মিয়ানমারের সেনা অভ্যুত্থানের ব্যর্থতা নিশ্চিত করতে হবে-গুতেরেস
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ০২:৩০ এএম, ৫ ফেব্রুয়ারী,শুক্রবার,২০২১ | আপডেট: ১০:০২ এএম, ১২ নভেম্বর,মঙ্গলবার,২০২৪
জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, মিয়ানমারের অগ্রহণযোগ্য সামরিক অভ্যুত্থানের ব্যর্থতা নিশ্চিত করতে হবে। এই লক্ষ্যে দেশটির সামরিক কর্তৃপক্ষকে চাপ দিতে বিশ্ব পরাশক্তিগুলোর প্রস্তুতিতে কাজ করছে জাতিসংঘ। গত বুধবার যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদপত্র দ্যা ওয়াশিংটন পোস্টের সাথে এক অনলাইন আলোচনায় এই মন্তব্য করেন তিনি। অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেন, নির্বাচনের পর এই পদক্ষেপ সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য। আমি বিশ্বাস করি, এই নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবেই হয়েছিল। ক্ষমতা হস্তান্তরের দীর্ঘধারায় নির্বাচনের ফলাফল ও জনগণের ইচ্ছাকে পরিবর্তনের চেষ্টা অগ্রহণযোগ্য।
এর আগে গত সোমবার মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী, তাতমাদাও দেশটিতে সেনা অভ্যুত্থান ঘটায় এবং প্রেসিডেন্ট উইন মিন্ট ও স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চিসহ রাজনৈতিক নেতাদের গ্রেফতার করে। সাথে সাথে দেশটিতে এক বছরের জন্য জরুরি অবস্থা জারি করা হয়। নভেম্বরের নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে বেসামরিক প্রশাসনের সাথে সামরিক বাহিনীর কয়েক দিনের দ্বন্দ্বের পর এই অভ্যুত্থান ঘটে। ওই নির্বাচনে সু চির নেতৃত্বের ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) জয়লাভ করে, যা তাতমাদাও অস্বীকার করেছে। গুতেরেস অনলাইন আলোচনায় সব বন্দির মুক্তির দাবি জানিয়ে বলেন, সাংবিধানিক শাসন আবার প্রতিষ্ঠিত হতে হবে এবং আমি আশা করবো এই লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কাজ করবে। এদিকে গত বুধবার মিয়ানমারে অং সান সু চির বিরুদ্ধে অবৈধভাবে ছয়টি অনিবন্ধিত ওয়াকিটকি রেডিও আমদানি ও ব্যবহারের অভিযোগে মামলা করা হয়েছে। রাজধানী নেপিডোতে তার বাসভবনের সেনা অভিযানে এই ওয়াকিটকি উদ্ধার করা হয়। ফেসবুকে এক পোস্টে সু চির দল এনএলডি জানায়, তাকে দুই সপ্তাহের জন্য আটকের আদেশ দেয়া হয়েছে। দলটি জানায়, দেশটির বিভিন্ন স্থানে তাদের দলীয় কার্যালয়ে কর্তৃপক্ষ অভিযান চালিয়েছে। অপরদিকে গ্রেফতার প্রেসিডেন্ট উইন মিন্টকে গত নভেম্বরে নির্বাচনি প্রচারণায় করোনাভাইরাস সংক্রমণ সতর্কতায় নেয়া ব্যবস্থাপনা লঙ্ঘনে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
২০১১ সাল পর্যন্ত সেনাশাসনের অধীনে থাকা মিয়ানমারে দেশটির স্বাধীনতা সংগ্রামের নেতা জেনারেল অং সানের মেয়ে অং সান সু চির নেতৃত্বে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া শুরু হয়।
এর আগে ১৯৮৯ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত প্রায় ১৫ বছর গৃহবন্দিত্বে ছিলেন সু চি। গণতন্ত্রের জন্য তার সংগ্রামের কারণে ১৯৯১ সালে তিনি নোবেল শান্তি পুরস্কার জয় করেন। কিন্তু ২০১৭ সালে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলিম অধিবাসীদের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর দমন অভিযানের পরিপ্রেক্ষিতে সু চির আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তি ক্ষুণœ হয়। সেনাবাহিনীর পদক্ষেপের বিরুদ্ধে যথার্থ ব্যবস্থা ও প্রতিবাদ জানাতে ব্যর্থতায় সাবেক সমর্থকরা তার নিন্দা করেছিলেন। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) বর্তমানে ওই অভিযানে মিয়ানমারের মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের তদন্ত করছে।