৬০ কোটি শিশুর শিক্ষাজীবন অচল, ‘এ অবস্থা চলতে পারে না’
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ০২:১০ এএম, ২৯ জুলাই,বৃহস্পতিবার,২০২১ | আপডেট: ০৫:৩৬ এএম, ২১ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
যত দ্রুত সম্ভব অবশ্যই বন্ধ স্কুল খুলে দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ। মঙ্গলবার বলা হয়েছে, স্কুল বন্ধ থাকার কারণে বিশ্বে কমপক্ষে ৬০ কোটি শিশুর শিক্ষাজীবন অচল হয়ে আছে। জেনেভায় সাংবাদিকদের কাছে জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক তহবিল ইউনিসেফের মুখপাত্র জেমস এল্ডার বলেছেন, এই অবস্থা চলতে পারে না। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।
জেমস এল্ডার আরো বলেছেন, বিভিন্ন সরকার কোভিড-১৯ সঙ্কট মোকাবিলা এবং এই রোগের বিস্তার যতটা সম্ভব কমিয়ে রাখার জন্য পদক্ষেপ নিয়েছে। এই জটিল পছন্দের বিষয় তিনি মানেন। তার মতে, তা সত্ত্বেও সব কিছুর মধ্যে সবার শেষে স্কুল বন্ধ করা উচিত এবং সবকিছুর আগে স্কুল খুলে দেয়া উচিত। তিনি স্কুল খুলে দেয়ার আগে বিভিন্ন দেশে বার এবং পাবগুলো খুলে দেয়াকে এক ভয়াবহ ভুল বলে আখ্যায়িত করেন।
তিনি বলেন, সব শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীকে টিকা দেয়া পর্যন্ত স্কুল খোলার জন্য অপেক্ষা করা যাবে না। মহামারিতে অর্থনৈতিক কঠিন অবস্থা সত্ত্বেও সরকারগুলোকে তাদের শিক্ষা বিষয়ক বাজেট সুরক্ষিত রাখারও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। পৃথিবীর উত্তর গোলার্ধের শিশুরা এখন তাদের গ্রীষ্মকালীন ছুটিতে আছে। পক্ষান্তরে পূর্ব ও দক্ষিণ আফ্রিকায় শতকরা প্রায় ৪০ ভাগ স্কুলবয়সী শিশু বর্তমানে স্কুলের বাইরে রয়েছে। স্কুলগুলো বন্ধ করা হয়েছে করোনা ভাইরাস মহামারির কারণে। এর ফলে ওই অঞ্চলে কমপক্ষে ৩ কোটি ২০ লাখ শিশু স্কুলের বাইরে রয়েছে অথবা খুলে দেয়া ক্লাসে ফিরে যেতে ব্যর্থ হয়েছে। করোনা মহামারি আঘাত করার আগে স্কুলের বাইরে থাকা শিশুর সংখ্যা ছিল ৩ কোটি ৭০ লাখ। তার সঙ্গে এই সংখ্যা যোগ হয়েছে। এশিয়া ও প্যাসিফিক অঞ্চলের প্রায় অর্ধেক দেশে মহামারির কারণে কমপক্ষে ২০০ দিন বন্ধ রয়েছে স্কুল। জেমস এল্ডার বলেছেন, দক্ষিণ আমেরিকা এবং ক্যারিবিয়ান অঞ্চলে ১৮টি দেশ এবং ভূখন্ডে স্কুলগুলো হয়তো পুরোপুরি, না হয় আংশিক বন্ধ। তার ভাষায়, বিশ্বজুড়ে শিক্ষা, নিরাপত্তা, বন্ধুত্ব, খাদ্যের স্থানে জায়গা করে নিয়েছে উদ্বেগ, সহিংসতা এবং টিনেজ মেয়েদের অন্তঃসত্ত্বার বিষয়। উগান্ডার প্রসঙ্গ তুলে ধরে তিনি বলেন, এই দেশটিতে ২০২০ সালের মার্চ থেকে এ বছর জুন পর্যন্ত ১০ থেকে ২৪ বছর বয়সী মেয়েদের শতকরা কমপক্ষে ২০ ভাগের অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে।
ইউনিসেফ বলেছে, বিশ্বজুড়ে বাসায় বসে পড়াশোনা এক-তৃতীয়াংশ শিক্ষার্থীর ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং প্যাসিফিক অঞ্চলে স্কুল বন্ধ থাকায় কমপক্ষে ৮ কোটি শিক্ষার্থীর বাসায় বসে পড়াশোনা করার প্রয়োজনীয় সুবিধা নেই। উগান্ডায় স্কুলগুলো বন্ধ রয়েছে ৩০৬ দিন ধরে। সেখানে শতকরা মাত্র ০.৩ ভাগ বাড়িতে আছে ইন্টারনেট সংযোগ। জেমস এল্ডার বলেন, বিশ্বব্যাংকের এক হিসাব মতে, এই মহামারিতে এই প্রজন্ম ১০ ট্রিলিয়ন ডলার আয় হারাবে।