জরিমানা দিয়ে সেই ছাগল ফিরিয়ে দিলেন ইউএনও
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:৪৭ পিএম, ২৮ মে,শুক্রবার,২০২১ | আপডেট: ০৫:৩৭ পিএম, ২০ সেপ্টেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সীমা শারমিন উপজেলা পরিষদ চত্বরের বাগানে ফুলগাছ খাওয়া সেই ছাগল মালিকের কাছে জরিমানার টাকাসহ ছাগল ফেরত দিয়েছেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার (২৭ মে) মালিক সাহারা বেগমের কাছে জরিমানার টাকাসহ ছাগলটি ফিরিয়ে দেয়া হয়। আর জরিমানার দুই হাজার টাকা নিজেই পরিশোধ করেন ইউএনও।
গত ১৭ই মে আদমদীঘি উপজেলা পরিষদ চত্বরের বাগানে ফুলগাছ খাওয়া একটি ছাগলকে আটকে রেখে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে মালিককে দুই হাজার টাকা জরিমানা করেন ইউএনও। কিন্তু ওই ছাগল মালিক দরিদ্র হওয়ায় জরিমানার টাকা দিতে পারেননি।
পরে জরিমানার জন্য ওই ছাগল বিক্রি করে দেয়ার অভিযোগ উঠে। এ নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনা শুরু হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল বিকালে জরিমানার টাকাসহ ছাগলটি ফিরিয়ে দেয়া হয়।
এ বিষয়ে ইউএনও সীমা শারমিন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে উপজেলা চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম খান ও গণ্যমাণ্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে ওই নারীকে ছাগল ফেরত দেয়া হয়েছে। জরিমানা টাকা আমি দিয়েছি। তাকে সংশোধনের জন্য জরিমানা করেছিলাম, শাস্তি দেয়ার জন্য নয়।
তিনি আরও বলেন, মোবাইল কোর্টের টার্গেট অন্য কিছু ছিল না। জাস্ট সংশোধনের জন্য তাকে ছাগল ফেরত দেয়া হয়েছে। আর ছাগল বিক্রির অভিযোগ ভিত্তিহীন। জরিমানা করার পর ছাগল আমার এখানে নিরাপত্তার জন্যই জিম্মায় রাখা হয়েছিল একজনের কাছে। যাতে ছাগলের কোনো ক্ষতি না হয়।
সাহারা বেগম উপজেলা পরিষদ চত্বরের ডাকবাংলো সংলগ্ন এলকায় বসবাস করেন। তার স্বামীর নাম জিল্লুর রহমান। গত ১৭ মে তার ছাগলটি হারিয়ে যায়। অনেক জায়গায় তিনি ছাগলটির সন্ধান করেন। পরে এলাকার লোকজন তাকে জানায়, ছাগলটি ইউএনওর এক নিরাপত্তা কর্মীর নিকট রয়েছে।
তিনি ইউএনওর বাসার পাশে গিয়ে এক নিরাপত্তাকর্মীকে ছাগলকে ঘাস খাওয়াতে দেখেন। এ সময় সাহারা বেগম ছাগল নিতে চাইলে তাকে ছাগল দেওয়া যাবে না বলে সাফ জানিয়ে দেয় ওই নিরাপত্তাকর্মী।
নিরুপায় হয়ে তিনি ইউএনওর কাছে গেলে তাকে তিনি বলেন, ‘ফুলগাছের পাতা খাওয়ার অপরাধে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে দুই হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানার টাকা দিয়ে ছাগল নিয়ে যান। ’জরিমানার টাকা পরিশোধ করতে না পারায় ইউএনও গত শনিবার ছাগলটি বিক্রি করে দিয়েছেন বলে সাহারা খাতুন অভিযোগ করেন।
সাহারা বেগম জানান, ইউএনও’র বাসার গৃহকর্মী তাকে জানায় ছাগলটি পাঁচ হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়েছে। জরিমানার দুই হাজার টাকা বাদ দিয়ে বাঁকি তিন হাজার টাকা নিয়ে আসার জন্য বলে ওই গৃহকর্মী।
তবে এ বিষয়ে ইউএনও বরাবর বলে আসছেন তিনি ছাগল বিক্রি করেননি, জিম্মায় রেখেছেন উপজেলা পরিষদের পরিচিত এক ব্যক্তির কাছে। ইউএনও সীমা শারমিন জানান, উপজেলা চত্বরে একটি পার্ক করা হয়েছে। সেখানে বিভিন্ন জায়গা থেকে ফুলের গাছ নিয়ে এসে লাগানো হয়েছে।
কিন্তু এখানে ওই ছাগল এসে গাছের ফুলগুলো খেয়ে নিয়েছে কয়েকবার। এ বিষয়ে ছাগলের মালিককে সতর্ক করা হয়েছে। কিন্তু উনি কথা শোনেন নি। এ কারণে গণ-উপদ্রুপ আইনে ভ্রাম্যমাণ আদালতে দুই হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।