সশস্ত্র বাহিনী দিবসে রক্তাক্ত মিয়ানমার, নিহত প্রায় শতাধিক
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ০৪:০৫ পিএম, ২৮ মার্চ,রবিবার,২০২১ | আপডেট: ০৩:৩০ এএম, ১৭ সেপ্টেম্বর,মঙ্গলবার,২০২৪
মিয়ানমারের সশস্ত্র বাহিনী দিবসে দেশটির সেনাবাহিনীর সাথে জান্তা সরকার বিরোধীদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। এদিন সেনাবাহিনীর গুলিতে নিহত হয়েছেন অন্তত শতাধিক বিক্ষোভকারী।
এর আগে বার্ষিক সশস্ত্র বাহিনী দিবসের আগে গত শুক্রবার এক বিবৃতিতে বিক্ষোভকারীদের সরাসরি গুলির হুমকি দেয় সামরিক জান্তা।
রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণাধীন এমআরটিভিতে প্রচারিত ওই বিবৃতিতে বিক্ষোভকারীদের সতর্ক করে বলা হয়, 'বিগত দিনের কুৎসিত মৃত্যু থেকে আপনাদের শিক্ষা নেয়া উচিত। আপনারা মাথায় ও পিঠে গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে আছেন।'
এদিকে, রাজধানী নেপিদোতে সশস্ত্র বাহিনী দিবসের প্যারেডে জান্তাপ্রধান মিন অং হ্লাইং বলেছেন, মিয়ানমার সেনাবাহিনী দেশবাসী ও দেশের গণতন্ত্রকে রক্ষা করবে।
সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে তিনি বলেন, 'সেনাবাহিনী সমগ্র জাতির কাছে গণতন্ত্র রক্ষায় সহযোগিতার প্রত্যাশা করছে।'
গতকাল শনিবার বাণিজ্যিক রাজধানী ইয়াঙ্গুন, মান্দালায়সহ বিভিন্ন শহরে সামরিক শাসনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়।
সামরিক জান্তাবিরোধী গোষ্ঠী সিআরপিএইচের মুখপাত্র ডা. সাসা এক অনলাইন বার্তায় বলেন, 'আজকের দিনটি সশস্ত্র বাহিনীর জন্য লজ্জাজনক। তিন শ'র বেশি নিরাপরাধ মানুষকে হত্যার পর সশস্ত্র বাহিনী দিবস পালন করছেন জেনারেলরা।'
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম মিয়ানমার নাও তাদের এক প্রতিবেদনে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে দেশজুড়ে ৯১ জন নিহত হওয়ার খবর জানিয়েছে।
ওই প্রতিবেদনে জানানো হয়, মিয়ানমারের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালায়ে অন্তত ২৯ জন নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে পাঁচ বছর বয়সী এক বালক রয়েছে। অপরদিকে বৃহত্তম শহর ইয়াঙ্গুনে নিরাপত্তা বাহিনীর সাথে সংঘর্ষে ২৪ জন নিহত হয়েছেন।
দেশটির মধ্যাঞ্চলীয় মিঙ্গইয়ান শহরের বাসিন্দা থু ইয়া জাও বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, 'তারা আমাদের যেখানে সেখানে এমন কি ঘরের ভেতরেও পাখি বা মুরগির মতো মারছে।'
তবে সামরিক ও নিরাপত্তা বাহিনীর দমন অভিযান সত্ত্বেও বিক্ষোভ চালিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন থু ইয়া জাও। তিনি বলেন, 'জান্তার পতন না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাবো।'
১ ফেব্রুয়ারি তাতমাদাও নামে পরিচিত মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী দেশটিতে সেনা অভ্যুত্থান ঘটায় এবং প্রেসিডেন্ট উইন মিন্ট ও স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চিসহ রাজনৈতিক নেতাদের গ্রেফতার করে। সাথে সাথে দেশটিতে এক বছরের জন্য জরুরি অবস্থা জারি করা হয়।
গত বছরের নভেম্বরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে বিতর্কের জেরে এই অভ্যুত্থান ঘটায় সামরিক বাহিনী।
সেনা অভ্যুত্থানের প্রতিবাদে ৬ ফেব্রুয়ারি থেকে মিয়ানমারের বিভিন্ন শহরেই বিক্ষোভ শুরু হয়। বিক্ষোভকারীরা অং সান সু চিসহ বন্দী রাজনৈতিক নেতাদের মুক্তির পাশাপাশি সামরিক শাসন প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে আসছেন।
সূত্র : রয়টার্স