টি-টোয়েন্টির পর ওয়ানডে সিরিজও হাতছাড়া বাংলাদেশের
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:১৫ পিএম, ৮ আগস্ট,সোমবার,২০২২ | আপডেট: ০১:৪০ পিএম, ১৯ নভেম্বর,মঙ্গলবার,২০২৪
জিম্বাবুয়ে সফরে বাংলাদেশ ক্রিকেট টিম যেন নিজেদের হারিয়ে খুঁজছে। প্রথমে তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজে ২-১ ব্যবধানে হার। এবার নিজেদের প্রিয় ফরমেট ওয়ানডে সিরিজও হাতছাড়া হয়েছে। এক ম্যাচ হাতে রেখেই ২-০তে ওয়ানডে সিরিজ নিশ্চিত করল স্বাগতিক জিম্বাবুয়ে।
গতকাল রবিবার (০৭ আগস্ট) সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচেও সিকান্দার রাজার ব্যাক টু ব্যাক সেঞ্চুরি আর অধিনায়ক রেজিস চাকাভার সেঞ্চুরিময় ইনিংসের সুবাদে ১৫ বল হাতে রেখেই ৫ উইকেটের জয় সিরিজ নিশ্চিত করে জিম্বাবুয়ে।
বাংলাদেশের বিপক্ষে ২৯১ রানের টার্গেট তাড়ায় ব্যাটিংয়ে নেমেই বিপাকে পড়ে যায় জিম্বাবুয়ে। ইনিংসের তৃতীয় বলেই উইকেটের দেখা পান হাসান মাহমুদ। তার বলে উইকেটকিপার মুশফিকুর রহিমের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন জিম্বাবুয়ের ওপেনার তাকুদজোয়ানাশে কাইতানো (০)।
এরপর ইনিংসের তৃতীয় ওভারে বোলিংয়ে এসে ফের উইকেট শিকার করেন হাসান মাহমুদ। এবার তার শিকার হয়ে ফেরেন তিন নম্বর পজিশনে ব্যাটিংয়ে নামা ইনসেন্ট কায়া। আগের ম্যাচে (১১০) সেঞ্চুরি করা কায়াকে এদিন ৭ রানে ফেরান হাসান।
হাসান মাহমুদের পর জিম্বাবুয়ে শিবিরে আঘাত হানেন অফ স্পিনার মেহেদি হাসান মিরাজ। তার বলে এলবিডব্লিউ হয়ে সাজঘরে ফেরেন ওয়েসলি মাধেভেরে। তার বিদায়ে ৮ ওভারে ২৮ রানে ৩ উইকেট হারায় স্বাগতিকরা।
ইনিংসের শুরু থেকে বাড়তি দায়িত্ব নিয়ে ব্যাটিং করে যাওয়া ওপেনার মারুমানিকে ফেরান তাইজুল। বোলিংয়ে এসেই জিম্বাবুয়ে শিবিরে আঘাত হানলেন তিনি। তার স্পিনে বিভ্রান্ত হয়ে সাজঘরে ওপেনার টাডিনাশে মারুমানি। ফেরার আগে ৪২ বলে তিনটি চারের সাহায্যে ২৫ রান করেন তিনি। তার বিদায়ে ১৫ ওভারে ৪৯ রানে ৪ উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে।
এরপর অধিনায়ক রেজিস চাকাভাকে সাথে নিয়ে বাংলাদেশের বিপক্ষে পঞ্চম উইকেটে ১৬৯ বলে ২০১ রানের রেকর্ড জুটি গড়েন সিকান্দার রাজা। এই জুটিতেই দু’জনে জোড়া সেঞ্চুরি গড়ার পাশাপাশি দলকে জয়ের কাছাকাছি নিয়ে যান।
দলের জয়ে শেষ দিকে ৪২ বলে জিম্বাবুয়ের প্রয়োজন ছিল ৪১ রান। খেলার এমন অবস্থায় মেহেদি হাসান মিরাজের বলে আউট হন চাকাভা। বাংলাদেশের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ এবং প্রথম ওয়ানডেতে যথাক্রমে ৮, ০, ১৭ ও ২ রানে আউট হওয়া চাকাভা রোববার স্বমহিমায় জ্বলে উঠেন। এদিন মাত্র ৭৫ বলে ১০টি চার আর দুটি ছক্কায় ১০২ রানের ঝড়ো সেঞ্চুরি করেন চাকাভা।
৪৩.১ ওভারে দলীয় ২৫০ রানে চাকাভা আউট হওয়ার পর সাত নম্বর পজিশনে ব্যাটিংয়ে নামা টনি টনি মুনায়ঙ্গাকে সঙ্গে নিয়ে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন সিকান্দার রাজা। প্রথম ওয়ানডেতে দলের জয়ে ১০৯ বলে ১৩৫ রানের লড়াকু ইনিংস খেলা রাজা এদিন ১২৭ বলে ৮টি চার আর ৪টি ছক্কায় অপরাজিত ১১৭ রান করেন।
সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে ২ উইকেটে ৩০৩ রান করেও ৫ উইকেটে হারে বাংলাদেশ। সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ (৮০*) ও তামিম ইকবালের (৫০) ফিফটিতে ভর করে ৯ উইকেটে ২৯০ রান করে বাংলাদেশ।
আগে ব্যাট করতে নেমে উড়ন্ত সূচনা করেন দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও এনামুল হক বিজয়। দলীয় ১১ ওভারে ৭১ রানে সাজঘরে ফেরেন অধিনায়ক তামিম ইকবাল। তিনি ৪৫ বলে ১০ চার আর এক ছক্কায় ৫০ রান করে ফেরেন। তামিম আউট হওয়ার মাত্র ৬ রানের ব্যবধানে রান আউট হয়ে ফেরেন আগের ম্যাচে ৭৩ রান করা ওপেনার এনামুল হক বিজয়। এদিন তিনি ফেরেন ২৫ বলে ২০ রান করে।
তৃতীয় উইকেটে নাজমুল হোসেন শান্তর সঙ্গে ৬৪ বলে ৫০ রানের জুটি গড়ে আউট হন সাবেক অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। তিনি ফেরেন ৩১ বলে ২৫ রানে। ২৯.৩ ওভারে দলীয় ১৪৮ রানে আউট হন নাজমুল হোসেন শান্ত। ক্যারিয়ারের ১২তম ওয়ানডেতে ৫৫ বল খেলে ক্যারিয়ার সেরা ৩৮ রান করে ফেরেন শান্ত।
এরপর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের সঙ্গে পঞ্চম উইকেটে ৮২ বলে ৮১ রানের জুটি গড়ে আউট হন আফিফ হোসেন। তিনি সাজঘরে ফেরার আগে ৪১ বলে চারটি বাউন্ডারির সাহায্যে ৪১ রান করেন। আফিফ আউট হওয়ার পর ব্যাটিংয়ে নেমে সুবিধা করতে পারেননি স্পিন অলরাউন্ডার মেহেদি হাসান মিরাজ। তিনিও সেই সিকান্দার রাজার স্পিনে বিভ্রান্ত হন। সাজঘরে ফেরার আগে ১২ বলে ১৫ রান করার সুযোগ পান মিরাজ। আট নম্বর পজিশনে ব্যাটিংয়ে নেমে মাত্র ২ বলে ১ রান করে আউট হন পেসার তাসকিন আহমেদ। ৪ বলে ৬ রান করে আউট হন তাইজুল ইসলাম।
ইনিংসের শেষ বল পর্যন্ত খেলে ৮৩ বলে ৩টি চার আর ৩টি ছক্কায় দলীয় সর্বোচ্চ ৮০ রান করে অপরাজিত থাকেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তামিম-রিয়াদের ফিফটিতে ভর করে ৯ উইকেটে ২৯০ রান তুলতে সক্ষম হয় বাংলাদেশ। জিম্বাবুয়ের হয়ে ৫৬ রানে ৩ উইকেট নেন আগের ম্যাচে ১৩৫* রানের ইনিংস খেলা সিকান্দার রাজা।