সাংবাদিক লাঞ্ছিত
যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সকল সংবাদ ও অনুষ্ঠান বর্জনের ঘোষণা নিউইয়র্কের সাংবাদিকদের
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ০১:২৫ এএম, ২৫ সেপ্টেম্বর,শনিবার,২০২১ | আপডেট: ০২:২০ এএম, ১৮ সেপ্টেম্বর,
বুধবার,২০২৪
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিউইয়র্কে অবস্থানকালীন গত ২২ সেপ্টেম্বর বুধবার যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এর প্রতিবাদে নিউইয়র্কে কর্মরত সকল প্রিন্ট ও ইলেক্টনিক মিডিয়ায় সাংবাদিকরা এক প্রতিবাদ সভার আয়োজন করেন। ২৩ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসের ডাইভারসিটি প্লাজায় অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সমাবেশে সাংবাদিকরা এই ন্যক্কারজনক ঘটনার নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা ও দোষীদের বিরুদ্ধে দলীয় ফোরামে দৃষ্টান্তমলক শাস্তির ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান। সাংবাদিকদের এ দাবি না মানা পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ ও এর সকল অঙ্গসংগঠনের সংবাদ ও অনুষ্ঠান বর্জনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, বর্তমানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা জাতিসংঘের ৭৬তম অধিবেশনে যোগ দিতে নিউইয়র্কে অবস্থান করছেন। ২২ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রীর জাতিসংঘের অধিবেশনকে কেন্দ্র করে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ এই সম্মেলনের আয়োজন করে। বিকেলে অনুষ্ঠিত নিউইয়র্কের উডসাইডস্হ কুইন্স প্যালেসে জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্ন-উত্তর চলাকালে সাংবাদিক ফরিদ আলমের একটি প্রশ্নকে কেন্দ্র করে কিছুসংখ্যক কর্মী-সমর্থক হঠাৎ করে মারমুখী হয়ে ওঠেন।
তারা সাংবাদিক ফরিদ আলমের দিকে তেড়ে আসেন এবং তার গায়ে হাত তোলেন। তাকে লাঞ্ছিত করেন। তখন উপস্থিত সাংবাদিকরা সাথে সাথে এর প্রতিবাদ করেন এবং ফরিদ আলমকে ঘিরে ধরে এদের হাত থেকে রক্ষা করেন। সাংবাদিকরা অভিযোগ করেন, সম্মেলন মঞ্চে তখন বসা ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ ও যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ।
ঘটনায় নেতৃবৃন্দ এ বিষয়ে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেননি ও কোনো প্রকারের প্রতিক্রিয়া না দেখিয়ে নীরব থাকেন। প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সাপ্তাহিক আজকালের প্রধান সম্পাদক মনজুর আহমদ, সাপ্তাহিক পরিচয় সম্পাদক নাজমুল আহসান, সাপ্তাহিক বাঙালি সম্পাদক কৌশিক আহমদ, সাপ্তাহিক বাংলা পত্রিকা সম্পাদক ও টাইম টেলিভিশনের সম্পাদক আবু তাহের, সাপ্তাহিক বাংলাদেশ সম্পাদক ডা. ওয়াজেদ এ খান, সাপ্তাহিক আজকাল সম্পাদক জাকারিয়া মাসুদ, সাপ্তাহিক প্রবাস সম্পাদক মোহাম্মদ সাঈদ, সাপ্তাহিক দেশ সম্পাদক মিজানুর রহমান, সিনিয়র সাংবাদিক শেখ সিরাজুল ইসলাম ও মনোয়ারুল ইসলাম দৈনিক ইত্তেফাকের বিশেষ প্রতিনিধি শহীদুল ইসলাম ও প্রথম আলোর রওশন হক। সাপ্তাহিক নবযুগ সম্পাদক শাহাবুদ্দীন সাগর অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন। অন্যদের মধ্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবেদীন, সিনিয়র সাংবাদিক তাসের মাহমুদ, সাপ্তাহিক দেশ প্রকাশক মনজুর হোসেন, আকবর হায়দার কিরণ, মীর ওয়াজেদ এ শিবলী, সালাহউদ্দিন আহমেদ, সৈয়দ ইলিয়াস খসরু, নীহার সরকার, মনজুরুল হক, এমদাদ হোসেন দীপু, রশীদ আহমদ ও আবুল কাশেম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। ঘটনার পর বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং বিশিষ্ট ব্যক্তি এর তীব্র নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন। এ ঘটনার প্রতিবাদ এখনো অব্যাহত রয়েছে। এ ঘটনায় নিউইয়র্কসহ যুক্তরাষ্ট্রে প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনার নিন্দা জানিয়ে মিশিগান প্রেসক্লাবের সভাপতি হেলাল উদ্দীন রানা ও সেক্রেটারি ইকবাল ফেরদৌস এক বিবৃতি প্রদান করেন। তারা নিউইয়র্কের সাংবাদিকদের দাবির সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন।