ডিজিটাল অসাধু ব্যবসার আরেক নাম স্ট্রিমকার ডেটিং এ্যাপ
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ০৯:২৪ পিএম, ১৯ এপ্রিল,সোমবার,২০২১ | আপডেট: ০৫:৪৪ পিএম, ২৪ নভেম্বর,রবিবার,২০২৪
স্ট্রিমকার লাইভ আমেরিকা হতে পরিচালিত একটি অ্যাপে। ডাইমন্ড গিফট যা নানা ধরনের চোখ ধাধানো গ্রাফিক্স দিয়ে ডিজাইন করা। অনুনয়ন করে কমেন্ট করছিলেন অনেকে, তুমি অনেক সুন্দর ইত্যাদি। কেউ কেউ অবশ্য দেখছিলেন আবার নসিহতও করছিলেন। বলছিলেন, এগুলো ভালোনা। ভালো হয়ে যাও। অনেকেই নিজেদের ফোন নম্বর দিচ্ছিলেন। লিখছিলেন, তোমাকে চাই। ইনবক্সে আসো তোমার হোয়াটসঅ্যাপ নাম্বার দেও প্লিজ এইসব।
এরকম নানা অ্যাপে এমন অসংখ্য নারী রয়েছে। যারা শারীরিক-মানসিক প্রশান্তি দিতে হাজির হন এসব লাইভে। সেখান থেকে অর্থের বিনিময়ে ডেকে নেন ইমোতে হোয়াটসঅ্যাপে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে সরাসরি নিজের বাসাতে। তাদেরই একজন আরিফা। এটা তার ফেইক নাম। প্রকৃত নাম গোপন করে লাইভে আসেন। পুরো চেহারা দেখান। সর্বোচ্চ আবেদনময়ী ঠোঁটের হাসি ও চোখের আবেদনময়ী ইশারা প্রদর্শন করেন।
আরিফা (ছদ্মনাম) সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঢাকা কোনো এক অভিযাত এলাকায় থাকেন। পেশায় একজন মডেল হলেও কর্ম হারিয়েছেন বহুদিন হল। আরিফা লেখা পড়া করেছেন মাধ্যমিক পর্যন্ত। তার অর্থ উপার্জন করার মত কেউ নেই বললেই চলে। নিজেদের শরীর-সৌন্দর্যই তাদের পুঁজি।
বিশ্ব যেখানে ডিজিটাইলেশন হচ্ছে সেখানে শ্রম শেষে একটু মনের শান্তির খোরাক মিটাতে দেশে বিদেশে বসে সবাই ঝুঁকছে এখন ইন্টারনেটে একটু আনন্দ পেতে। সেখান থেকেই নিরাপদে সঙ্গী খুঁজে নিচ্ছে অনেকেই। এতে বেশি শিকার হচ্ছে প্রবাসী বাঙ্গালীরা। যারা ইউরোপীয়ো ও মিডিলইস্ট দেশ গুলোতে বেশি থাকে। তারা বাংলাদেশে অবস্থিত স্ট্রিমকারের নিয়োগ প্রাপ্ত এজেন্টদের মাধ্যমে ডাইমন্ড কিনে আরিফার মত হাজারো মেয়ের পিছে ছুটছে এবং নানা ধরনের অসামাজিক কার্যকলাপের সাথে জড়িয়ে পড়ছে। বলে রাখা ভাল এইধরনের অ্যাপগুলো বাংলাদেশে অবৈধ। এই কারনে এই অ্যাপগুলোতে ঢুকতে হলে অবৈধ ভিপিন ব্যবহার করতে হয়। অন্যথায় বাংলাদেশ থেকে এইসব অ্যাপগুলোতে ঢোকা যায় না।
টাকা পাচার বা বাংলাদেশ সরকার কে ট্যাক্স না দিয়ে বিপুল পরিমানের টাকা পার করছে বাংলাদেশের অবস্থিত এইসব অ্যাপের ডাইমন্ড সেলার এজেন্সিগুলো। অনেক সময় দেখা যায় এই এজেন্সিগুলোই টাকা মেরে দিয়ে উধাও হয়ে যায়। তখন ঐসব মেয়েরা পরে নানা বিপদে। বাংলাদেশের এই অ্যাপগুলো লিগ্যালিটি না থাকায় নেওয়া যায় না কোনো আইনি ব্যবস্থা তাই প্রতারকরা বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়ায়।
এখানে শুধু যে খারাপ মেয়েরা আছে তা কিন্তু না এখানে অনেক ভাল পরিবারের ভাল মেয়েরাও রয়েছে। তারা কিছু মানুষের সঙ্গে খুব ভাল সম্পর্ক করে। আর কেউ কেউ করে মন দেওয়া নেওয়া। এমন মন দেওয়া নেওয়া মাঝেও রয়েছে নানা প্রতারনা। ছেলে মেয়েকে প্রেমের ফাদে ফেলে অনৈতিক ভাবে অর্থ আদায় করে আবার কখনো মেয়ে ছেলেদেরকে প্রেমের ফাদে ফেলে অনৈতিক ভাবে অর্থ আদায় করে। প্রেমের ফাদে ফেলে অশ্লীল ছবি বা ভিডিও তৈরি করে প্রেমের প্রতারনার খেলা জমে এইসব লাইভ ডেটিং অ্যাপে। আবার অনেকেই প্রেমের ফাদে পড়ে যখন লাঞ্চনার শিকার হয় ব্লাক মেইলেই শিকার হয় তখন নানা ধরনের ক্ষতিকারক দিকও বেছে নেয়। সদ্য কয়েকদিন আগে এমন একটি ঘটনা ভাইরাল হয় নিচে সেই ভিডিওটি দেখতে পারবেন। ভিডিওতে দেখা যায় একজন মেয়ে এই প্লাটফর্মে পরিচিত একজনের জন্য সেলিং ফ্যানের সঙ্গে ওর্না পেচিয়ে গলাই ফাস দিতে যাচ্ছে। পরে অনুসন্ধানে বেড়িয়ে আসে মেয়েটির সঙ্গে সৌদি প্রবাসী একটি ছেলের সাথে দীর্ঘদিনের সম্পর্ক। পরবর্তিতে মেয়েটি জানতে পারে ঐছেলেটির স্ত্রী ও দুটি সন্তার রয়েছে। তখন ঐ মেয়েটি ঐছেলের সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে অনিচ্ছা প্রকাশ করলে ছেলেটি গোপন ভিডিও দিয়ে মেয়েটিকে নানা ধরনের মানষিক চাপ দেয়। পরে মেয়েটি মানষিক চাপ সইতে না পেরে লাইভ স্ট্রিমে গিয়ে নিজের গলায় ফাস দেওয়ার চেষ্টা করে। এমন নানা ঘটানা আছে এই জগতে।
এই অপরাধীগুলো বেঁচে যাচ্ছে শুধু একটি কারনে এই এ্যাপের অনুমোদনহীনতা। অন্যদিকে বাংলাদেশ সরকারের অনুমতি নানা থাকায় লুট হচ্ছে হাজার হাজার টাকা। পাচার করা হচ্ছে বিদেশে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এরকম নিশি অসংখ্য। সমাজ ও অপরাধ বিশ্লেষকরা মনে করেন, নির্দিষ্ট কোনো ফ্লাটফর্ম না থাকায় নিশিরা পরিচয় গোপন করে সর্বত্রই ছড়িয়ে রয়েছেন। ইন্টারনেটকে তারা একটি মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করছেন। ইন্টারনেট সুরক্ষার জন্য এ বিষয়ে শিক্ষার প্রয়োজন রয়েছে। যেনো একের কর্মকাণ্ডে অপরের ক্ষতি না হয়।
এসব কয়েনের মূল্য প্রায় ১০০০ থেকে ২০০০ টাকা পর্যন্ত। যার একটি টাকাও সরকার ভ্যাট বা ট্যাক্স পায় না।
এই অ্যাপ গুলো বাংলাদেশ লোকেশনে একটিভ করতে হলে ভিপিএন একটিভ করে নিতে হয়।
তালিকায় রয়েছে নানা অ্যাপ
১। বিগো
২। ইমো
৩। আপলাইভ
৪। ওয়েলাইভ,
৫। হাইভ লাইভ, ইত্যাদি
এইসব অ্যাপগুলোতে টাকা লেনদেন হয় বিকাশ ও ব্যাংকের মাধ্যমে কিন্তু সরকারের রাজস্বতে শুল্ক দেওয়া হয়না।কর ফাকি দিয়ে চলে অনলাইনের কয়েন ব্যবসা। এতে করে দেশের টাকা বিদেশে পাচার হচ্ছে। কয়েন ব্যবসা করছে বাংলাদেশের বেশকিছু অসাধু ব্যবসায়ী।