মিয়ানমারে লক্ষাধিক শিক্ষক সাময়িক বরখাস্ত
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ০৯:১৭ পিএম, ২৩ মে,রবিবার,২০২১ | আপডেট: ০৪:৪৪ পিএম, ২১ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
সামরিক অভ্যুত্থানের বিরোধিতা করায় মিয়ানমারে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে কমপক্ষে এক লাখ ২৫ হাজার ৯০০ শিক্ষককে। মিয়ানমার টিচার্স ফেডারেশনের একজন কর্মকর্তা এ তথ্য দিয়েছেন বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে।
খবরে বলা হয়েছে, নতুন বছরের শিক্ষা কার্যক্রম শুরুর কয়েকদিন আগেই এই বরখাস্তকরণ করা হয়। এ সময়ে অভ্যুত্থানের প্রতিবাদে শিক্ষা কার্যক্রম বর্জন করছিলেন কিছু শিক্ষক ও অভিভাবক।
শিক্ষক সমিতির ওই কর্মকর্তা বলেছেন তাকেও সামরিক জান্তা ওয়ান্টেড তালিকায় রেখেছে। এ জন্য তিনি নিজের পরিচয় প্রকাশ করতে চান না। দুই বছর আগের সর্বশেষ ডাটা অনুযায়ী মিয়ানমারে ছিলেন মোট ৪ লাখ ৩০ হাজার শিক্ষক। ওই কর্মকর্তা বলেন, এখন শিক্ষকদের বরখাস্ত করার মাধ্যমে অন্যদের কাজে ফেরার হুমকি দেয়া হচ্ছে।
যদি প্রকৃতপক্ষেই সরকার এত বিপুল পরিমাণ শিক্ষককে বরখাস্ত করে, তাহলে পুরো ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে যাবে। এই কর্মকর্তা বলেছেন, তিনি কাজে ফিরলে তার নিজের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তা প্রত্যাহার করে নেয়ার কথা বলা হয়েছে।
তবে এ বিষয়ে সামরিক জান্তা এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মন্তব্য পাওয়া যায়নি। রাষ্ট্র পরিচালিত গ্লোবাল নিউ লাইট অব মিয়ানমার পত্রিকা শিক্ষক ও ছাত্রদের স্কুলে ফেরার অনুরোধ জানিয়েছে, যাতে আবার শিক্ষা কার্যক্রম চালানো যায়।
উল্লেখ্য, ১ ফেব্রুয়ারি অং সান সুচিকে ক্ষমতা থেকে উচ্ছেদ করে ক্ষমতা দখল করে সামরিক জান্তা। এর প্রতিবাদে ফুঁসে ওঠে পুরো দেশ। স্বাস্থ্যখাত, সরকারি বেসরকারি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সব শ্রেণির কর্মকর্তা কর্মচারীরা বিক্ষোভে শরিক হন।
ওদিকে জুনে শুরু হচ্ছে সেখানে নতুন শিক্ষাবর্ষ। এ জন্য আগামী সপ্তাহে শুরু হচ্ছে স্কুলগুলোতে শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশন। কিন্তু অনেক অভিভাবক বলেছেন, তারা তাদের সন্তানদেরকে স্কুলে পাঠাবেন না। ৪২ বছর বয়সী মিন্ট-এর আছে ১৪ বছর বয়সী একটি মেয়ে।
তিনি বলেছেন, আমার মেয়েকে স্কুলে পাঠাচ্ছি না। কারণ, একজন সামরিক স্বৈরাচারের কাছ থেকে তাকে শিক্ষা নিতে দিতে পারি না। তার নিরাপত্তা নিয়ে আমার খুব বেশি উদ্বেগ আছে। এতদিন যে বিক্ষোভ হয়েছে, তার সামনের সারিতে ছিলেন শিক্ষার্থীরা।
এ সময় নিরাপত্তা রক্ষাকারীরা গুলি করে কয়েক শত মানুষকে হত্যা করেছে। এ জন্য শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জনের পরিকল্পনা নিয়েছে। লুইন (১৮) নামের একজন শিক্ষার্থী বলেছেন, যদি আমরা গণতন্ত্র ফিরে পাই তাহলেই স্কুলে যাবো।
উল্লেখ্য, মিয়ানমারের শিক্ষা ব্যবস্থা এ অঞ্চলে সবচেয়ে খারাপ যেসব দেশের রেকর্ড তার মধ্যে অন্যতম। গত বছর বিশ্বজুড়ে ৯৩ টি দেশের মধ্যে মিয়ানমারের অবস্থান ছিল ৯২তম।