পরীমনির রিমান্ড, বিচারকদের ফের ব্যাখ্যার নির্দেশ : হাইকোর্ট
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:২৮ পিএম, ২৯ সেপ্টেম্বর,
বুধবার,২০২১ | আপডেট: ০৩:৫২ এএম, ২৪ নভেম্বর,রবিবার,২০২৪
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় চিত্রনায়িকা পরীমনিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফা রিমান্ড মঞ্জুরের বিষয়ে দুই মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটকে আবারও ব্যাখ্যা দিতে বলেছেন হাইকোর্ট।
আজ বুধবার (২৯ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ারের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ দুই ম্যাজিস্ট্রেটকে পুনরায় ব্যাখ্যা দিতে বলেন এবং এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানির জন্য ২৪ অক্টোবর দিন ধার্য করেন।
এর আগে গত ২ সেপ্টেম্বর এক আদেশে পরীমনির দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফার রিমান্ড মঞ্জুর করার বিষয়ে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দেবব্রত বিশ্বাস ও আতিকুল ইসলামকে ১০ দিনের মধ্যে লিখিত ব্যাখ্যা দিতে বলেন হাইকোর্ট। এরপর দুই বিচারক হাইকোর্টে তাদের ব্যাখ্যা উপস্থাপন করেন। তবে তাদের ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট হননি হাইকোর্ট।
ব্যাখ্যার বিষয়ে ১৫ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট বলেন, ‘হাইকোর্টকে অবজ্ঞা করেছেন এই দুই বিচারক।’ ব্যাখ্যার বিষয়ে আদালত আরও বলেন, ‘ত্রুটি হয়েছে যে তা ম্যাজিস্ট্রেট বিশ্বাস করেন না। হাইকোর্টকে আন্ডারমাইন করা হয়েছে।’
পরে বিষয়টি নিয়ে ফের ব্যাখ্যা দেওয়ার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট এবং পরবর্তী আদেশের দিন ধার্য করেন ২৯ সেপ্টেম্বর। সে অনুযায়ী, আজ বিষয়টি নিয়ে হাইকোর্টে শুনানি শুরু হলে দুই বিচারকের পক্ষে আইনজীবী আবদুল আলীম মিয়া জুয়েল আদালতকে বলেন, ‘মাই লর্ড কি কারণে ওনারা (রিমান্ড) দিয়েছেন তা বলেছেন।’
এ সময় অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন আদালতকে বেঞ্চকে বলেন, ‘মাই লর্ড ওনারা ইয়াং অফিসার। ঠিকমতো হয়তো ব্যাখ্যাটা দিতে পারেনি। আর ওনারা ক্ষমাও চেয়েছেন।’ তখন আদালত বলেন, ‘আচ্ছা আবার তাহলে তারা ব্যাখ্যা দিক। আমরা পরবর্তী শুনানির জন্য ২৪ অক্টোবর দিন রাখছি।’
উল্লেখ্য, গত ২ সেপ্টেম্বর চিত্রনায়িকা পরীমনিকে দফায় দফায় রিমান্ড মঞ্জুরের ঘটনায় সংশ্লিষ্ট বিচারকদের কাছে ব্যাখ্যা চান হাইকোর্ট। পরিমনির মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে তলব করেন হাইকোর্ট। এ ছাড়া পরীমনির বিরুদ্ধে বনানী থানায় দায়ের করা মাদক মামলার সব নথি ও মামলার কেস ডকেটও তলব করা হয়।
বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ার কাজলের হাইকোর্ট বেঞ্চ ওইদিন এ আদেশ দেন। আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী জেড আই খান পান্না ও সৈয়দা নাসরিন।
গত ২৯ আগস্ট উচ্চ আদালতের রায় না মেনে মাদক মামলায় চিত্রনায়িকা পরীমনিকে বারবার নেওয়া রিমান্ড চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে আবেদন করা হয়। আবেদনে পরীমনিকে রিমান্ডে নেওয়ার ক্ষেত্রে উচ্চ আদালতের রায় না মানার অভিযোগ আনা হয়। আইন ও সালিশ কেন্দ্রের পক্ষে অ্যাডভোকেট সৈয়দা নাসরিন এ আবেদন দায়ের করেন।
গত ১৯ আগস্ট রাজধানীর বনানী থানায় দায়ের করা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় পরীমনির তৃতীয় দফা রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। সিআইডির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত পরীমনির একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এর আগে পরীমনিকে প্রথম দফায় চার দিন ও দ্বিতীয় দফায় দুদিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিআইডি।
গত ৪ আগস্ট পরীমনিকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তার বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করেন র্যাব-১-এর কর্মকর্তা মো. মজিবর রহমান। গত ২৬ আগস্ট হাইকোর্ট পরীমনিকে জামিন না দিয়ে তার আবেদন শুনানি প্রশ্নে রুল জারি করেন। রুলে রাজধানীর বনানী থানায় দায়ের করা মাদক মামলায় চিত্রনায়িকা পরীমনির জামিন আবেদন আদেশ পাওয়ার দুই দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়।
এ ছাড়া পরীমনির জামিন আবেদন শুনানির জন্য ১৩ সেপ্টেম্বর নির্ধারণ করে নিম্ন আদালতের আদেশ কেন বাতিল করা হবে না, তাও জানতে চাওয়া হয়। হাইকোর্টের আদেশের আলোকে গত ৩১ আগস্ট পরীমনিকে জামিন দেন বিচারিক আদালত।