মিয়ানমার সেনাবাহিনীর কাছে অস্ত্র বিক্রি বন্ধের আহবান জাতিসংঘের
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১০:০৩ পিএম, ১৭ সেপ্টেম্বর,শনিবার,২০২২ | আপডেট: ০৮:৪৮ পিএম, ২০ নভেম্বর,
বুধবার,২০২৪
মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর আয় বন্ধ করতে এবং তাদের কাছে অস্ত্র বিক্রি থামাতে বিশ্বের দেশগুলোকে আরও কার্যকরি পদক্ষেপ নেয়ার আহবান জানিয়েছে জাতিসংঘ।
শুক্রবার জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক দফতর থেকে এই আহবান জানিয়ে বলা হয়, জনগণকে নিপীড়ন ও ভয় দেখিয়ে শাসন করছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। তাই অবিলম্বে তাদেরকে আরও বিচ্ছিন্ন করে দিতে হবে। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
খবরে বলা হয়, গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে মিয়ানমারের গণতান্ত্রিক সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতা দখল করে নেয় দেশটির সামরিক বাহিনী। এরপর থেকেই তারা গণতন্ত্রের দাবিতে রাস্তায় নামা আন্দোলনকারীদের কঠিনভাবে দমন করেছে। এক হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছে সেনাবাহিনীর গুলিতে। গণগ্রেফতার এখনও অব্যাহত আছে। হাজার হাজার মানুষ সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে কথা বলে বন্দি হয়ে আছে। সেনাবাহিনীর ওপর চাপ বৃদ্ধির লক্ষ্যে পশ্চিমা দেশগুলো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে রেখেছে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে। এখন আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞায় চাপের মুখে পড়া অর্থনীতি সামাল দেয়ার চেষ্টা করছে দেশটির সামরিক শাসকরা। কিন্তু নিজেদের দমন ও নিপীড়ন থেকে তারা সরে আসছে না।
জাতিসংঘের অভিযোগ, জান্তা সরকার মিয়ানমারে গণহত্যা এবং মানবতাবিরোধী অপরাধ করে চলেছে। যদিও জান্তার দাবি, তারা কথিত সন্ত্রাসীদের হাত থেকে দেশকে রক্ষার লক্ষ্যে যুদ্ধ করছে। শুক্রবার এক প্রতিবেদনে জাতিসংঘ মানবাধিকার দফতর বলে, সেনাবাহিনী অর্থবহ ও টেকসই উপায়ে দেশ পরিচালনা করতে ব্যর্থ হয়েছে। তাই মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীকে আরও বিচ্ছিন্ন করার আহ্বান জানিয়েছে তারা। এ জন্য প্রথমেই মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী যাতে তাদের ব্যবসায়িক নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে বিদেশ থেকে আয় করতে না পারে তা নিশ্চিত করতে হবে। অপরদিকে মিয়ানমারের কাছে অস্ত্র বিক্রিও বন্ধ করতে হবে। প্রতিবেদনে জাতিসংঘ বলেছে, মিয়ানমারের জনগণকে সমর্থন জানাতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের উচিত তাদের সামর্থ্য অনুযায়ী সব পদক্ষেপ গ্রহণ করা এবং দেশটির সামরিক বাহিনীকে আর্থিকভাবে বিচ্ছিন্ন করে দেয়া।
যদিও যুক্তরাষ্ট্র, বৃটেন, কানাডা ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন মিয়ানমারের ওপর ব্যাপক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। কিন্তু প্রতিবেশীদের সঙ্গে দেশটির বাণিজ্য অব্যাহত আছে এবং বেশ কয়েকটি দেশ জান্তাকে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম দেয়া অব্যাহত রেখেছে। চীন শত্রুতা শেষ করার আহ্বান জানালেও রাশিয়া দেশটির জেনারেলদের ঘনিষ্ঠ কূটনৈতিক মিত্র হয়ে আছে এবং অভ্যুত্থানের পর থেকে মিয়ানমারের জান্তা প্রধানকে তিনটি অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে বরণ করেছে। জাতিসংঘ মানবাধিকার দফতরের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিয়ানমারকে যুদ্ধবিমান ও সাঁজোয়া যান দিয়েছে রাশিয়া, চীন যুদ্ধ ও পরিবহন বিমান সরবরাহ করেছে, সার্বিয়া রকেট ও গোলাগুলি দিয়েছে এবং ভারত একটি দূরবর্তী বিমান প্রতিরক্ষা স্টেশন তৈরিতে সহায়তা করেছে।
আলাদা আরেকটি বিবৃতিতে জাতিসংঘের মিয়ানমার বিষয়ক বিশেষজ্ঞ ম্যারি লাওলর এবং টম অ্যান্ড্রুস মিয়ানমারের মানবাধিকার কর্মীদের প্রতি সমর্থন বৃদ্ধির আহবান জানিয়েছেন। এই মানবাধিকার কর্মীরা মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নৃশংসতার প্রমাণ সংগ্রহ করছে। একইসঙ্গে এই বিশেষজ্ঞরা মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অত্যাচার নিয়ে আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীর ‘উদাসীনতা’র অবসানের আহবানও জানান।