৯ লক্ষণই বলে দেবে আপনি ডিপ্রেশনে ভুগছেন
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ০৩:০৪ এএম, ২৭ ফেব্রুয়ারী,রবিবার,২০২২ | আপডেট: ০৭:১৫ পিএম, ২২ নভেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
ডিপ্রেশন কখনো কখনো মৃত্যুর কারণ হয়েও দাঁড়ায়। শারীরিক নানা সমস্যা নিয়ময়ে সবাই তৎপর হলেও মানসিক সমস্যার বিষয়টি এড়িয়ে যান সবাই। আর এ কারণেই ডিপ্রেশন বা হতাশা নামক মানসিক ব্যাধি বেড়ে যায়। দুশ্চিন্তা কিংবা হতাশা দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলে মনে ও শরীরে। মনোবিদদের মতে, জীবনে বড় কোনো কিছুর থেকে আঘাত পাওয়া যেমন- ব্যক্তিগত, আর্থিক, বন্ধুবান্ধব, সঙ্গীর সঙ্গে বিচ্ছেদ, ঘনিষ্ঠ মানুষের মৃত্যু থেকে হতাশার সৃষ্টি হয়। আর সেখান থেকেই ধীরে ধীরে মানসিক রোগের শিকার হন অনেকেই। সমীক্ষায় দেখা গেছে, মধ্যবয়সীরা সবচেয়ে বেশি এই একাকিত্বে ভুগছেন। বয়স্করাই মূলত একাকিত্বে বেশি ভোগেন। তবে বেশ কিছু সমীক্ষায় দেখে গেছে, বর্তমান প্রজন্মের মধ্যে বেশিরভাগ তরুণরাই এখন ডিপ্রেশনে ভুগছেন। এক্ষেত্রে পুরুষের চেয়ে নারীরা আরও বেশি মানসিক অবসাদের শিকার হন। বেশ কয়েকটি লক্ষণ আছে যেগুলো ডিপ্রেশনের ইঙ্গিত দেয়। জানেন কি, পিঠে ব্যথা থেকে শুরু করে অতিরিক্ত শপিং এমনকি খাওয়া দাওয়াও হতে পারে ডিপ্রেশনের লক্ষণ। জেনে নিন ডিপ্রেশন হলে আরও যেসব লক্ষণ দেখা দেয়-
অতিরিক্ত কেনাকাটা : বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, হতাশাগ্রস্ত মানুষরা মার্কেট কিংবা ইন্টারনেট থেকে অতিরিক্ত শপিং করেন। যা অনেকটাই অস্বাভাবিক। এটি তাদেরকে মানসিক প্রশান্তি দেয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অতিরিক্ত কেনাকাটা বাইপোলার ডিসঅর্ডারেরও লক্ষণ হতে পারে।
ভুলে যাওয়া : বিষণœতা বা ভুলে যাওয়া ডিপ্রেশনের আরও একটি সাধারণ লক্ষণ হতে পারে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, মানসিক চাপের কারণে শরীরে কর্টিসলের মাত্রা বেড়ে যায়। এর ফলে ভুলে যাওয়ার সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই নিয়মিত ছোট বা বড় বিষয় ভুলে যাওয়ার সমস্যা অবহেলা করবেন না।
অতিরিক্ত ইন্টারনেট ব্যবহার : বর্তমানে ইন্টারনেটে আসক্ত হয়ে পড়েছে ছোট-বড় সবাই। জানেন কি, ইন্টারনেটে অত্যধিক সময় কাটানোও হতে পারে ডিপ্রেশনের লক্ষণ। গবেষণায় দেখা গেছে, অতিরিক্ত বিষণœতা ও অত্যধিক ইন্টারনেট ব্যবহারের মধ্যে যোগসূত্রতা আছে। যারা অতিরিক্ত ইন্টারনেট ব্যবহার করেন তারা পর্নোগ্রাফি, বিভিন্ন অনলাইন গ্রুপ ও গেম সাইটগুলোতে সময় কাটান।
অতিরিক্ত খাওয়া ও স্থূলতা : ২০১০ সালে আলাবামা বিশ্ববিদ্যালয়ের করা এই গবেষণায় দেখা গেছে, ডিপ্রেশনে ভোগা বেশিরভাগ মানুষই অতিরিক্ত ওজনে ভোগেন। যা বাড়িয়ে দেয় হৃদরোগের ঝুঁকি। অন্যান্য গবেষণা অনুসারে, যারা ডিপ্রেশনে ভোগেন তারা খাবার খাওয়া নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না। বিশেষ করে মধ্যবয়সী লোকদের মধ্যে এ সমস্যা বেশি দেখা যায়।
চুরি করা : জানেন কি, প্রায় এক-তৃতীয়াংশ ডিপ্রেশনে ভোগা মানুষরা দোকান থেকে ছোটখাট বিভিন্ন জিনিস চুরি করেন। এতে তারা মানসিকভাবে তৃপ্তি অনুভব করেন। যারা বিষণœতার কারণে কেনাকাটা করেন, তাদের মধ্যেই ছোটখাট চুরি করার বিষয়টি দেখা যায়। যদিও এই চুরিগুলো তারা নিজেদের অজান্তেই করেন।
পিঠে ব্যথা : ডিপ্রেশনের কারণে পিঠে ব্যথাও হতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, বিষণœতার কারণে দীর্ঘস্থায়ী পিঠের নিম্নাংশে ব্যথা হতে পারে। এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, দীর্ঘস্থায়ী পিঠে ব্যথায় আক্রান্ত ৪২ শতাংশ ব্যক্তিরাই বিষণœতা অনুভব করেছেন।
অতিরঞ্জিত আবেগ : হঠাৎ করেই খুশি হওয়া, কান্না করা অথবা রেগে যাওয়া ইত্যাদি বিষয়গুলো সাধারণভাবে নেবেন না কখনো। কারণ এগুলো হতে পারে ডিপ্রেশনের লক্ষণ। এমন ব্যক্তিদের মেজাজ দ্রুত পরিবর্তন হয়।
ধূমপান : হতাশাগ্রস্ততা ধূমপানের ঝুঁকি দ্বিগুণ বাড়িয়ে দেয়। সিডিসির তথ্য অনুসারে, দিনে এক প্যাকেটের বেশি ও ঘুম থেকে ওঠার ৫ মিনিটের মধ্যেই সিগারেট খাওয়া হতাশাগ্রস্ত ধূমপায়ীদের মধ্যে সাধারণ অভ্যাস। এমন ব্যক্তিরা সহজে ধূমপান ছাড়তে পারেন না। এমন ক্ষেত্রে চিকিৎসকরা বিহেভিয়ারাল থেরাপি বা অ্যান্টি ডিপ্রেসেন্ট ওষুধ দিয়ে থাকেন রোগীকে।
নিজের খেয়াল না রাখা : বেশিরভাগ হতাশাগ্রস্ত ব্যক্তিরাই নিজের বিষয়ে উদাসহীন থাকেন। নিজের পরিচর্যা করতে আলসেমি বোধ করেন তারা। যেমন- দাঁত ব্রাশ না করা, চুল না আচড়ানো, ত্বকের যত্ন না করা, পরিষ্কার কাপড় না পরা ইত্যাদি বিষয়গুলো ফুটে ওঠে তাদের মধ্যে। এমন ব্যক্তিরা নিজের অসুখ নিয়েও চিন্তিত থাকেন না। এসব লক্ষণের যে কোনো একটিও যদি আপনার সঙ্গে মিলে যায়, তাহলে দেরি না করে মনোরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।