চীনা টিকা প্রতি ডোজ ১০ ডলারে কিনবে সরকার
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:১৮ এএম, ২৮ মে,শুক্রবার,২০২১ | আপডেট: ১২:০৫ এএম, ১৮ সেপ্টেম্বর,
বুধবার,২০২৪
জনস্বাস্থ্য সংরক্ষণ ও করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে জরুরি বিবেচনায় চীনের তৈরি সিনোফার্মার কোভিড টিকার প্রতি ডোজ ১০ ডলারে কেনার প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। একই সঙ্গে আগস্টের মধ্যে দেড় কোটি ডোজ ভ্যাকসিন কিনবে সরকার। এতে ব্যয় হবে ১৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। বাংলাদেশি টাকায় এক হাজার ২৬৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা। প্রতি ডোজের দাম পড়বে ১০ মার্কিন ডলার।
আজ বৃহস্পতিবার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামালের সভাপতিত্বে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে টেবিলে উত্থাপিত এ-সংক্রান্ত একটি প্রস্তাবের অনুমোদন দেয়া হয়। সভায় কমিটির সদস্য, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সিনিয়র সচিব, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সভা শেষে অনুমোদিত ক্রয় প্রস্তাবগুলোর বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন অর্থমন্ত্রী ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. শাহিদা আক্তার।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. শাহিদা আক্তার সাংবাদিকদের জানান, স্বাস্থ্য বিভাগের একটি প্রস্তাব টেবিলে উত্থাপন করা হয়। প্রস্তাবটি হলো, জনস্বাস্থ্য সংরক্ষণ ও করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে ভ্যাকসিন কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে চীনা প্রতিষ্ঠান সিনোফার্ম থেকে সার্স কোভ-২ ভ্যাকসিন ভেলোসেল ক্রয়ের প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, আগামী জুন, জুলাই ও আগস্ট এই তিন মাসে পাঁচ মিলিয়ন করে ৫০ লাখ ডোজ টিকা সরবরাহ করবে চীনের সিনোফার্ম। তাহলে কি মোট ১৫ মিলিয়ন ভ্যাকসিন সরবরাহ করা হবে- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, চীনের সিনোফার্ম থেকে তিন মাসে মোট ১৫ মিলিয়ন বা এক কোটি ৫০ লাখ ডোজ সরবরাহ করা হবে। মোট ভ্যাকসিনের দাম দাঁড়াবে ১৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। বাংলাদেশি টাকায় এক হাজার ২৬৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা। প্রতি ডোজ ভ্যাকসিনের দাম পড়বে ১০ মার্কিন ডলার।
সভায় স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের অধীন সেন্ট্রাল মেডিকেল স্টোরস ডিপোর (সিএমএসডি) জন্য ৫৪ কোটি টাকায় নয়টি প্রতিষ্ঠান থেকে ছয় লাখ আরটি-পিসিআর টেস্ট কিট কেনার প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়। আমাদের দেশি কোনো প্রতিষ্ঠান আছে? জানতে চাইলে অতিরিক্ত সচিব বলেন, না আমাদের দেশি কোনো প্রতিষ্ঠান নেই। চীন সরকারের সাথে সিনোফার্ম কোম্পানির চুক্তির মাধ্যমে সরবরাহ করা হবে। জুন, জুলাই ও আগস্ট এই তিন মাসে এক কোটি ৫০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন সরবরাহ করা হবে। গত ১১ মে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা চীন থেকে চার থেকে পাঁচ কোটি ভ্যাকসিন সংগ্রহ করব। ইতিমধ্যে আমরা তাদের কাছে চাহিদাপত্র পাঠিয়েছি। এছাড়া গত ১২ মে চীন থেকে উপহার হিসেবে করোনাভাইরাসের পাঁচ লাখ ডোজ সিনোফার্মার ভ্যাকসিন বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এছাড়া, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের অধীনে স্বাস্থ্য অধিদফতরের ‘কোভিড-১৯ ইমার্জেন্সি রেসপন্স অ্যান্ড প্যানডেমিক প্রিপেয়ার্ডনেস’ প্রকল্পের আওতায় এক হাজার ১৫৪ জন জনবল নিয়োগ এবং ১৩৩ কোটি ৭৫ লাখ ৪২ হাজার ৪১৬ টাকায় জাতিসংঘের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান ইউএনএফপিএ-এর কাছ থেকে ৪৮টি যানবাহন (আউটসোর্সিং) কেনার প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এদিন স্থানীয় সরকার বিভাগের দুটি, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের দুটি, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের একটি, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের একটি, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের একটি, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের একটি এবং বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের একটি প্রস্তাবনা উত্থাপন করা হয়। আটটি প্রস্তাবে মোট অর্থের পরিমাণ দুই হাজার ৫০০ কোটি ৭৮ লাখ ৩৬ হাজার ৭৫০ টাকা। মোট অর্থায়নের মধ্যে সরকার (জিওবি) দেবে দুই হাজার ১১ কোটি ৫১ লাখ ৯৬ হাজার ৩৯৩ টাকা এবং বিশ্বব্যাংক, এডিবি, এএফডি ও ইআইবির ঋণ ৪৮৯ কোটি ২৬ লাখ ৪০ হাজার ৩৫৭ টাকা।