জোয়ারের পানি আরও বাড়ার আশঙ্কা, ৩ নম্বর সংকেত বহাল
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:০৯ এএম, ২৮ মে,শুক্রবার,২০২১ | আপডেট: ১০:০৫ এএম, ১৮ সেপ্টেম্বর,
বুধবার,২০২৪
ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’ আরও দুর্বল হয়ে ভারতীয় ভূখন্ডে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এর প্রভাবে বাংলাদেশের চারটি সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত বহাল রাখা হয়েছে। একইসঙ্গে উপকূলীয় এলাকায় জোয়ারের পানি আরও বাড়ার আশঙ্কার কথা জানিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ।
আজ বৃহস্পতিবার আবহাওয়ার এক সতর্কবার্তায় আবহাওয়া অধিদফতর এ তথ্য জানিয়েছে।
এতে বলা হয়, ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’ আরও উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর ও দুর্বল হয়ে আজ বৃহস্পতিবার ভোর ৬টায় গভীর নিম্নচাপ আকারে উত্তর উড়িষ্যা ও কাছাকাছি ঝাড়খন্ড এলাকায় অবস্থান করছিল। গভীর নিম্নচাপটি আরও উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে ক্রমান্বয়ে দুর্বল হতে পারে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্য বিরাজ করছে। সাগর উত্তাল রয়েছে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে সতর্কবার্তায়। বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্য ও পূর্ণিমার প্রভাবে খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, ভোলা, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর ও চট্টগ্রাম জেলার নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে দুই থেকে চার ফুট বেশি উচ্চতার জোয়ারে প্লাবিত হতে পারে বলেও জানান এ আবহাওয়াবিদ। উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলেছে আবহাওয়া অধিদফতর। এদিকে সাগরে তিন নম্বর সংকেত থাকলেও দেশে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাব কমে যাওয়ায় লঞ্চ ও ফেরি চলাচলের অনুমতি দিয়েছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টায় বিআইডব্লিউটিএ’র জনসংযোগ কর্মকর্তা মোবারক হোসেন মজুমদার এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, আজ বেলা ১২টার দিকে লঞ্চ ও ফেরি চলাচলের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে। এর আগে, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের কারণে দুর্ঘটনা এড়াতে সতর্কতা হিসেবে বুধবার সকাল ৯টা থেকে ফেরি ও গত মঙ্গলবার বিকেল ৪টা থেকে লঞ্চ চলাচল বন্ধ রাখা হয়।
দূরপাল্লার লঞ্চ চলাচলের ঘোষণা : দুই দিন বন্ধ থাকার পর গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে দেশের অভ্যন্তরীণ রুটে দুই ইঞ্জিনের দূরপাল্লার লঞ্চ চলাচলের অনুমতি দিয়েছে বিআইডব্লিউটিএ। গতকাল বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানিয়েছে বিআইডব্লিউটিএ। তবে ইঞ্জিনচালিত লঞ্চ (ট্রলার) বন্ধ থাকবে। ফলে মাওয়া ও আরিচাঘাটের লঞ্চ বন্ধই থাকছে। এর আগে মঙ্গলবার (২৫ মে) এক বিজ্ঞপ্তিতে সারাদেশে সকল নৌযান চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছিল বিআইডব্লিউটিএ।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি হচ্ছে। এমন আবহাওয়ার ফলে দেশের অনেক জায়গায় স্থায়ীভাবে দমকা, ঝোড়ো বাতাসসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে। আজ বৃহস্পতিবার সকালে আবহাওয়া অধিদফতরের এক সতর্কবার্তায় এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, খুলনা, বরিশাল, ঢাকা, রাজশাহী, রংপুর ও চট্টগ্রাম বিভাগের বেশিরভাগ জায়গায় এবং ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা, ঝোড়ো বাতাসসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, ভোলা, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর এবং চট্টগ্রামের বিভাগের অন্যান্য জেলাগুলোতে ও অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোতে ঘণ্টায় ৫০ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে দমকা অথবা ঝোড়ো বাতাস বয়ে যেতে পারে বলে সতর্কাবার্তায় বলা হয়েছে। এ সময় বাতাসের গতি বেশি থাকায় ও পূর্ণিমার প্রভাবে খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, ভোলা, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর ও চট্টগ্রামের জেলাগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ২ থেকে ৪ ফুট বেশি উচ্চতার জোয়ারে প্লাবিত হতে পারে। এজন্য উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সকল প্রকার মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।