ভারত ফেরত করোনা রোগীর পলায়ন, ফের হাসপাতালে ভর্তি
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪:৩৭ পিএম, ২৭ এপ্রিল,মঙ্গলবার,২০২১ | আপডেট: ১১:৩৬ পিএম, ১৭ নভেম্বর,রবিবার,২০২৪
যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল থেকে পালিয়ে গিয়েছিলেন ১০ করোনা রোগী। তাদের মধ্যে সাতজন ছিলেন ভারত ফেরত। এর ফলে করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ার সংশয় তৈরি হয়। হাসপাতাল রোগীদের পালিয়ে যাওয়ার বিষয়টি জানাজানি হলে টনক নড়ে কর্তৃপক্ষের। অবশেষে পালিয়ে যাওয়া রোগীদের সংশ্লিষ্ট এলাকার থানার সহযোগিতায় উদ্ধার করেছে যশোর পুলিশ।
পরে তাদের আবারও যশোর জেনারেল হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যশোর পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. তৌহিদুল ইসলাম।
এর আগে ১০ জন করোনা রোগী কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই হাসপাতাল থেকে চলে যান। এদের মধ্যে সাতজন ভারত ফেরত করোনা পজিটিভ।
গত রোববার তাদের পালিয়ে যাওয়ার বিষয়টি জানাজানি হয়। পালিয়ে যাওয়া রোগীরা যদি ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টের বাহক হন, তা হলে তা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করেছেন চিকিৎসকরা। রোগী ‘পালানো’র ঘটনায় গতকাল সোমবার দিনভর তোলপাড় চলছে বিষয়টি নিয়ে।
এ প্রসঙ্গে যশোর জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান বলেন, হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডের ১০ জন রোগী ছাড়পত্র না নিয়ে চলে যান। এদের মধ্যে সাতজন ভারত ফেরত করোনা রোগী রয়েছেন। ওই সাতজনের মধ্যে খুলনার তিনজন, সাতক্ষীরার দুজন, যশোর ও রাজবাড়ী জেলার একজন করে।
হাসপাতালের রেজিস্টারে ওই ১০ জনের নাম-ঠিকানা ছিল। তাদের চিহ্নিত করা হয়েছিল। সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও সিভিল সার্জনকে অবহিত করে আবারও তাদের যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
যশোরের সিভিল সার্জন শেখ আবু শাহীন বলেন, করোনা ওয়ার্ডে নার্স ও চিকিৎসক দায়িত্ব পালন করেন। সেখানে নিরাপত্তাকর্মী ছিলেন না। গেট তালাবদ্ধ করা হয়নি। এ জন্য রোগীরা চলে যেতে পেরেছেন। এখানে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলা নেই। অবশ্য তালাবদ্ধ রাখলে এভাবে চলে যেতে পারতেন না। তবে এ ক্ষেত্রে আক্রান্ত রোগীদের আরও বেশি সচেতন হওয়া উচিত ছিল।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, কয়েক দিনে যশোর জেনারেল হাসপাতালের তৃতীয় তলায় করোনা ওয়ার্ডে ১০ জন কোভিড পজিটিভ রোগী ভর্তি করা হয়। এদের মধ্যে সাতজন ভারত ফেরত ছিলেন। তাদের বেনাপোল ইমিগ্রেশন থেকে চিকিৎসার জন্য এ হাসপাতালে পাঠানো হয়। তারা সবাই পালিয়ে গিয়েছিলেন।
পালিয়ে যাওয়া রোগীরা হলেন যশোর সদর উপজেলার পাঁচপাবাড়িয়া গ্রামের রবিউলের স্ত্রী ফাতেমা (১৯), একই গ্রামের একরামুল কবীরের স্ত্রী রুমা (৩০), যশোর শহরের বারান্দীপাড়া এলাকার বিশ্বনাথের স্ত্রী মনিমালা দত্ত (৪৯), যশোর শহরের ওয়াপদা গ্যারেজ পাড়ার ভদ্র বিশ্বাসের ছেলে প্রদীপ বিশ্বাস (৩৭), সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার প্রতাপপাড়া গ্রামের জামাল হোসেনের ছেলে মিলন হোসেন (৩২), সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার সোনতলা গ্রামের মনোতোষ সর্দারের স্ত্রী শেফালী রানী (৪০), খুলনার পাইকগাছার ভামরাইল গ্রামের আহমদ সানার ছেলে আমিরুল সানা (৫২), খুলনার রূপসা চর এলাকার শের আলীর ছেলে সোহেল সরদার (১৭), খুলনা মহানগরের বিকে পূর্ব লেন এলাকার পুলিন কৃষ্ণ সরকারের ছেলে বিবেকান্দ সরকার ও রাজবাড়ী সদর উপজেলার রামকান্তপুর গ্রামের আবদুল কুদ্দুসের মেয়ে নাসিমা আক্তার।
এদের মধ্যে মনিমালা, মিলন হোসেন, শেফালি রানী, আমিরুল সানা, সোহেল সরদার, বিবেকানন্দ সরকার ও নাসিমা আক্তার ভারত ফেরত।