রংপুরে আগাম বন্যার পূর্বাভাস, নদী ভাঙ্গনে বাধঁ বিলীন
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:১০ পিএম, ৩০ মে,রবিবার,২০২১ | আপডেট: ০৬:৩১ পিএম, ২৬ নভেম্বর,মঙ্গলবার,২০২৪
রংপুরে আগাম বন্যার পূর্বাভাস দেখা দিয়েছে। আকস্মিকভাবে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় এই অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। দেখা দিয়েছে নদী ভাঙ্গন। উজানে ভারত থেকে নেমে আসা পানির ঢলে তিস্তার পানি বিপদ সীমার কাছাকাছি প্রবাহিত হচ্ছে।
পানির তীব্র স্রোতে কোলকোন্দ ইউনিয়নের বিনবিনয়ার চরে এলাকাবাসীর উদ্যোগে স্বেচ্ছাশ্রমে নবনির্মিত বাঁধের প্রায় আধাকিলোমিটার অংশ বিলীন হয়ে গেছে। বাঁধটি ভেঙ্গে যাওয়ার কারণে তালিয়ে গেছে চরে চাষাবাদকৃত বিভিন্ন ফসল। হুমকিতে পড়েছে কয়েকটি গ্রামের বসত-বাড়ি ও রাস্তা-ঘাট। চরের মানুষ গাছ ও বাঁশ দিয়ে ভাঙ্গন ঠেকানোর চেষ্টা করছে।
জানা গেছে, গত কয়েকদিন অনবরত বৃষ্টিপাত ও উজানে ভারত থেকে নেমে আসা ঢলে তিস্তা নদীতে পানি প্রবাহ বৃদ্ধি পেয়েছে। সৃষ্টি হয়েছে তীব্র স্রোত। এই স্রোতের করাল গ্রাসে ভেঙ্গে যাচ্ছে বিস্তীর্ণ অঞ্চল।
বিনবিনা এলাকাবাসীরা জানান, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সোহরাব আলী রাজু ও এলাকাবাসীর সহযোগিতায় তিস্তার ভাঙ্গন থেকে রক্ষা পেতে ২২ লাখ টাকা ব্যায়ে স্বেচ্ছাশ্রমে কিছুদিন আগে বাধঁ নির্মাণ করা হয়। বাঁধটির একটি অংশ ভেঙ্গে গেছে। অবশিষ্ট অংশ ভাঙ্গন থেকে রক্ষার জন্য বাঁধের ধারে জিওব্যাগ ফেলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
ফলে চাষাবাদকৃত বাদাম, ভুট্টাসহ বিভিন্ন ফসল ও সবজি ক্ষেত তলিয়ে গেছে। এছাড়া বাঁধটি রক্ষার জন্য সামনে অপর একটি সার্পোট বেড়িবাঁধ স্বেচ্ছাশ্রমে দেয়া হয়েছিলো। সেটিও ভেঙ্গে গেছে। এতে নদীভাঙ্গন ও পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় হুমকিতে পড়েছে বিনবিনা, বাঘেরহাট, শংকরদহ, পুর্ব ইচলিসহ কয়েকটি গ্রামের বাড়ি ও এসকে বাজার সংলগ্ন রংপুর-কাকিনা রোডের ব্রিজ এবং চর এলাকার রাস্তা-ঘাট সহ বিভিন্ন শিক্ষা, সামাজিক ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান।
এলাকাবাসী জানান, কয়েক বছর থেকে তিস্তানদীর মূল স্রোত সরে যাওয়ায় শেখ হাসিনা সেতুর নীচ দিয়ে পানির প্রবাহ কমে যাচ্ছে। ফলে এসকে বাজার সংলগ্ন ব্রিজ দিয়ে এখন তিস্তার পানি প্রবাহিত হচ্ছে। বাঁধটি নির্মাণ ও রক্ষাকরা গেলে তিস্তানদীর মূল স্রোতধারার পানি শেখ হাসিনা সেতু দিয়ে প্রবাহিত হবে। ফলে চরের কয়েক গ্রামের মানুষ বন্যার ক্ষতি থেকে রক্ষা পাবে।
ইউপি চেয়ারম্যান সোহরাব আলী রাজু জানান, চরবাসীকে তিস্তার ক্ষয়ক্ষতি থেকে রক্ষার জন্য বর্ষা আসার আগেই এলাকাবাসীকে সাথে নিয়ে ২২ লাখ টাকা ব্যায়ে স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধটি নির্মাণ করা হয়েছে। আকস্মিক ভাবে তিস্তার পানি বৃদ্ধি ও তিব্র স্রোতে বাঁটি ভেঙে যাওয়ায় চর বাসী এখন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে।
রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড-২ এর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সহিদ হোসেন জানান, ভারত থেকে নেমে আসা পানির ঢলে তিস্তা নদীর পানি বিপদ সীমার সামান্য নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগাম বন্যার পূর্বাভাস পাওয়া যাচ্ছে। বাঁধটি রক্ষায় পরিকল্পিত ভাবে কাজ করা হবে।