হাসপাতাল খালি নেই, হোটেল খুঁজছি - স্বাস্থ্যমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:২৪ এএম, ৪ আগস্ট,
বুধবার,২০২১ | আপডেট: ১২:১০ পিএম, ১৮ নভেম্বর,সোমবার,২০২৪
করোনায় আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য এখন হাসপাতাল খালি নেই বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেছেন, হাসপাতাল খালি নেই। হাসপাতাল করার আর জায়গাও নেই। তাই আমরা হোটেল খুঁজছি, যাতে মৃদু আক্রান্তদের সেখানে রাখতে পারি।
হাসপাতালে আসন সঙ্কট দেখা দেয়ায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কম ঝুঁকিপূর্ণ রোগীদের হোটেলে রেখে চিকিৎসা দেয়ার চিন্তা-ভাবনা সরকার করছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
আজ মঙ্গলবার সচিবালয়ে বিধিনিষেধ নিয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক সভায় সভাপতিত্ব করেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ইতিমধ্যে হাসপাতালে ৯০ শতাংশ সিট ভর্তি হয়ে গেছে, রোগী আছে সিট ফাঁকা নাই। আইসিইউ অলরেডি ৯৫ শতাংশ অকুপাইড। এই চিন্তা করে আমরা ইতিমধ্যে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি ফিল্ড হাসপাতাল তৈরি করছি। সেটার কাজ চলমান। সেখানে ইমিডিয়েটলি আমরা হয়তো ৫০০-৬০০ বেড রেডি করতে পারব। পরে তা এক হাজার বেডে নেয়া যাবে।
তিনি বলেন, আরেকটি সিদ্ধান্ত আমরা নিয়েছি, সেটা হলো- করোনা আক্রান্ত সবাইকে কিন্তু হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন পড়ে না। যেগুলো হালকা, মাইল্ড কেস, সে সব রোগীর জন্য আমরা আলাদা হোটেল ভাড়া করার চিন্তা করেছি। যে হোটেলের মধ্যে আমাদের ডাক্তার থাকবেন, নার্স থাকবেন, ওষুধপত্র থাকবে, কিছু অক্সিজেনের ব্যবস্থাও আমরা রাখবো।
মন্ত্রী বলেন, আমাদের হাসপাতাল করার আর জায়গা নেই। হাসপাতাল খালিও নেই। তাই আমরা এখন হোটেল খুঁজছি। যেখানে আমরা একটা ব্যবস্থা করতে পারি, মৃদু যারা আক্রান্ত হয়েছেন তাদের রাখতে পারি। ওখানে থেকে চিকিৎসা নিয়ে যাতে ভালো হয়ে বাড়ি যেতে পারেন। সেই ব্যবস্থাটুকু আমরা হাতে নিয়েছি। আগামী ৭ আগস্ট থেকে সাত দিনের জন্য বাংলাদেশ প্রত্যেকটি ইউনিয়ন-ওয়ার্ডে টিকা দেয়ার কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, এই সাত দিনে আমরা প্রায় এক কোটি টাকা দেব। এটাই আমাদের উদ্দেশ্য। এজন্য সভায় বিভিন্ন দফতরের সাহায্য চাওয়া হয়েছে জানিয়ে জাহিদ মালেক বলেন, টিকা দেয়ার ক্ষেত্রে গ্রামের বয়স্কদের আমরা অগ্রাধিকার দেব। পঞ্চাশোর্ধ যারা আছেন, তাদের আমরা অগ্রাধিকার দেব, এই বয়সীদের মৃত্যু এখন ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ।
তিনি বলেন, আমাদের হাতে সোয়া কোটি টিকা আছে। আরও এক কোটি টিকা আমাদের হাতে এসে পৌঁছবে। অর্থাৎ টিকা কর্মসূচি বজায় থাকবে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন এনআইডির (জাতীয় পরিচয়পত্র) মাধ্যমে আমরা ভ্যাকসিন দেব। যাদের এনআইডি নেই তাদের বিশেষ ব্যবস্থায় টিকা দেয়া হবে। এ বিষয়ে ঘোষণা আগেই দেয়া হয়েছে। সভায় স্থানীয়ভাবে টিকা উৎপাদন করার বিষয়ে জোন করে দেয়া হয়েছে জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ইতিমধ্যে আমরা চীনের সিনোফার্মের সঙ্গে এবং বাংলাদেশের একটি কোম্পানির সঙ্গে আলোচনা করেছি। সেই টিকা উৎপাদন করার কার্যক্রম অনেক দূর এগিয়ে গেছে। আমরা আইন মন্ত্রণালয়ের অনুমতিও পেয়েছি।
তিনি বলেন, পাশাপাশি আরেকটি জিনিসের ওপর গুরুত্ব দেয়া হয়েছে- ভ্যাকসিনের পাশাপাশি মাস্ক পরিধান করা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমরা যদি এটাকে সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করতে চাই, এনফোর্স করতে চাই, পুলিশকে ক্ষমতা দেয়ার প্রয়োজন রয়েছে। যাতে যারা মাস্ক পরবে না তাদের কিছুটা হলেও শাস্তি দিতে পারেন, জরিমানা করতে পারেন। একটি অধ্যাদেশ লাগবে। এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা হয়তো বা সেদিকে যাব।
জাহিদ মালেক আরও বলেন, ইতিমধ্যে গার্মেন্টস খুলে দেয়া হয়েছে। আগামীতে ধীরে ধীরে অন্যান্য শিল্পপ্রতিষ্ঠানও খুলে দেয়া হবে। ট্রান্সপোর্ট, দোকানপাটও খুলবে। এ বিষয়ে বিস্তারিত নির্দেশনা আপনারা পরে পেয়ে যাবেন। প্রসঙ্গত, সভায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে চলমান বিধিনিষেধ আরও পাঁচ দিন অর্থাৎ আগামী ১০ আগস্ট পর্যন্ত বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।