মাথা ন্যাড়া করেও রক্ষা পেল না চোর
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১১:২০ পিএম, ২৮ মে,শুক্রবার,২০২১ | আপডেট: ০৩:৫৫ পিএম, ২২ সেপ্টেম্বর,রবিবার,২০২৪
অন্ধকারে চুরি করে পালিয়ে যায় চোর। সেই চোরের সন্ধানে সিসিটিভির ফুটেজ পথ দেখায় পুলিশকে। সম্ভাব্য স্থানে গ্রেপ্তারে পুলিশি অভিযান টের পেয়ে পালিয়ে যায় চোর। শুধু পালিয়ে নয় নিজের মাথাও ন্যাড়া করে সেই চোর। পুলিশকে ফাঁকি দেওয়ার জন্য মাথা ন্যাড়া করলেও অবশেষে পুলিশের জালে তাকে আটকাতেই হলো।
নগরীর চান্দগাঁও থানার চৌধুরী স্কুল খাজা রোড চুনারটাল চৌধুরী বাড়ীর মেহেদী নবী ম্যানশনে চুরির ঘটনায় গ্রেপ্তার হয়েছে এমরান হোসেন মানিক ওরফে ছোট মানিক।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে বায়েজিদ থানার শহীদ পাড়া চার রাস্তার মাথা হোসেনের কলোনি থেকে তাকে গ্রেপ্তারের কথা শুক্রবার দুপুরে জানায় সিএমপির জনসংযোগ বিভাগ। একই ঘটনায় চোর দলের অপর দ্ইু সদস্য স্বামী-স্ত্রীকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সিএমপি সূত্র জানায়, গত ১৮ মে দিবাগত রাতে চান্দগাঁও থানার চৌধুরী স্কুল খাজা রোড চুনারটাল চৌধুরী বাড়ী মেহেদী নবী ম্যানশনের ২য় তলায় জনৈক ওমান প্রবাসী নবী হোসেরে বাড়ীতে একটি ফ্লাটের দরজা ভেঙ্গে ২১ লাখ টাকা, ১২ ভরি স্বর্ণালংকার চুরি করে নিয়ে যায় চোরের দল। এ ঘটনায় মামলা দায়ের হলে তদন্তকারী দল পাশের বিল্ডিং থেকে একটি অস্পষ্ট সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে। সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ ও পর্যালোচনা করে তদন্তকারী দল চোর চক্রকে সনাক্ত করে গ্রেপ্তারে অভিযান চালায়।
তদন্তের সকল কলাকৌশল ও গোয়েন্দা তথ্যের উপর ভিত্তি করে চোর চক্রকে সনাক্ত করতে সক্ষম হয় তদন্তকারী দল। কিন্তু চোর চক্র অত্যন্ত চালাক ও কৌশলি হওয়ায় তাদের গ্রেপ্তারে বেগ পেতে হয় তদন্তকারী দলকে। গ্রেপ্তার এড়ানোর কৌশল হিসেবে চোর মানিক চুরি করার পরেই তার মাথা ন্যাড়া করে ফেলে। কিন্তু মাথা ন্যাড়া করেও সে পুলিশের হাত থেকে রক্ষা পায়নি। বৃহস্পতিবার বিকেলে বায়েজিদ থানার শহীদ পাড়া চার রাস্তার মাথা হোসেনের কলোনি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেপ্তারের পর মানিকের কাছ থেকে চোরাই ৫ হাজার টাকা জব্দ করা হয় এবং চোরাই টাকা দিয়ে কেনা বাজাজ পালসার মোটর সাইকেলটি জব্দ করা হয়। তার স্বীকারোক্তিতে অন্য চোরদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রেখেছে পুলিশ। চোরদলকে আশ্রয় ও ঘর ভাঙ্গার সরঞ্জান প্রদানকারী কামরুল ইসলামকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নার্সিং হোস্টেল সংলগ্ন বাসা থেকে তারস্ত্রী গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের বাসা থেকে চুরি কাজে ব্যবহৃত দরজা ভাঙ্গার সরঞ্জাম ও তার ভাগে পাওয়া ৫০ হাজার টাকার মধ্যে নগদে থাকা ২০ হাজার টাকা জব্দ করা হয়। এসময় কামরুলের বাসা তল্লাশী করে ৭৮০ পিচ ইয়াবা ট্যাবলেটও জব্দ করে পুলিশ। এ ঘটনায় কামরুলের স্ত্রী আরেফা বেগম সুমি কায়সার শশিকেও গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারের পর পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানায়, কামরুল ও ছোট মানিকসহ বিভিন্ন চোরদের আশ্রয় প্রশয় প্রদান করে এবং তাদের কাছে ইয়াবা সহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্য ও ঘর ভাঙ্গার সরঞ্জামাদিসহ চুরি করার কাজের প্রাথমিক খরচ প্রদান করে। তাদের তথ্যের ভিত্তিতে পাঁচলাইশ থানার ২নং গেট আলফালা গলি এলাকায় চোরদলের অপর সদস্য বড় মানিকের ভাড়া বাসায় অভিযান চালায় পুলিশ। অভিযানকালে বড় মানিককে পাওয়া না গেলেও, উদ্ধার করা হয়েছে ১৭ হাজার টাকা এবং চুরির টাকায় কেনা একটি নতুন এলইডি টেলিভিশন।