলাভ-চিরসবুজ ভারতের পাহাড়ি চুড়া জেলাকে আবছা আবরণের চাঁদরে জড়িয়ে নিয়েছে কুয়াশার মতো মেঘ কখনো বা কুয়াশা নিজেই।
দূরের টিলাগুলো কেবলই লুকোচুরি খেলে এরই আড়ালে। ভারতের মেঘালয় রাজ্যের ছোট ছোট পাহাড় গুলোকে ফাঁকি দিয়ে তুড়ার অববাহিকা থেকে সামনে সোজা এসে পশ্চিমে চলে গেছে পাহাড়ি খরস্রোতা নদী ভোগাই। একপাশে তার কাশবন আর অপর পাশে শত ফুট উঁচু দাঁড়িয়ে থাকা সবুজে জড়ানো পাহাড় ও নদী।
চতুর্দিকে ছোট ছোট অসংখ্য পাহাড়ের সারি। পূর্ব দিকের কয়েকটি পাহাড়ের গা ঘেঁষে ভোগাই নদীতে এসে মিশেছে ছোট একটি পাহাড়ি ঝরণা। তার পাশেই খ্রিষ্টান ধর্মালম্বীদের উপাসনালয় পানিহাটা পাদ্রি মিশন। এখানে আছে ছোট একটি চিকিৎসা কেন্দ্র, বিদ্যালয় আর ছোট ছোট শিক্ষার্থীদের থাকার জন্য হোস্টেল। সেখানে শিশু- কিশোরদের কোলাহল। এসব মিলে প্রকৃতি প্রেমীদের প্রতিনিয়ত আকর্ষণ করে অপরূপা পানিহাটা-তারানি পাহাড়।
অবশ্য এলাকাবাসী এই পাহাড়টিকে পানিহাটা নামেই জানেন। কিন্তু এই সৌন্দর্য্যের ভাগটা শুধু পানিহাটাই নিতে পারেনি। এর একটা অংশে ভাগ বসিয়েছে পাশের তারানি গ্রামের পাহাড়। তাই দর্শনার্থীদের জন্য পানিহাটা-তারানি দুটো মিলেই গড়ে উঠতে পারে পর্যটন স্পট।
সবুজ চাঁদরে ঘেরা গারো পাহাড়ে প্রিয়জনকে সঙ্গে নিয়ে চলে আসুন প্রকৃতির রাজ্যে। যারা শুনেছেন শেরপুরের বন্য হাতির তাণ্ডব তারা মিশনের পুর্বপাশে ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠি জাতি তথা পেকামারি গারো আদিবাসী পল্লীর অধিবাসীদের কাছ থেকে শুনতে পারবেন বন্যহাতির ধ্বংসলীলার কথা।
মাতৃতান্ত্রিক ব্যাবস্থায় পরিচালিত গারোদের পরিবারের প্রধান নারীরা। তাদের সহজ-সরল জীবন যেন ভ্রমণ পিয়াসীদের অবাক করে দেয়। তাদের জীবন সংগ্রাম কাছে থেকে দেখারও শুনার সুযোগ পাবেন এই গ্রামে। দারিদ্র আর বন্যহাতির সঙ্গে লড়াই করে বেঁচে থাকা এসব গারো আদিবসীদের অকৃত্রিম আতিথীয়তা দেখে মুগ্ধ হন ঘুরতে আসারা।
বর্তমান কৃত্রিমতার যুগে প্রকৃতির নির্মিত সবুজ বনানী দেখে কর্মক্লান্তি ভুলে অনাবিল আনন্দে দিনের আলোতেই ভ্রমণ পিয়াসীরা ফিরে যায় নিজ ঘরে।