সাবেক ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মুফতি ওয়াক্কাস আর নাই
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:৪২ এএম, ১ এপ্রিল,বৃহস্পতিবার,২০২১ | আপডেট: ০২:০৮ এএম, ২২ নভেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
সাবেক ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ও জমিয়তে ইসলামের একাংশের সভাপতি মুফতি মুহাম্মদ ওয়াক্কাস মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
আজ বুধবার ভোর পৌনে পাঁচটার দিকে রাজধানীর বাবর রোডের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিনি মারা যান। তার বয়স হয়েছিল ৭৩ বছর। জমিয়তে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আব্দুল মালেক চৌধুরী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, তাকে যশোরের মণিরামপুরে বাদ মাগরিব দাফন করা হবে।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের শোক : দেশের বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ, ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক দল জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ-এর সভাপতি ও সাবেক ধর্মমন্ত্রী মুফতি মোহাম্মদ ওয়াক্কাস গতকাল বুধবার ফজরের সময় ঢাকায় ইন্তেকাল করেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। তার মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আজ বুধবার এক শোকবাণীতে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “দেশের প্রখ্যাত ইসলামী চিন্তাবিদ ও খ্যাতনামা আলেম মুফতি মোহাম্মদ ওয়াক্কাস ২০ দলীয় জোটের একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা হিসেবে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে যে সাহসী ভূমিকা পালন করেছেন তা দেশের মানুষের মনে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। তিনি ছিলেন একজন সর্বজনশ্রদ্ধেয় ইসলামী পন্ডিত। তিনি ইসলামী জ্ঞানের প্রচার ও প্রসারে নিবেদিতপ্রাণ হয়ে কাজ করেছেন। দেশকে দুঃশাসন থেকে মুক্ত এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনে তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন। রাজরোষে পড়া সত্ত্বে¡ও তিনি তার অভীষ্ট লক্ষ্য থেকে কখনোই সরে আসেননি। বর্তমান ফ্যাসিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে তিনি ছিলেন নির্ভীক কন্ঠস্বর। রাজনীতির বাইরেও তিনি ছিলেন একজন খ্যাতনামা আলেম। পাশাপাশি নম্রতা, বিনয়, সৌজন্য, সাহস ও সহিষ্ণুতা ছিল তার স্বভাবজাত।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমি মুফতি মোহাম্মদ ওয়াক্কাসের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। তার পরিবার-পরিজন, গুণগ্রাহী ও শুভাকাক্সক্ষীদেরকে এই শোকে ধৈর্য ধারণের ক্ষমতা দেয়ার জন্য মহান আল্লাহর দরবারে মোনাজাত করছি। আমি মরহুমের শোকাহত পরিবারবর্গের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।”
মুফতি মুহাম্মদ ওয়াক্কাস যশোর-৫ (মণিরামপুর) আসন থেকে ১৯৮৬ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্রপ্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে নির্বাচিত হন। পরে জাতীয় পার্টিতে যোগ দিয়ে ১৯৮৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিয়ে পুনরায় নির্বাচিত হয়ে ধর্ম প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। তবে নানা কারণে মন্ত্রিত্বের পদে বেশিদিন থাকা হয়নি তার। এরপর তিনি এরশাদ সরকারের শেষদিন পর্যন্ত জাতীয় সংসদের হুইপের দায়িত্ব পালন করেন। এরশাদ সরকারের পতনের পর মুফতি ওয়াক্কাস আবার সক্রিয় হন জমিয়তের রাজনীতিতে। পরে ২০০১ সালের জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে তিনি এমপি নির্বাচিত হন। এছাড়া ১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০৮ ও ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বচনে বিএনপি জোটের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পরাজিত হন। মুফতি ওয়াক্কাস ২০২০ সালের শেষ দিকেও হেফাজতে ইসলামের নায়েবে আমির ও ঢাকা মহানগরের প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করেন। তবে কওমি মাদরাসাভিত্তিক এই সংগঠনটির সর্বশেষ সম্মেলনে প্রয়াত আমির শাহ আহমদ শফীর অনুসারীদের আমন্ত্রণ না জানিয়ে কমিটি গঠন করায় নেতৃত্বের দ্বন্দ্বে হেফাজত ছাড়েন তিনি। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে নিজের নির্বাচনি এলাকায় বেশ সুনাম অর্জন করেন তিনি।