বেড়েছে পেঁয়াজের ঝাঁজ, ঢ্যাঁড়শ-করলা ১২০, বরবটি ১৬০ টাকা কেজি
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:৪৩ এএম, ৫ মার্চ,শনিবার,২০২২ | আপডেট: ১০:০০ এএম, ২০ নভেম্বর,
বুধবার,২০২৪
সপ্তাহের ব্যবধানে রাজধানীর বাজারগুলোতে বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। কেজিতে ১৫ টাকা বেড়ে পেঁয়াজের দাম আবার ৬০ টাকায় উঠেছে। এর সঙ্গে চড়াদামে বিক্রি হচ্ছে সবধরনের সবজি। তবে অপরিবর্তিত রয়েছে ডিম, মাছ ও মুরগির দাম।
আজ শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্যবসায়ীরা এখন সব থেকে বেশি দামে বিক্রি করছেন বরবটি। এ সবজিটি কিনতে ক্রেতাদের কেজিপ্রতি ব্যয় করতে হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা। তবে একপোয়া কিনলে গুনতে হচ্ছে ৪০ টাকা। কেজি একশ টাকার ওপরে বিক্রি হচ্ছে আরও দুটি সবজি। এর মধ্যে বাজারে নতুন আসা ঢ্যাঁড়শের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১২০ টাকা। আর ভালো মানের করলার কেজি বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকা। তবে নিম্নমানের করলা কোথাও কোথাও ৫০ টাকা কেজি পাওয়া যাচ্ছে। বরবটি ও ঢ্যাঁড়শের এমন দামের বিষয়ে কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ী আলী সরদার বলেন, বাজারে নতুন আসা ভালো মানের বরবটির দাম এখন একটু বেশি। এই বরবটি খুব বেশি পাওয়া যাচ্ছে না। তবে নিম্নমানের কিছু বরবটি ৮০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। আর ঢ্যাঁড়শ নতুন এসেছে। এখন যে ঢ্যাঁড়শ পাওয়া যাচ্ছে তার মান খুব ভালো, ভালো জিনিস নিতে খরচ একটু বেশি করতে হবে এটাই স্বাভাবিক।
খিলগাঁওয়ের ব্যবসায়ী মো. জমির বলেন, বাজারে অনেক খুঁজে বরবটি ও ঢ্যাঁড়শ কিনেছি। আড়ত থেকেই আমাদের কেজি কেনা পড়েছে একশ টাকার ওপরে। ভালো মানের করলা বেশি দামে কেনা পড়েছে। এ কারণে বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।
তিনি বলেন, কমদামে সবজি খাওয়ার দিন শেষ হয়ে গেছে। আস্তে আস্তে সবধরনের সবজির দাম বাড়ছে। এখন একশ টাকার ওপরে তিনটি সবজি বিক্রি হচ্ছে। কয়দিন পর একশ টাকা কেজি হিসেবে আরও দু-একটি সবজি কিনতে হবে। ইতোমধ্যে ২০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া টমেটোর কেজি ৬০ টাকা হয়েছে। এদিকে গত সপ্তাহে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া পেঁয়াজের দাম বেড়ে এখন ৬০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। কোনো কোনো ব্যবসায়ী বাছাই করা পেঁয়াজের কেজি ৬৫ টাকা বিক্রি করছেন।
পেঁয়াজের দামের বিষয়ে মালিবাগ হাজীপাড়ার ব্যবসায়ী মো. জাহাঙ্গীর বলেন, দুই সপ্তাহ আগে পেঁয়াজের কেজি ৬০ টাকা হয়েছিল। মাঝে পেঁয়াজের দাম কমে ৪৫ টাকায় নামে। কিন্তু দুদিন ধরে পেঁয়াজের দাম আবার ৬০ টাকা হয়েছে। পাইকারি বাজারে দাম বাড়ার কারণে আমাদের এমন বাড়তি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। পাইকারিতে আমরাই পেঁয়াজের কেজি ৫৭ টাকা করে কিনেছি।
পেঁয়াজের দামের বিষয়ে কারওয়ানবাজারের ব্যবসায়ী হাবিবুর বলেন, বাজারে এখন দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ কম। আমাদের ধারণা এ কারণেই পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। সরবরাহ বাড়লে পেঁয়াজের দাম আবার কমে যাবে। দাম বাড়ার এ তালিকায় রয়েছে আলু। গত সপ্তাহে ১৫ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া আলুর কেজি এখন বিক্রি হচ্ছে ১৮ টাকা। এ তালিকায় আরও রয়েছে টমেটো। গত সপ্তাহে ৪০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া পাকা টমেটোর দাম বেড়ে এখন ৬০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা। শিমের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা। শালগমের (ওলকপি) কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা। লাউয়ের পিস বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা। লালশাকের আঁটি ১০ থেকে ১৫ টাকা, পালংশাকের আঁটি বিক্রি হচ্ছে ১০ থেকে ১৫ টাকা। বেগুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৭০ টাকা। গাজরের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা। মুলার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা। কাঁচকলার হালি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে এসব সবজির দামে পরিবর্তন আসেনি। মুরগির বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্যবসায়ীরা ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি করছেন ১৬০ থেকে ১৬৫ টাকা। আর সোনালি মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৯০ থেকে ৩২০ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে মুরগির দামে পরিবর্তন আসেনি। গরুর মাংস গত সপ্তাহের মতো ৬৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। ফার্মের মুরগির ডিমও গত সপ্তাহের মতো ১১৫ টাকা ডজন বিক্রি হচ্ছে। মাছবাজার ঘুরে দেখা গেছে, রুই মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ৪৫০ টাকা। একই দামে বিক্রি হচ্ছে কাতল মাছ। শিং ও টাকি মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা। শোলমাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৬৫০ টাকা। তেলাপিয়া ও পাঙাশ মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৭০ টাকা। এককেজি ওজনের ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ১০০০ থেকে ১২০০ টাকা। ছোট ইলিশ মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা। নলামাছ বিক্রি হচ্ছে ১৭০ থেকে ২০০ টাকা কেজি। চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা কেজি। সপ্তাহের ব্যবধানে মাছের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।