অবাধ বিচারহীনতার সংস্কৃতি গুমকে উৎসাহিত করছে : মার্কিন কংগ্রেসের ককাসে আলোচনা
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ০১:১৩ এএম, ৩ সেপ্টেম্বর,শুক্রবার,২০২১ | আপডেট: ০৬:০৯ এএম, ১৯ নভেম্বর,মঙ্গলবার,২০২৪
বাংলাদেশে করোনা মোকাবিলা নিয়ে সমালোচনাকারীদের যে পরিণতি হয়েছে তা উদ্বেগজনক। সুশীল সমাজ, বিরোধীদলীয় নেতাকর্মী, গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধের উদ্দেশ্যে গুমের মাধ্যমে ভয়ের সংস্কৃতির বিস্তার ঘটেছে। অবাধ বিচারহীনতার সংস্কৃতি গুমকে উৎসাহিত করছে। এসব চর্চা বন্ধ করতে হলে জড়িতদের জবাবদিহিতা নিশ্চিতে আশু পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। সে জবাবদিহিতা নিশ্চিত হতে পারে জনগণের সরকার ক্ষমতায় থাকলে। গত মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত এক ভার্চ্যুয়াল আলোচনা সভায় বাংলাদেশে গুম পরিস্থিতি বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসের টম ল্যান্টোস মানবাধিকার কমিশনের ব্রিফিংয়ে আলোচকরা এসব বক্তব্য তুলে ধরেছেন। এতে ব্রিফ করেন মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক পরিচালক মীনাক্ষী গাঙ্গুলি, বিশিষ্ট মানবাধিকারকর্মী ও ফটোসাংবাদিক শহিদুল আলম, নিখোঁজ বিরোধীদলীয় কর্মী সাজেদুল ইসলাম সুমনের বোন ও ‘মায়ের ডাক’-এর প্রতিষ্ঠাতা সানজিদা ইসলাম; রবার্ট এফ কেনেডি হিউম্যান রাইটসের ভাইস প্রেসিডেন্ট (ইন্টারন্যাশনাল অ্যাডভোকেসি অ্যান্ড লিটিগেশন) অ্যাঞ্জেলিটা বায়েনেস এবং এশিয়া হিউম্যান রাইটস কমিশনের লিয়াজোঁ অফিসার মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান ছাড়াও এতে কংগ্রেসের সদস্য ও কর্মকর্তাবৃন্দ, সাংবাদিক এবং আগ্রহী অনেকেই উপস্থিত ছিলেন। সভায় গুম এবং অন্যান্য নির্যাতন বন্ধ করার জন্য বাংলাদেশ সরকারকে চাপ দিতে ভূমিকা রাখতে যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেস এবং যুক্তরাষ্ট্র সরকার কি কি ব্যবস্থা নিতে পারে সে বিষয়ে ব্রিফ করা হয়। টম ল্যান্টোস মানবাধিকার কমিশনের দুই কো-চেয়ার এবং কংগ্রেস সদস্য জেমস পি. ম্যাকগভেন এবং ক্রিস্টোফার এইচ. স্মিথের আয়োজনে ওই সভায় বক্তারা বাংলাদেশে গুম বন্ধে জবাবদিহিতা নিশ্চিতের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ভূমিকার ওপর জোর দেন।
কংগ্রেসনাল রিসার্চ সার্ভিসেসের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক বিশেষজ্ঞ ব্রস ভনের সঞ্চালনায় ব্রিফিংয়ের শুরুতে মীনাক্ষী গাঙ্গুলি বলেন, মানবাধিকার কর্মী, সাংবাদিক, সুশীল সমাজ, রাজনৈতিক বিরোধীদের জন্য কাজ করা খুব চ্যালেঞ্জিং। সরকার ক্রমাগতভাবে গুমের ঘটনার তদন্ত করতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছে এবং জড়িতদের জবাবদিহিতার আওতায় আনছে না। সমালোচকদের মুখ বন্ধ করতে গুম এবং ‘গুম করার ভয়’কে ব্যবহার করা হচ্ছে। ব্যাপক সহিংসতা ও দুর্নীতির মাধ্যমে গভীরভাবে প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনের মাধ্যমে এই নিয়ে টানা তিনবার আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে। ২০০৯ সাল থেকে ৬০০ জন গুম হয়েছেন। ২০১৪ এবং ২০১৮-এর নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গুমের ঘটনা বেড়ে যায়। সরকারের সমালোচকরা এখনো গুম হওয়ার ভয়ে থাকেন।
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের এবং অন্যান্য দায়িত্বশীল সরকারগুলোকে গুম এবং অন্যান্য ভয়াবহ নির্যাতনের সঙ্গে জড়িত নিরাপত্তা বাহিনীর উচ্চপদে আসীন ব্যক্তিদের সুনির্দিষ্ট করে তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেয়া উচিত।
শহিদুল আলম তাকে ধরে নিয়ে যাওয়ায় অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে বলেন, সম্ভবত আমার পরিবার ও বন্ধুদের নিরলস চেষ্টায় এবং আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিতির কারণে আমি এখনো বেঁচে আছি। আদালতে বিচারক আমার পরিবারকে বলেন, ‘আপনারা ভাগ্যবান যে, তিনি গুম হয়ে যাননি।’ তিনি প্রশ্ন করেন, এই আলোচনার আগে সরকার চিঠি লিখে জবাব দিয়েছে। কিন্তু তারা কেন গুম হওয়া মানুষের পরিবারগুলোকে কোনো জবাব দেয় না? কেন একটি ঘটনারও তদন্ত হয় না? নিজ দেশের জনগণকে সাড়া না দেয়া বৈধ কোনো সরকারের কাজ হতে পারে না? বৈধ কোনো সরকার আছে কিনা সেটাও একটা প্রশ্ন। সানজিদা ২০১৪ সালের নির্বাচনের ঠিক আগে তার ভাইকে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে বলেন, আমার ভাইকে ফেরত চাই। সে অপরাধী ছিল না। অন্যরাও কেউ অপরাধী ছিল না। তারা ছিল শুধুই বিরোধী দলের সমর্থক। কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়। সরকারকে এসব তদন্ত করতে হবে, জবাব দিতে হবে। আমরা সবার সাহায্য চাই। কারণ মানবাধিকার সংগঠনগুলো লাগাতার এসব নিয়ে প্রশ্ন তুললেও বারবার সব অস্বীকার করা হচ্ছে।
আশরাফুজ্জামান বলেন, এসব মানবতাবিরোধী অপরাধ। জাতিসংঘের স্বাধীন মানবাধিকার কর্মীদের বক্তব্যকেও সরকার অবজ্ঞা করে। এমনকি সংসদেও গুমের বৈধতা দিয়ে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যেও এসব ঘটে থাকে। সরকারের এসব অস্বীকার এবং অবজ্ঞার কারণে এসবের সঙ্গে জড়িত নিরাপত্তা বাহিনীগুলোও আস্কারা পেয়ে, দায়মুক্ত হয়ে নিয়মিতভাবে গুমের ঘটনা ঘটাচ্ছে। এসব সংস্থা গুমের শিকার পরিবারের সদস্যদেরও নানাভাবে হয়রানি করে। বাংলাদেশের সরকার সামগ্রিকভাবে সমাজে ভয়ের সংস্কৃতি চালু করেছে। আমি বিশ্বাস করি এই কমিশনের সদস্যরা কমিশনের ম্যান্ডেট অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসের ভূমিকা এবং দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে এসব রোধে এবং জড়িতদের জবাবদিহিতা নিশ্চিতে দ্রুত আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।
অ্যাঞ্জেলিটা বলেন, বাংলাদেশে নাগরিকদের ওপর বিশেষ করে সরকারি দলের বিরোধিতাকারীদের ওপর বিভিন্ন নির্যাতনের কথা আমরা শুনেছি। বাংলাদেশ সরকারকে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে বারবার সতর্ক করা হয়েছে। জড়িতদের দায়মুক্তি এবং এ ধরনের ঘটনা না থামার বিষয়ে বিচার বিভাগের স্বাধীন তদন্ত এবং বিচারের অনুপস্থিতি প্রমাণ করে যে, সরকার সেগুলোর জবাবদিহি করতে চায় না। সুশীল সমাজ এসব নিয়ে কথা বললে সরকার সেসব কানে তোলেনি উল্টো তাদের মুখ বন্ধ করতে ২০১৮ সালে প্রণীত ‘ড্রাকোনিয়াল ল’ ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টসহ সব ধরনের পন্থাই অবলম্বন করেছে। এসব নিয়ে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো লাগাতার কথা বলে যাচ্ছে। আমরাও এসব নিয়ে কাজ করতে গিয়ে দেখেছি সরকার সব অস্বীকার করছে। শুধু সুশীল সমাজই নয়, জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক সংস্থা এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট বার্ষিক মানবাধিকার প্রতিবেদনে এই নিয়ে বেশ কয়েক বছর ধরে এসব কথা বলেছে। কিন্তু উন্নতির কোনো লক্ষণ নেই। গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যা এবং অন্যান্য নির্যাতনের কারণে শুধু সুশীল সমাজই কথা বলতে পারছে না তা নয়, সাংবাদিকরা হাত খুলে লিখতে পারছে না, নাগরিকরা সমালোচনা করতে পারছে না। তাহলে প্রশ্ন আসে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কি ভূমিকা রাখতে পারে? যুক্তরাষ্ট্রই বা কি ভূমিকা রাখতে পারে? এক্ষেত্রে এইচআরডব্লিউ-এর কিছু সুপারিশের কথা অ্যাঞ্জেলিটা উল্লেখ করেন, যে পদক্ষেপগুলো যুক্তরাষ্ট্র সরকার গ্রহণ করতে পারে : বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনীগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক পর্যালোচনা করা, জড়িত বাহিনীগুলো বিশেষ করে র্যাব বিলুপ্ত করার আহ্বান জানাতে পারে, তাদেরকে আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষী বাহিনী থেকে দূরে রাখতে বলতে পারে এবং গুরুত্বপূর্ণ হলো বাহিনীর উচ্চপদস্থ যেসব কর্মকর্তা গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যা এবং অন্যান্য নির্যাতনের সঙ্গে যুক্ত তাদের ওপর সুনির্দিষ্ট নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারে।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, জড়িতদের যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা দেয়া বন্ধ করা যেতে পারে এবং তাদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করতে পারে। বাংলাদেশকে এই অঞ্চলে বন্ধু হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের দেয়া সাহায্যের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলে ২০২৩-এর নির্বাচনকে সামনে রেখে বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষ যেমন বুঝতে পারবে তার আন্তর্জাতিক রীতিনীতি এবং যুক্তরাষ্ট্রের আইনের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা উচিত তেমনি অন্যান্য সহযোগী দেশরাও এ থেকে শিক্ষা নিতে পারবে। এক প্রশ্নের জবাবে আশরাফুজ্জামান বলেন, নিরাপত্তা বাহিনীকে বিচারহীনতার আওতায় রেখে কর্মকান্ড চালাতে দিয়ে ভিন্নমতের কণ্ঠ রোধ করা হচ্ছে। কাউকে গ্রেফতার এবং গুমের জন্য কিংবা নির্বাচনে কারচুপির জন্য যখন কেউ বীর হিসেবে পুরস্কৃত হন, তখন পরিস্থিতি বুঝতে কষ্ট হওয়ার কথা নয়। আরেক প্রশ্নের জবাবে শহিদুল বলেন, যখন রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করা হয়, তখন নতুন সরকার আসলেই যে এসবের পরিবর্তন হবে তা নয়। আসলে এই প্রক্রিয়াটি বন্ধ করতে হবে। তবে তা করতে হলে প্রথমেই একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করতে হবে। আমরা এমন একটা সময়ে আছি যখন নির্বাচনে জয়ী হতে জনগণের ভোটের প্রয়োজন নেই। যতক্ষণ জনগণের কাছে সরকারের জবাবদিহিতা করতে হচ্ছে না ততক্ষণ যে সরকারই থাকুক না কেন এসব চলতেই থাকবে। আমি এরশাদ সরকারের সময়ও প্রশ্ন করেছি, বিএনপি সরকারের সময়ও করেছি, এখন আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ও করছি। কিন্তু সমস্যা হলো আওয়ামী লীগ সরকার দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতায় আছে এবং তারা এটাকে এমন জায়গায় নিয়ে গেছে যা আর সহ্য করা যাচ্ছে না।
এক প্রশ্নের জবাবে মীনাক্ষী বলেন, ২০১৪ এবং ২০১৮ দুটো নির্বাচনই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সুষ্ঠু বলে মেনে নেয়নি। নির্বাচনে কারচুপি করতে গেলে নিরাপত্তা বাহিনীর সহায়তা প্রয়োজন হয়। আর তা থেকেই নিরাপত্তা বাহিনী কোনো ধরনের চ্যালেঞ্জের ঊর্ধ্বে উঠে গেছে। সংসদে কেউ সরকারের বিরুদ্ধে প্রশ্ন তুলবে সে অবস্থাও নেই। করোনা মোকাবিলা নিয়ে সারা বিশ্বেই তুমুল সমালোচনা হচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশে এ নিয়ে নিজেদের মতপ্রকাশ করতে গিয়ে লেখক মুশতাক আহমেদ এবং কার্টুনিস্ট আহমেদ কিশোরের যে পরিণতি হয়েছে, সেটি আমাদের উদ্বিগ্ন করে তোলে। নাইন-ইলেভেনের পর সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের প্রেক্ষিতে (সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়তে বিশেষ বাহিনীর প্রয়োজনে) ২০০৪ সালে বিএনপি সরকারের সময় বাংলাদেশে র্যাব গঠন করা হয়। তখন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যও এটা গঠনে সাহায্য করেছিল। কিন্তু র্যাবের মাধ্যমে ক্রসফায়ারের ঘটনা ঘটতে থাকলে যুক্তরাষ্ট্রও তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে। কিন্তু এখন এমন অবস্থায় এসেছে যে র্যাবকে বিলুপ্তির কথা বলতে হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস রাজ্য থেকে ১১ বার নির্বাচিত ডেমোক্রেট দলীয় কংগ্রেস সদস্য শীলা জেকসন লি বলেন, এসবের সঙ্গে জড়িতদের বলবো আপনারা যতোই অস্বীকার করুন, পাত্তা না দিন আমরা বাংলাদেশের কথা শুনেছি, সারা বিশ্ব শুনেছে। এখন আমাদের কমিশনের মাধ্যমে এর সদস্যরাও নিশ্চয়ই যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। তিনি প্রশ্ন করেন, এই পরিস্থিতির উত্তরণে নাগরিক সমাজ এবং মানবাধিকার সংস্থাগুলোকে কীভাবে যুক্তরাষ্ট্র সহায়তা করতে পারে? শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের নিয়োগের বিষয়েই বা কী করা যেতে পারে? এর জবাবে অ্যাঞ্জেলিটা বলেন, এ ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র অভিযুক্তদের নিয়োগের (শান্তিরক্ষী) সময় তার ভেটো দেয়ার ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারে। এমনকি মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে সুনির্দিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধেও যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা জারি করতে পারে।
নির্বাচন বিষয়ে শহিদুল বলেন, প্রথমত একটি স্বাধীন নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে যারা যেকোনো সরকারের সামনে শিরদাঁড়া উঁচু করে দাঁড়িয়ে সবসময় সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করতে পারবে। এদিকে, মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে সরকারের ছয়জন শীর্ষস্থানীয় সদস্য ও র্যাবের নয়জন সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার দাবি জানিয়ে ব্রিটিশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে মানবাধিকার সংস্থা ‘গ্যারনিকা ৩৭’।
ডয়চে ভেলের এক প্রতিবেদনে একথা নিশ্চিত করে বলা হয়, এক বিবৃতিতে সংস্থাটি র্যাবের কর্মকর্তারা শত শত বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ড, গুম ও নির্যাতনের সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ করে বলেছে, ২০১৫ সাল থেকে ৪৪০টি বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ডের সঙ্গে র্যাব কর্মকর্তারা জড়িত। ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে ‘মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ’ অভিযান চলার সময় এমন হত্যাকান্ডের সংখ্যার নাটকীয় বৃদ্ধি ঘটে। এ ছাড়া তিনটি মানবাধিকার সংস্থা- হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, রবার্ট এফ কেনেডি হিউম্যান রাইটস ও এশিয়ান হিউম্যান রাইটস কমিশন- গত সোমবার এক বিবৃতিতে বলেছে, বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ড ও অন্যান্য মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িত থাকার দায়ে বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট বিদেশি সরকারগুলোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা উচিত। মানবাধিকার কর্মী, সমালোচক ও বিরোধী দলের সদস্যদের গুমের বিষয়গুলো তদন্তে বাংলাদেশ সরকার কোনো উদ্যোগ নেয়নি।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এশিয়া বিষয়ক পরিচালক ব্র্যাড অ্যাডামস বলেছেন, বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের আন্তর্জাতিক ভ্রমণ, বিদেশে থাকা তাদের সম্পদ ও আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সেবা গ্রহণে তাদের ওপর যেন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয় সেটা সরকারগুলোর (বিদেশি) নিশ্চিত করা উচিত।