কিছুটা সংস্কার না করেই নির্বাচনে গেলে তা ছাত্র-জনতার সঙ্গে অন্যায় হবে: উপদেষ্টা সাখাওয়াত
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ০৮:২৪ পিএম, ২৮ ডিসেম্বর,শনিবার,২০২৪ | আপডেট: ০৯:৩৩ এএম, ২৯ ডিসেম্বর,রবিবার,২০২৪
অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে প্রায় দুই হাজার মানুষ শহীদ হয়েছেন। তিনি বলেন, 'কিছুটা সংস্কার না করেই যদি নির্বাচনে যাই, তবে তা ছাত্র-জনতার সাথে অন্যায় হবে।'
শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে জাতীয় সংলাপে বক্তব্যে এ কথা বলেন নৌপরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা।
তিনি জানান, আন্দোলনে আহতদের মধ্যে প্রায় দুই হাজারের বেশি মানুষ এখনো হাসপাতালে ভর্তি আছেন। তাদের মধ্যে ৩৭ জনের অবস্থা গুরুতর।
'পৃথিবীর ইতিহাসে এমন অভ্যুত্থান হয়েছে কি না আমার জানা নেই,' বলেন তিনি।
২০০৭ সালের সংস্কারের প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, 'তখন আমরা অনেকগুলো পদক্ষেপ নিয়েছিলাম, কিন্তু পরবর্তীসময়ে রাজনৈতিক সরকার এসে সেগুলো বাস্তবায়ন করেনি।'
বর্তমান বাংলাদেশকে 'সেকেন্ড রিপাবলিক অব বাংলাদেশ' হিসেবে অভিহিত করবেন মন্তব্য করে এ উপদেষ্টা বলেন, 'এখন সংস্কার না করলে তা আর কখনো হবে না।'
'এ জন্য [সংস্কারের জন্য] ন্যূনতম সময় দিতে হবে এবং সবাইকে ধৈর্য ধরতে হবে। আমরা একটি কঠিন পরিস্থিতিতে রয়েছি। নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন সরকার গঠন হলেই যে সমস্যার সমাধান হবে, তা নয়।'
তিনি দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে বলেন, 'এরপর আর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রয়োজন হবে না। পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য আইন করা প্রয়োজন।'
আগামীতে ক্ষমতায় যাওয়ার আগে অনেকেই নির্বাচনের জন্য চাঁদাবাজি করছেন মন্তব্য করে তিনি বলেন, 'একটি রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে সময়ে সময়ে দু-একজনকে বহিষ্কার করতে দেখা যাচ্ছে।'
'ঐ দলের নেতাকর্মীরা চাঁদাবাজি করতে গিয়ে দাবি করছেন, গত ১৫ বছরে তারা ক্ষমতায় ছিলেন না, আর নির্বাচনে অংশ নিতে তাদের টাকার প্রয়োজন।'
নির্বাচনি প্রক্রিয়ায় পরিবর্তনের গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, 'মনোনয়ন বাণিজ্য বন্ধ করতে হবে। একজন প্রার্থীকে নির্বাচনের আগে দলের ন্যূনতম সদস্য হতে হবে এবং অন্তত তিন বছর দলের পর্যবেক্ষণে থাকতে হবে।'
তিনি আরও বলেন, 'রাজনৈতিক দলগুলোকে তাদের আর্থিক প্রতিবেদন ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার ভারসাম্য আনতে হবে। নির্বাচন আইনেও বড় ধরনের সংস্কার দরকার।'
তরুণ প্রজন্মের রাজনীতিতে অংশগ্রহণের বিষয়ে তিনি বলেন, 'তরুণেরা রাজনীতি করার অধিকার রাখেন। তাদের মাধ্যমে নতুন রাজনৈতিক দল গঠন হলে তা ইতিবাচক হবে। আমাদের বড় রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত তরুণদের রাজনীতিতে আগ্রহী করা।'
সাখাওয়াত হোসেন আরও বলেন, 'আমাদের দেশের বড় সমস্যাগুলোর মধ্যে এক্সটার্নাল [বাহ্যিক] চ্যালেঞ্জ অন্যতম। নতুন সরকার এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করবে, তবে তা সহজ হবে না। আমরা দেশের স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে চাই।'