চীনে হাসপাতালগুলো বয়স্ক করোনা রোগীতে ভর্তি
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ০৫:৪৩ পিএম, ৩০ ডিসেম্বর,শুক্রবার,২০২২ | আপডেট: ০৫:৩৩ পিএম, ২০ নভেম্বর,
বুধবার,২০২৪
চীনের হাসপাতালগুলো করানোভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত রোগী সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে। শ্বাসকষ্টে ভোগা অনেক বয়স্ক রোগীতে শয্যা ভর্তি। চলমান মহামারিতে সবচেয়ে মারাত্মকভাবে ছড়িয়ে পড়া সংক্রমণ ঠেকাতে নিজেরা আক্রান্ত হলেও সেবা দিয়ে যেতে হবে বলে মনে করছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। খবর এএফপির
চলতি সপ্তাহে বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টিন তুলে দেওয়ার ঘোষণা দেয় বেইজিং। এর মধ্য দিয়ে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে প্রায় তিন বছরের কঠোর অবস্থান থেকে কার্যত সরে আসে কর্তৃপক্ষ। এই কঠোর অবস্থানের ফলে বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশটি এত দিন বাকি বিশ্ব থেকে অনেকটাই বিচ্ছিন্ন ছিল।
সরকারের সিদ্ধান্তে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন অনেক চীনা নাগরিক। কিন্তু বিধিনিষেধ শিথিলের ফলে সংক্রমণ ব্যাপকভাবে বাড়তে শুরু করে। চাপ পড়ে স্বাস্থ্য ব্যবস্থায়। মরদেহ সৎকারে হিমশিম খাচ্ছে শ্মশানগুলো।
রাজধানী বেইজিং থেকে প্রায় ১৪০ কিলোমিটার দূরের তিয়ানজিনে অবস্থিত নানকাই হাসপাতাল। গত বুধবার ওই হাসপাতালে গিয়ে এএফপির সাংবাদিক দেখেন, ২৪ জনের বেশি অত্যন্ত বয়স্ক রোগী সেখানকার জরুরি বিভাগে চার চাকার স্ট্রেচারে শুয়ে আছেন।
এসব রোগীর অধিকাংশের হাতেই স্যালাইন পুশ দেওয়া। কিছু রোগী শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন বলে মনে হচ্ছিল। কয়েকজনকে অচেতন মনে হয়েছিল; পুরোপুরি সাড়া দিচ্ছিলেন না। একজন চিকিৎসক বললেন, ‘হ্যাঁ, তাঁরা সবাই কোভিডে আক্রান্ত।’
একজন রোগীর অভিভাবককে আরেক চিকিৎসককে বলতে শোনা যায়, সমস্যা হলো, এই মুহূর্তে আর কোনো শয্যা ফাঁকা নেই।
গত সপ্তাহে চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন (এনএইচসি) বলেছে, এখন থেকে তারা আর কোভিডে দৈনিক মৃত্যুর হিসাব প্রকাশ করবে না। এ ছাড়া কোভিডে মৃত্যু পুনরায় সংজ্ঞায়িত করার চীনের সিদ্ধান্তে প্রাণহানির সংখ্যা ব্যাপক কমিয়ে দেখানো হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
তিয়ানজিনের এক চিকিৎসক বলেন, সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ায় স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে তাঁর জরুরি কক্ষ অনেক বেশি ব্যস্ত। করোনায় আক্রান্ত হলেও কাজ চালিয়ে যেতে হবে বলে ‘অনেকটাই ধারণা করছেন’ স্বাস্থ্যকর্মীরা।
তিন বছর ধরে চীন দেশটির সীমান্ত প্রায় বন্ধ করে রেখেছিল, কঠোর লকডাউন আরোপ করেছিল এবং অবিরাম কোভিড পরীক্ষা চালিয়ে আসছিল। ৭ ডিসেম্বর বেইজিং সীমান্ত খুলে দেওয়াসহ এসব বিধিনিষেধ থেকে সরে আসে। এতে দেশটিতে ব্যাপকভাবে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে।
সংক্রমণ নিয়ে বেইজিংয়ের দেওয়া পরিসংখ্যানের বিষয়ে কিছু দেশ সংশয় প্রকাশ করেছে। চীনফেরত যাত্রীদের কোভিড পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করেছে যুক্তরাষ্ট্রসহ কয়েকটি দেশ। এই তালিকায় রয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া, ভারত, জাপান ও তাইওয়ানও। বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, দেশগুলোর এমন সিদ্ধান্তকে ‘বৈষম্যমূলক’ বলে মন্তব্য করেছে চীন।
চীনের রাষ্ট্রীয় ট্যাবলয়েড গ্লোবাল টাইমস গত বৃহস্পতিবার এক নিবন্ধে বলেছে, ‘আসল উদ্দেশ্য হলো, চীনের তিন বছরের কোভিড-১৯ নিয়ন্ত্রণ প্রচেষ্টাকে নস্যাৎ করে দেওয়া এবং দেশের ব্যবস্থাকে আক্রমণ করা।’ এই বিধিনিষেধকে ‘ভিত্তিহীন’ ও ‘বৈষম্যমূলক’ বলেও অভিহিত করে রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমটি।