মেসির হতাশার রাতে এমবাপ্পের জোড়া গোল
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ০৫:৩৩ পিএম, ১৩ ডিসেম্বর,সোমবার,২০২১ | আপডেট: ০৯:২৯ পিএম, ২২ নভেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
লিওনেল মেসি দুবার গোলের খুব কাছে গিয়েছিলেন। দ্বিতীয়ার্ধে একবার তাঁর শট পোস্ট ঘেঁষে চলে যায়, আরেকবার দূরূহ কোণ থেকে তাঁর চিপ গোলকিপারকে ফাঁকি দিতে পারলেও জালে ঢোকেনি। গোল না করার হতাশা থাকলেও আর্জেন্টিনা অধিনায়ক একটি গোল অবশ্য গড়ে দিয়েছেন। তাঁর পাস থেকেই এসেছে কিলিয়ান এমবাপ্পের দ্বিতীয় গোল।
সব মিলিয়ে কাল নিজেদের মাঠে মোনাকোর বিপক্ষে ম্যাচটি পিএসজির জার্সিতে মেসির একেবারে ‘মেসিসুলভ’ কাটেনি। নেইমারও চোটে মাঠের বাইরে। তবে এরপরও পিএসজির জয় পেতে ঝামেলা হয়নি। কিলিয়ান এমবাপ্পে আছেন না! ফরাসি তরুণের জোড়া গোলে এমবাপ্পেরই সাবেক ক্লাব মোনাকোকে কাল ২-০ ব্যবধানে হারিয়েছে পিএসজি।
এই দুই গোলে এমবাপ্পের একটা রেকর্ডও হলো। পিএসজির জার্সিতে এ নিয়ে ১০০ গোল হয়ে গেল ফরাসি স্ট্রাইকারের। মাইলফলকটাই এমবাপ্পে পেরিয়েছেন রেকর্ড গড়ে।
ফুটবলের পরিসংখ্যান নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠান অপটা জানাচ্ছে, ১৯৫০/৫১ সালের পর থেকে এ সম্পর্কিত রেকর্ড তাদের কাছে আছে, আর সে রেকর্ডের পাতাগুলো বলছে, শীর্ষ পর্যায়ের ফুটবলে এমবাপ্পের চেয়ে কম বয়সে এক ক্লাবের হয়ে ১০০ গোল আর কেউ করতে পারেননি। কাল এমবাপ্পের বয়স ছিল ২২ বছর ২৫৭ দিন।
২০১৭ সালে মোনাকো থেকে পিএসজিতে যাওয়ার পর থেকে কেন যেন মোনাকোর বিপক্ষেই সব সময়ই জ্বলে ওঠেন এমবাপ্পে। তার প্রমাণ, কালকের দুই গোল মিলিয়ে মোনাকোর বিপক্ষে ১০ ম্যাচে ১০ গোল হলো তাঁর।
পার্ক দে প্রিন্সেসে কাল দ্বিতীয় মিনিটেই অবশ্য এমবাপ্পেদের ধাক্কা প্রায় দিয়েই ফেলেছিল মোনাকো। সোফিয়ান দিওপের শট পিএসজির পোস্টে লেগে ফেরে। কিন্তু এরপরই পিএসজির—আরও নির্দিষ্ট করে বললে এমবাপ্পের আক্রমণের শুরু। ১২ মিনিটে তাঁর প্রথম গোলটি পেনাল্টি থেকে, বিরতির ঠিক আগে দ্বিতীয় গোলটি বক্সের বাঁ দিক থেকে বাঁকানো শটে।
পেনাল্টিটা পিএসজি পেয়েছে আনহেল দি মারিয়ার সৌজন্যে। মোনাকো বক্সে আর্জেন্টাইন উইঙ্গারকে ফেলে দেন মোনাকোর রাইটব্যাক জিব্রিল সিদিবে। পেনাল্টি নেন এমবাপ্পে, গোলকিপারকে ফাঁকি দিতে তাঁর বেগ পেতে হলো না। ৪৫ মিনিটে পিএসজির দ্বিতীয় গোলে মেসিরই অবদান বেশি।
বল নিয়ে মোনাকোর গোলপোস্টের দিকে ছুটতে থাকেন মেসি, তাঁকে ঘিরে ধরতে মোনাকোর তিন ডিফেন্ডার চলে আসেন। তাতে একপাশে জায়গা পুরো ফাঁকা হয়ে যায় এমবাপ্পের জন্য! তিন ডিফেন্ডারকে দর্শক বানিয়ে মেসি পাস বাড়ান বক্সের বাঁ দিকে দাঁড়ানো এমবাপ্পের দিকে, ফরাসি স্ট্রাইকারের ধনুক-বাঁকা শট ফেরানোর সাধ্য মোনাকো গোলকিপারের ছিল না।
তবে জিতেও দলের পারফরম্যান্সে কিছুটা অসন্তুষ্টি আছে এমবাপ্পের, ‘আমরা ঠিক চোখধাঁধানো ফুটবল তো খেলতে পারিনি, তবে প্রথমার্ধেই যা করার করেছি।’ নিজের পুরোনো ক্লাবের মুখোমুখি হওয়া নিয়েও আবেগ কাজ করে না তাঁর মধ্যে, ‘আমি আবেগে ভেসে যেতে পারি না। আমার ফুটবল খেলতে ভালো লাগে, গোল করতে ভালো লাগে।’
এমবাপ্পে সেটা করতে পেরেছেন, কিন্তু পিএসজি সমর্থকদের হতাশা বাড়িয়ে মেসি তা পারেননি। দ্বিতীয়ার্ধে দুবার খুব কাছে গিয়েও হতাশ হতে হয়েছে ৩৪ বছর বয়সী আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ডকে। মোনাকো অবশ্য দ্বিতীয়ার্ধে দু-একবার ব্যবধান কমানোর সুযোগ পেয়েছে, কিন্তু কখনো পিএসজি গোলকিপার জিয়ানলুইজি দোন্নারুম্মা, আর কখনো নিজেদের শট ঠিকঠাক না হওয়ায় সেটা তারা পারেনি।
লিগে টানা দুই ড্রয়ের পর এই জয়ে লিগশীর্ষে ব্যবধানটা আরেকটু বাড়িয়ে নিল পিএসজি। ১৮ ম্যাচে ৪৫ পয়েন্ট তাদের। ১৭ ম্যাচে ৩২ পয়েন্ট নিয়ে দুই নম্বরে মার্শেই। তিনে থাকা রেনের পয়েন্ট ১৮ ম্যাচে ৩১।