করোনায় জীবনরক্ষাকারী নতুন ওষুধ সুপারিশ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২:৩৪ এএম, ৮ জুলাই,বৃহস্পতিবার,২০২১ | আপডেট: ০২:৫১ এএম, ১৮ নভেম্বর,সোমবার,২০২৪
ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ, ইন্দোনেশিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকাসহ বিশ্বের অনেক দেশ যখন লড়াই করছে, তখন এর চিকিৎসায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নতুন একটি ওষুধ সুপারিশ করেছে। করোনায় মারাত্মকভাবে আক্রান্ত রোগীদের জীবনরক্ষাকারী ওষুধ হিসেবে এ ওষুধ অনুমোদন দিয়েছে তারা। এর নাম ইন্টারলিউকিন-৬। বিশ্বজুড়ে এখনও করোনা মহামারি অব্যাহত রয়েছে। এর প্রেক্ষিতে এই রোগের কার্যকর চিকিৎসা হিসেবে ইন্টারলিউকিন-৬’কে সুপারিশ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, কর্টিকোস্টেরয়েডের পাশাপাশি যখন ইন্টারলিউকিন-৬ ব্যবহার করা হয় তখন এটি ভাল কাজ করে।
উল্লেখ্য, কর্টিকোস্টেরয়েড ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে ব্যবহারের জন্য সুপারিশ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
এর মহাপরিচালক টেডরোস আধানম ঘেব্রেয়েসাস এক বিবৃতিতে বলেছেন, কোভিড ১৯-এর মারাত্মক ও গুরুতর আক্রান্ত ব্যক্তিদের নিয়ে যেসব পরিবার ভয়াবহ দুর্ভোগে আছে, তাদের এই ওষুধগুলো আশা জাগিয়ে দেখাবে। রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার ওভাররিঅ্যাকশন থেকে অনেক সময় রোগীরা মারাত্মক দুর্ভোগে ভোগেন। সেক্ষেত্রে ইন্টারলিউকিন-৬ (যার মধ্যে আছে টোসিলিজুমাব এবং সারিলুমাব) এই অতিমাত্রায় ওভাররিঅ্যাকশন বা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াকে বন্ধ করবে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, এই ওষুধটি মারাত্মক অসুস্থ রোগীদের ওপর পরীক্ষা করা হয়েছে। তাতে দেখা গেছে, আক্রান্ত এক হাজার রোগীর মধ্যে মৃত্যুর সংখ্যা ১৫-এর নিচে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় আছেন এমন রোগীদের ওপর ইন্টারলিউকিন ৬-এর পরীক্ষায় দেখা গেছে, প্রতি এক হাজার জনের মধ্যে মৃত্যুর সংখ্যা ২৮-এরও কম। এই ওষুধগুলো মারাত্মক ও আশঙ্কাজনক রোগী, যারা ভেন্টিলেটরে রয়েছেন, তাদের ওপর প্রয়োগ করায় তাদের মৃত্যুর হার কমিয়ে দেয় শতকরা ২৮ ভাগ।
আল-জাজিরা লিখেছে, এরই মধ্যে করোনার টিকা দরিদ্র দেশগুলোর হাতের নাগালে পাওয়ার জন্য টিকার প্যাটেন্ট সুরক্ষা প্রত্যাহার দাবি করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। ওষুধের ক্ষেত্রে ‘ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি ব্যারিয়ার্স’ প্রত্যাহারেরও দাবি জানানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, টোসিলিজুমাব এমন এক শ্রেণির ওষুধ, যাকে বলা হয় মনোক্লোনাল এন্টিবডিস (এমএবিএস)। আর্থাইটিস এবং ক্যান্সারসহ বিভিন্ন রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয় এই ওষুধ। এ ওষুধ প্রস্তুত করে সুইজারল্যান্ডের জায়ান্ট ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান রোচে। তারা ‘একটিমরা’ ব্রান্ড নামে এই ওষুধ বিক্রি করে। এসব ওষুধ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সুপারিশ করার পর ডক্টরস উইদাউট বর্ডার্স এরই মধ্যে রোচে’র কাছে আহ্বান জানিয়েছে এই ওষুধের দাম কমিয়ে মানুষের সামর্থ্যরে এবং সক্ষমতার অধীনে আনার জন্য। একই সঙ্গে তা বিশ্বজুড়ে উৎপাদনের আহ্বান জানানো হয়েছে। সূত্র : আল-জাজিরা