কোয়ারেন্টিনে ‘ধর্ষণের শিকার’ সেই তরুণী আত্মহত্যার চেষ্টা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১১:৪৪ পিএম, ১৯ মে,
বুধবার,২০২১ | আপডেট: ০৪:৩৬ পিএম, ২১ সেপ্টেম্বর,শনিবার,২০২৪
খুলনা পিটিআই কোয়ারেন্টিন সেন্টারে ধর্ষণের শিকার সেই তরুণী আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। মঙ্গলবার (১৮ মে) রাত সাড়ে ৮টার দিকে নিজ রুমে তিনি আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। এ সময় কোয়ারেন্টিন সেন্টারে থাকা অন্যান্যরা এবং নারী পুলিশ সদস্যরা তাকে রক্ষা করেন। খুলনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আজ বুধবার খুলনার ডিসি মোহাম্মদ হেলাল হোসেন গণমাধ্যমকে জানান, ওই তরুণী মঙ্গলবার রাতে আত্মহত্যার চেষ্টা করলে কোয়ারেন্টিনে থাকা অন্যরা তাকে রক্ষা করেন।
গত ৪ মে ওই তরুণী ভারত থেকে বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে আসেন। পরে তাকে খুলনা পিটিআই সেন্টারে কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়। কোয়ারেন্টিনে থাকা অবস্থায় গত ১৩ ও ১৫ মে রাতে তাকে দুই দফা ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে মোখলেছুর রহমান নামে এক এএসআইয়ের বিরুদ্ধে।
এরপর ১৭ মে ওই তরুণী বাদি হয়ে খুলনা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন। মামলার পর খুলনা মেট্রোপলিটন থানা পুলিশ এএসআই মোখলেছকে গ্রেপ্তার করে। এরপর আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
জানা গেছে, ১ মে থেকে এএসআই মোকলেছুর রহমান খুলনা পিটিআই কোয়ারেন্টাইন সেন্টরের দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন। ৪ মে ভারত থেকে ফিরে ওই যুবতি সেখানে কোয়ারেন্টাইনে থাকেন। গত ১৩ মে দিবাগত রাতে ডিউটিতে থাকাকালীন এএসআই মোকলেছুর রহমান নিচতলা হতে দ্বিতীয় তলায় কোয়ারেন্টাইনে অবস্থানরত ঐ তরুণীর (২২) কক্ষে বিনা অনুমতিতে প্রবেশ করে তার মুখ চেপে ধরে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে।
বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে আসলে সত্যতা যাচাইয়ের জন্য প্রাথমিক অনুসন্ধান করা হয়। অনুসন্ধানকালে ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা পরিলক্ষিত হলে কেএমপি’র প্রসিকিউশন আদেশ নং-১৭৬, রোববার (১৬ মে) এএসআই মোকলেছুর রহমানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
১৭ মে মামলা দায়ের হওয়ার পর ওই রাতে পুলিশ মোকলেছুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে। পরে ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য ভিকটিমকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গত সোম ও মঙ্গলবার দু’দিন তার পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষায় আলামত মিলেছে বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।
খুলনা মেডিকেলে থাকার সময় ওই নারী ফোনে বলেন, আমার দুটি সন্তান রয়েছে। এ ঘটনায় আমি সামাজিকভাবে হেয় হয়েছি। আমার সঙ্গে যা হয়েছে তা যেন অন্য কোনো নারীর সঙ্গে না হয়। আমি আসামির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আবু সাইদ বলেন, এএসআই মোকলেছুর রহমানকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। নারীর ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। আমরা ইতিমধ্যে ভিকটিমের ডিএনএ টেস্টও করেছি, অভিযুক্ত পুলিশ সসস্যের ডিএনএ টেস্ট করার জন্য আদালতে আবেদন করা হয়েছে।
এদিকে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের এডিসি সোনালী সেন সাংবাদিকদের জানান, ভিকটিমের সমস্ত পরীক্ষা শেষ হয়েছে। মেডিকেল রির্পোটের জন্য চিকিৎসকের ওপর নির্ভর করতে হবে। তাছাড়া তার শরীরের অবস্থা এখন আগের চেয়ে অনেক ভাল। তাকে আমরা পর্যবেক্ষণে রেখেছি। এএসআই মোকলেছুর রহমানের বিরুদ্ধে পুলিশ আইনগত ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে, বিভাগীয় মামলা হবে শিগগিরই।