জাতিসংঘ অধিবেশনে যোগ দিতে ঢাকা ত্যাগ করলেন প্রধানমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:১৫ এএম, ১৮ সেপ্টেম্বর,শনিবার,২০২১ | আপডেট: ০৫:৪১ এএম, ১৮ সেপ্টেম্বর,
বুধবার,২০২৪
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) ৭৬তম অধিবেশনে যোগ দিতে হেলসিঙ্কি হয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের উদ্দেশে আজ শুক্রবার সকালে ঢাকা ত্যাগ করেছেন।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম বাসসকে বলেন, ‘বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ভিভিআইপি চার্টার্ড ফ্লাইট গতকাল সকাল ৯টা ২৩ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের নিয়ে হেলসিঙ্কির উদ্দেশে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ছেড়ে যায়।’
২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রীর ইতালি সফরের দেড় বছর পর এটি তার প্রথম বিদেশ সফর।
প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশন এবং সেখানে বেশ কয়েকটি উচ্চ পর্যায়ের অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার জন্য সরকারি সফরের অংশ হিসেবে ১৯ থেকে ২৩ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে অবস্থান করবেন।
নিউইয়র্কে যাওয়ার পথে শেখ হাসিনা হেলসিঙ্কিতে দুই দিনের যাত্রাবিরতি করবেন।
শেখ হাসিনা ১৯ সেপ্টেম্বর স্থানীয় সময় বিকেল ৪টায় (হেলসিঙ্কি সময়) হেলসিঙ্কি থেকে নিউইয়র্কের উদ্দেশে রওনা হবেন এবং একইদিন স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টায় যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের জন এফ কেনেডি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছানোর কথা রয়েছে।
নিউইয়র্কে অবস্থানকালে শেখ হাসিনা ২৪ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সদর দপ্তরে সাধারণ পরিষদের ৭৬তম অধিবেশনে ভাষণ দেবেন।
১৯৭৪ সালে জাতিসংঘে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ভাষণের অনুসরণ করে প্রধানমন্ত্রী বিগত বছরগুলোর মতো এবারও বাংলায় তার ভাষণ দেবেন।
আগামী ২০ সেপ্টেম্বর যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন এবং জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের আহ্বানে জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানদের একটি ছোট দলের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে যোগ দেবেন শেখ হাসিনা।
পরে তিনি একটি গাছের চারা রোপণ করবেন এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে তার সম্মানে জাতিসংঘ সদর দপ্তরের উত্তর লনে ইউএন গার্ডেনে একটি বেঞ্চ উৎসর্গ করবেন।
বিকেলে প্রধানমন্ত্রী ‘সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট সলিউশন নেটওয়ার্ক’ শীর্ষক একটি ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন।
২১ সেপ্টেম্বর শেখ হাসিনা জাতিসংঘ সদর দপ্তরে সাধারণ বিতর্কের উদ্বোধনী অধিবেশনে যোগ দেবেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত কর্তৃক আয়োজিত ‘বিজনেস গোলটেবিল : ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিল’ অনুষ্ঠানেও যোগ দেবেন।
২২ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী ডারবান ডিক্লারেশন অ্যান্ড প্রোগ্রাম অব অ্যাকশন গ্রহণের ২০তম বার্ষিকী উপলক্ষে সাধারণ পরিষদের একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে যোগ দেবেন।
এ ছাড়া, তিনি ‘হোয়াইট হাউস বৈশ্বিক কোভিড-১৯ শীর্ষ সম্মেলন : মহামারির সমাপ্তি এবং আরও ভালো অবস্থা গড়ে তোলা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে যোগদান করবেন এবং বক্তৃতা দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
সেদিন বিকেলে শেখ হাসিনা ‘রোহিঙ্গা সংকট : একটি টেকসই সমাধানের জন্য করণীয়’ শীর্ষক একটি উচ্চ পর্যায়ের অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন এবং সেখানে পূর্বে-রেকর্ড করা বক্তৃতা দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
২৩ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘের সুইডিশ মিশন আয়োজিত ‘জাতিসংঘের সাধারণ কর্মসূচি : সমতা ও অন্তর্ভুক্তি অর্জনের পদক্ষেপ’ শীর্ষক নেতাদের নেটওয়ার্কের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন।
তিনি জাতিসংঘ সদর দপ্তরে জাতিসংঘ মহাসচিব কর্তৃক আহ্বানে ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে দশক কর্মসূচির অংশ হিসাবে খাদ্যব্যবস্থা শীর্ষক সম্মেলনে যোগ দেবেন।
নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনের সাইডলাইনে শেখ হাসিনা বেশ কয়েকজন বিশ্বনেতার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন।
তাদের মধ্যে আছেন ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী মেট ফ্রেডেরিকসেন, বার্বাডোসের প্রধানমন্ত্রী মিজ মিয়া আমোর মোটলি কিউসি, নেদারল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুট, নেদারল্যান্ডের রানী ম্যাক্সিমা, মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহাম্মদ সালিহ এবং ভিয়েতনামের প্রেসিডেন্ট এনগুয়েন জুয়ান ফাইক।
এছাড়া তিনি জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এবং ইইউ কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট চার্লস মিশেলের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা করবেন।
জাতিসংঘ অধিবেশন এবং নিউইয়র্কে অন্যান্য অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের পর প্রধানমন্ত্রীর ২৫-৩০ সেপ্টেম্বর ওয়াশিংটন ডিসি সফরের কথা আছে।
যুক্তরাষ্ট্র সফর শেষে শেখ হাসিনা ৩০ সেপ্টেম্বর ওয়াশিংটন থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হবেন এবং হেলসিঙ্কিতে যাত্রাবিরতির পর ১ অক্টোবর দেশে ফিরবেন।