প্রথম ম্যাচেই ব্যর্থ আশরাফুল
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ০৭:০১ এএম, ২৫ নভেম্বর,
বুধবার,২০২০ | আপডেট: ০১:৪০ এএম, ২১ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
বঙ্গবন্ধু টি-২০ কাপের উদ্বোধনী ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছে মিনিস্টার গ্রুপ রাজশাহী ও বেক্সিমকো ঢাকা। টস ভাগ্যে হেরে শুরুতে ব্যাট করেছে রাজশাহী। দীর্ঘদিন পর এই ম্যাচ দিয়ে ক্রিকেটে ফিরেছেন মোহাম্মদ আশরাফুল। তবে ব্যাট করতে নেমে ভক্তদের আস্থার প্রতিদান দিয়ে পারেননি আশরাফুল। ৯ বল খেলে মাত্র ৫ রান করে মুক্তার আলির বলে নাইমের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন এই তারকা ক্রিকেটার।
নতুনভাবে নিজেকে খুঁজতে থাকা আশরাফুল প্রথম পরীক্ষাতেই ব্যর্থ। তবে দারুণ ব্যাটিংয়ে রাজশাহীকে টেনেছেন মেহেদী হাসান। তার ব্যাটে চড়ে বেক্সিমকো ঢাকার বিপক্ষে আগে ব্যাট করে নয় উইকেটে ১৬৯ রান করে নাজমুল হোসেন শান্তর দল।
নাটকীয়তা শেষে বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টির প্রথম জয় রাজশাহীর :
১৮তম ওভারের প্রথম বলে মুশফিকুর রহিম আউট হয়ে গেলে সমীকরণ কঠিন হয়ে যায় দারুণ এগুতে থাকা বেক্সিমকো ঢাকার। জয়ের জন্য ১৬ বলে তখন ৩৬ রান লাগত ঢাকার। শেষ দুই ওভারে সমীকরণ দাঁড়ালো ৩০ রান। মুক্তার আলী পরের ওভারে তিন ছয় হাঁকিয়ে আবারও ঢাকার জয়ের পাল্লা ভারি করেন। শেষ ওভারে প্রয়োজন ছিল মাত্র ৯ রান। কিন্তু মেহেদি হাসানের করা শেষ ওভারে মাত্র দুবার বল ব্যাটে লাগাতে সক্ষম হওয়া সেই মুক্তারের কারণেই ৯ রানের সহজ সমীকরণ মেলাতে পারেনি ঢাকা। শেষ ওভারে অপর প্রান্তে হার্ডহিটার সাব্বির রহমানকে স্ট্রাইক না পাওয়ার আক্ষেপ করতে দেখা যাচ্ছিল।
নখ কামড়ানো উত্তেজনা শেষে শেষ পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপের প্রথম ম্যাচে ২ রানে ম্যাচ জিতেছে রাজশাহী। ঢাকার ইনিংস থেমেছে ১৬৭ রানে। ১৬৯ রানের জবাব দিতে নেমে ঢাকার শুরুটা মনপূত হয়নি। তরুণ তানজিদ হাসান তামিম শুরুতে ঝড় তুলেছিলেন বটে, তবে সেটা বেশিদূর এগুতে পারেনি। ১১ বলে ১৮ করে ফিরেছেন তরুণ ওপেনার। ৮ বলে ৯ করে ফিরেন অপর ওপেনার ইয়াছির আলীর রাব্বি।
তবে এরপর তরুণ নাঈম শেখকে নিয়ে অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম যেভাবে এগুচ্ছিলেন তাতে মনে হচ্ছিল উদ্বোধনী দিনটা মুশফিকের ঢাকারই। নাঈম ১৭ বলে ২টি করে চার ছয়ে ২৭ করে ফিরলেও চাপে পড়তে হয়নি মুশফিককে। কারণ পাঁচে এসে দারুণ খেলছিলেন বাংলাদেশকে যুব বিশ্বকাপ জেতানো অধিনায়ক আকবর আলী।
কিন্তু মাত্র ৮ রানের ব্যবধানে আকবর-মুশফিক ফিরলে বড় বিপদে পড়ে যায় ঢাকা। তারপর সেই মুক্তার নাটকীয়তা। অপর প্রান্তে থাকা সাব্বির রহমানকে (৫) দর্শক বানিয়ে ১৮তম ওভারে তিন ছয় হাঁকিয়ে প্রথমে ঢাকাকে জয়ের একদম কাছাকাছি নিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু শেষ ওভারে মাত্র ৯ রান লাগলেও মেহেদি হাসানের করা সাতটি ডেলিভারির মাত্র দুটিতে ব্যাটে লাগাতে পেরেছেন মুক্তার। শেষ ওভারে মেহেদিকে সাত ডেলিভারি করতে হয়েছে একটি নো কল হওয়ার কারণে।
মুক্তার ১৬ বলে ২৭ রান করে অপরাজিত ছিলেন। আকবর আলী ২৯ বলে ৪টি চার ১টি ছয়ে ৩৪ ও মুশফিকুর রহিম ৩৪ বলে ৩টি চার ১টি ছয়ে ৪১ রান করেন।
এর আগে রাজশাহীর ১৬৯ রানের সংগ্রহে বড় অবদান শেষ ওভারের নায়ক শেখ মেহেদি হাসানেরই। স্পিনার থেকে স্পিনিং অলরাউন্ডার হয়ে উঠতে যাওয়া এই তরুণ ও উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান নুরুল হাসান সোহানের কারণে চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহটা পেয়েছে রাজশাহী। টস হেরে ব্যাটিং করতে নেমে রাজশাহীর অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত শুরুতে যেভাবে এগুচ্ছিলেন মনে হচ্ছিল যেন টেস্ট খেলতে নেমেছে! নিজে প্রথম ১১ বলে মাত্র ৩ রান তোলেন শান্ত। পরে রান তোলার গতি বাড়িয়েছেন ঠিকই, কিন্তু ইনিংস বড় করতে পারেননি। চতুর্থ ওভারের পঞ্চম বলে ১৬ বলে ১৭ করে ফিরেছেন রাজশাহীর দলপতি।
রাজশাহীর রান তখন ৩১। সেখান থেকে আরও ৩৪ রান যোগ করতেই অপর ওপেনার আনিছুল ইসলাম ইমন (২৩ বলে ৩৫), রনি তালুকদার (৬), মোহাম্মদ আশরফুল (৫), ফজলে রাব্বির (০) উইকেট হারায় রাজশাহী। নুরুল-মেহেদির প্রতিরোধ সেখান থেকেই। দুজনেই বেছে নিয়েছিলেন প্রতি-আক্রমণের পথ। ৩২ বলে ৩ চার ৪ ছয়ে ৫০ রান করে ফেরেন মেহেদি। নুরুল হাসান ২০ বলে করেন ৩৯। যাতে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৬৯ রানের সংগ্রহ পায় রাজশাহী। ঢাকার হয়ে ২২ রানে তিন উইকেট নেন মুক্তার আলী।