থামছে না পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু, ৯ বছরে বিচার হয়েছে একটি
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:৩৫ পিএম, ১৭ অক্টোবর,সোমবার,২০২২ | আপডেট: ১২:১০ এএম, ২৩ নভেম্বর,শনিবার,২০২৪
২০১৪ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি রাতে রাজধানীর মিরপুরে একটি বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে দুই ভাই ইশতিয়াক হোসেন জনি এবং ইমতিয়াজ হোসেন রকিকে আটক করে পুলিশ। পরে পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু হয় বড় ভাই জনির। ভাইয়ের মৃত্যুর ঘটনায় মামলা করেন ইমতিয়াজ হোসেন রকি। ২০১৫ সালে মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। ২০১৬ সালে বিচার শুরু হয়ে রায় হয় ছয় বছর পর ২০২০ সালের ৯ সেপ্টেম্বর। রায়ে মামলার পাঁচ আসামির মধ্যে তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডসহ এক লাখ টাকা করে জরিমানা ও দুই লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেয়ার নির্দেশ দেন আদালত।
রায়ে বলা হয়, জরিমানা ও ক্ষতিপূরণের অর্থ দিতে ব্যর্থ হলে আরও ছয় মাস করে কারাদন্ড ভোগ করতে হবে। এছাড়া দুই আসামিকে সাত বছরের কারাদন্ড দেন আদালত। ২০১৩ সালে নির্যাতন এবং হেফাজতে মৃত্যু নিবারণ আইন প্রণয়নের ৯ বছর পর এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে এই আইনে এটিই প্রথম কোনো মামলার রায়। আইন করলেই হবে না। পুলিশি নির্যাতন কমবে না যতদিন পর্যন্ত পুলিশের সংস্কৃতি পরিবর্তন না হবে। উন্নত বিশ্বে পুলিশ যেখানে জনগণের বন্ধু, সহযোগী, আমাদের দেশে সেখানে পুলিশ একটি দাম্ভিক শক্তি, ঔপনিবেশিক ব্যবস্থা, ভয় দেখানোর একটি হাতিয়ার। এ কারণে আইন করে লাভ নেই। যদি প্রয়োগ না করি, জবাবদিহির জায়গাটা নিন্ডিত না করি। তবে কাজ যে হচ্ছে না তাও নয়। দরকার বিশ্বাসের জায়গাটা তৈরি করা, নয়তো পুলিশের সংস্কৃতিটা থেকে যাবে।
জানা গেছে, নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু নিবারণ আইনে এখন পর্যন্ত পুলিশের বিরুদ্ধে মামলার প্রকৃত তথ্য জানা না গেলেও ৩০টির মতো মামলা হয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। গ্রেফতারের পর শারীরিক নির্যাতন করে স্বীকারোক্তি আদায় কিংবা হেফাজতে মৃত্যুর অভিযোগ নতুন নয়। আইন হলেও থামছে না নির্যাতন। পুলিশের মধ্যে বিদ্যমান এই সংস্কৃতির পরিবর্তন না হওয়া এবং আইনের প্রয়োগ না থাকায় নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু কমছে না বলে মনে করেন অনেকে। এছাড়া এসব ঘটনায় বিচার না হওয়ায় অধিকাংশ পরিবার অভিযোগ করারও সাহস পায় না। আবার পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ হলে তদন্তের দায়িত্ব ভিন্ন কোনো সংস্থাকে দেওয়া উচিত বলেও মনে করেন অনেকে। পুলিশ হেফাজতে নির্যাতন নিয়ে গণমাধ্যমেও বিভিন্ন সময় সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। হেফাজতে নির্যাতনে আসামি যেমন সহজে তথ্য দিয়ে থাকে তেমনি অতিরিক্ত নির্যাতনের ফলে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটছে।
অথচ সংবিধানের ৩৫ (৫) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘কোনো ব্যক্তিকে যন্ত্রণা দেওয়া যাইবে না কিংবা নিষ্ঠুর, অমানুষিক বা লাঞ্ছনাকর দন্ড দেওয়া যাইবে না কিংবা কাহারও সহিত অনুরূপ ব্যবহার করা যাইবে না। এছাড়া জাতিসংঘের নির্যাতনবিরোধী সনদে স্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশে পুলিশ হেফাজতে নির্যাতন প্রতিরোধে ২০১৩ সালে একটি আইন করা হয়। নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইন ২০১৩ এর ধারা-১৩ (১) অনুযায়ী, কেউ হেফাজতে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হলে আদালতে অভিযোগ করতে পারেন। আদালতে নির্যাতন প্রমাণিত হলে ধারা-১৫ (১) অনুযায়ী শাস্তি হিসেবে ন্যূনতম পাঁচ বছরের কারাদন্ড অথবা ৫০ হাজার টাকা অর্থদন্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবেন এবং অতিরিক্ত ২৫ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দেবেন। এছাড়া নির্যাতনের ফলে মৃত্যু হলে যাবজ্জীবন কারাদন্ড অথবা অন্যূন এক লাখ টাকা অর্থদন্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হতে পারেন এবং অতিরিক্ত দুই লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেবেন।
হেফাজতে মৃত্যুর বিভিন্ন সংস্থা যে তথ্য দেয় সেটা পুরোপুরি সত্য নয়। যখন একজন লোক গ্রেফতার হন বা জেলে কেন, তখন মানসিকভাবে একটু দুর্বল হয়ে পড়েন। এতে অনেকে আত্মহত্যা করেন। আবার অনেকে হৃদরোগ কিংবা অন্য কোনো রোগ থাকলে মারা যান। পুলিশের নির্যাতনে যদি মারা যায় সেটা হলে খুবই উদ্বেগজনক। এ ধরনের ঘটনা হলে তা থেকে রেহাই পাওয়ার সুযোগ নেই। তার বিরুদ্ধে মামলা হবে, তদন্ত হবে এবং বিচার হবে। হেফাজতে মৃত্যু হলে পুলিশ কখনো তার পক্ষে অবস্থান নেয় না। সংবিধানে বিধিনিষেধ জাতিসংঘের সনদ স্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে এবং নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইন থাকা সত্ত্বেও হেফাজতে মৃত্যু কমছে না। চলতি বছরের জানুয়ারিতে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় থানা হেফাজতে হিমাংশু রায়ের মৃত্যু, আগস্ট মাসে ঢাকার হাতিরঝিল থানা হেফাজতে যুবক সুমন শেখের মৃত্যু, ২০২০ সালের অক্টোবরে সিলেটের বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে রায়হান আহমদের মৃত্যু, ২০১৮ সালের মার্চ মাসে রমনা থানায় নিহত জাকির হোসেন হত্যাসহ গত কয়েক বছরে একাধিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। আইন ও সালিশ কেন্দ্রের তথ্যমতে, ২০১৮ থেকে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কারা হেফাজতে ৩৪২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ১৯৬ জনের মামলা বিচারাধীন। ১৪৬ জনের বিচার সম্পন্ন হয়েছিল। কারা হেফাজতে দেশে ২০১৮ সালে ৭৪ জন, ২০১৯ সালে ৫৮, ২০২০ সালে ৭৫, ২০২১ সালে ৮১ ও ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৫৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। চলতি বছর কারা হেফাজতে মারা যাওয়া ঘটনার মধ্যে ৩৪ জনের মামলা বিচারাধীন, আর ২০ জন ছিল অভিযুক্ত। এছাড়া মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা অন্য এক সংগঠন মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের (এমএসএফ) প্রতিবেদনে দেখা গেছে, চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে কারা হেফাজতে ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে ছয়জন কয়েদি ও আটজন হাজতি। পুলিশ হেফাজতে মৃত্যুর খবর মাঝে মধ্যেই প্রকাশ্যে আসে। অপরাধের মাত্রা বৃদ্ধি, রাজনৈতিক অস্থিরতা ও নির্বাচনের প্রাক্কালে দেশে মামলার সংখ্যা এবং গ্রেফতার বেড়ে যায়। এর পাশাপাশি বাড়ে নির্যাতনও। তবে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সেটা যেমন স্বীকার করে না, তেমনি নির্যাতনের শিকার ব্যক্তির পরিবারও মামলা করা নিয়ে অনেকটা ভীতির মধ্যে থাকে। ফলে অনেক নির্যাতনের খবর সামনে আসে না।
এ বিষয়ে আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) নির্বাহী পরিচালক নূর খান লিটন বলেন, পুলিশি হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনা প্রায় সময়ই ঘটছে। নির্বাচনের প্রাক্কালে যখন রাজনীতিতে অনেক অস্থিরতা দেখা দেয়, তখন আমরা দেখি মামলার সংখ্যা ও গ্রেফতার বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি নির্যাতনের বিষয়টিও সামনে আসে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সবসময়ই বলে এ ধরনের ঘটনা ঘটছে না। অথচ এসব ঘটনা ঘটছে। এসব কমিয়ে আনার জন্য যদি বিচার হতো তাহলে একটি শক্ত বার্তা পুলিশ পেত। দেশে বিচারহীনতার যে সংস্কৃতি বহমান সেটার পুরোপুরি সুফল আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পাচ্ছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে নির্যাতনের বিষয়টি প্রকাশ না পেলেও প্রতিনিয়তই এসব ঘটনা ঘটছে। হেফাজতে নির্যাতনের শিকার পরিবারগুলো ভয়ভীতিসহ নানা কারণে মামলা করতে চায় না জানিয়ে তিনি বলেন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে মামলা করা নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে এক ধরনের ভীতি কাজ করে। মামলা দায়ের করা হলে সেটাকে নষ্ট করে দেওয়ার জন্য নানা মহল থেকে চাপ প্রয়োগ করা হয়। ফলে মামলা দায়ের করে ভিকটিমের পরিবারকে টিকে থাকার সুযোগ ক্রমান্বয়ে সীমিত হয়ে আসছে। হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনা তথ্য অনুসন্ধানের পূর্ব একটি কাজ। তাই প্রতিটি ঘটনাই নির্যাতনে মৃত্যু কি না সেটি হয়তো স্পষ্টভাবে বলা যাবে না, তবে হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে সেটি স্পষ্ট। তবে নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যুর সংখ্যা সংস্থাগুলোর প্রকাশিত তালিকার চেয়ে অনেক কম এবং এ ধরনের নির্যাতন অনেকটাই কমে এসেছে বলে দাবি করেছেন সাবেক আইজিপি এ. কে. এম. শহীদুল হক। পুলিশের সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তাদের অনেকের মতে, কারাগারে বা পুলিশ হেফাজতে অনেকে মানসিক চাপ কিংবা অসুস্থ থাকার ফলেও মারা যান। এ. কে. এম. শহীদুল হক বলেন, হেফাজতে মৃত্যুর বিভিন্ন সংস্থা যে তথ্য দেয় সেটা পুরোপুরি সত্য নয়। যখন একজন লোক গ্রেফতার হন বা জেলে থাকেন, তখন মানসিকভাবে একটু দুর্বল হয়ে পড়েন। এতে অনেকে আত্মহত্যা করেন। আবার অনেকে হৃদরোগ কিংবা অন্য কোনো রোগ থাকলে মারা যান। পুলিশের নির্যাতনে যদি মারা যায় সেটা হলে খুবই উদ্বেগজনক। এ ধরনের ঘটনা হলে তা থেকে রেহাই পাওয়ার সুযোগ নেই। তার বিরুদ্ধে মামলা হবে, তদন্ত হবে এবং বিচার হবে। হেফাজতে মৃত্যু হলে পুলিশ কখনো তার পক্ষে অবস্থান নেয় না।
তিনি বলেন, হাজতের দায়িত্বে যারা থাকেন তাদের সবসময় কয়েদিদের খেয়াল রাখার কথা বলা হয়, কয়েদিদের খাবার, চিকিৎসার বিষয়ে খেয়াল রাখতে বলা হয়। তারপরও যদি কোনো ঘটনা ঘটে তখন দায়িত্বরত সবাই দায়ী হন। এজন্য তারাও অনেক সময় ভয়ে থাকেন যেন হেফাজতে কোনো দুর্ঘটনা না ঘটে।
এরপরও সতর্কতা বাড়াতে হবে, অভিযুক্তকে প্রয়োজনে হাসপাতালে চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করতে হবে। কেউ যদি মানসিকভাবে দুর্বল হয় তাকে মানসিক সহযোগিতা দিতে হবে। অভিযুক্তকে ভরসা দিতে হবে যে তিনি আইনি সহায়তা পাবেন। অসুস্থ কয়েদিদের সুচিকিৎসা নিন্ডিতের বিষয়টি ডাক্তারদের গুরুত্ব সহকারে দেখা উচিত। যদি সেটা না দেখেন তাহলেই সমস্যা। একজন আসামির চিকিৎসা পাওয়ার মানবিক অধিকার আছে। আবার অনেকে অসুস্থতার ভানও করেন। এটা পুলিশকে যেমন দেখতে হবে, ডাক্তারকেও দেখতে হবে। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সঠিক চিকিৎসা দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। কারও পক্ষেই অবহেলা করা উচিত নয়। যোগ করেন সাবেক এই আইজিপি। বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্টের (ব্লাস্ট) অবৈতনিক নির্বাহী পরিচালক ব্যারিস্টার সারা হোসেন বলেন, হেফাজতে নির্যাতন হয় কিংবা হয়েছে বলেই ২০১৩ সালে আইনটি করা হয়েছে। এ আইনের অধীনে গত ৯ বছরে মাত্র একটি রায় হয়েছে। অথচ আর কোনো আইন পাবো না এই সময়ে যে, তার অধীনে শুধু একটা মাত্র রায় হয়েছে। এই আইনের অধীনে কতগুলো মামলা হয়েছে এবং সেই মামলার কী অবস্থা তার ওপর একটি পর্যালোচনার প্রয়োজন রয়েছে। এ ধরনের মামলা যারা করতে যাবেন তাদের নিজেদের সুরক্ষা বা নিরাপত্তার কথা চিন্তা করতে হয়। যখন অনিরাপদ বোধ করেন তখন তারা আর প্রতিকার চাইতে যান না। যাদের নিরাপত্তা দেওয়ার কথা তাদের বিরুদ্ধে যদি অভিযোগ ওঠে, তখন অভিযোগকারীর মনে নানা ধরনের সংশয় দেখা দেয়, বিচার চাইতে গিয়ে নিরাপদ থাকবেন কি না। তাই ভিকটিমের সুরক্ষারও প্রয়োজন এখানে। হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগুলো এখনো হচ্ছে। কিন্তু সেই অনুযায়ী মামলা হচ্ছে না। পুলিশি নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যুর বিষয়ে অপরাধ বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যায়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. জিয়া রহমান বলেন, আইন করলেই হবে না। পুলিশি নির্যাতন কমবে না যতদিন পর্যন্ত পুলিশের সংস্কৃতি পরিবর্তন না হবে। উন্নত বিশ্বে পুলিশ যেখানে জনগণের বন্ধু, সহযোগী, আমাদের দেশে সেখানে পুলিশ একটি দাম্ভিক শক্তি, ঔপনিবেশিক ব্যবস্থা, ভয় দেখানোর একটি হাতিয়ার। এ কারণে আইন করে লাভ নেই। যদি প্রয়োগ না করি, জবাবদিহির জায়গাটা নিন্ডিত না করি। তবে কাজ যে হচ্ছে না তাও নয়। দরকার বিশ্বাসের জায়গাটা তৈরি করা, নয়তো পুলিশের সংস্কৃতিটা থেকে যাবে। জবাবদিহি নিন্ডিত না করা হলে হেফাজতে মৃত্যু কমবে না। পুলিশিং ব্যবস্থা ঢেলে সাজানো উচিত।