সরকারি চাকরি সাথে রাজনীতিতে ব্যস্ত স্কুল শিক্ষক
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:৩৬ পিএম, ২১ এপ্রিল,
বুধবার,২০২১ | আপডেট: ০৩:০৪ এএম, ২১ সেপ্টেম্বর,শনিবার,২০২৪
সরকারি চাকরির পাশাপাশি রাজনীতি সাথে সম্পৃক্তের অভিযোগ স্কুল শিক্ষকের বিরুদ্ধে। মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার আদমপুর ইউনিয়নের পূর্ব জাললপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মামুনুর রশিদ সরকারি চাকরির পাশাপাশি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
সরকারি বিধিমালা অনুযায়ী, সরকারি চাকরিজীবী কর্মকর্তা, কর্মচারী কোনো রাজনৈতিক সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ত না থাকার নির্দেশ থাকলেও আইন উপেক্ষা করে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদকদের দায়িত্ব পালন করছেন।
অনুসন্ধান করে জানা যায়, বিভিন্ন জাতীয় ও দলীয় প্রোগ্রামে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃতৃন্দের সাথে মামুনুর রশিদের ছবি ও দলীয় পদ উল্লেখ্য করা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোষ্ট। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় জনমনে গুঞ্জন সৃৃষ্টি হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কমলগঞ্জ উপজেলা ও আদমপুর ইউনিয়নের একাধিক ব্যক্তি জানিয়েছেন সরকারি চাকুরী করেও কীভাবে মামুনুর রশিদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদকের পদে আছেন বিষয়টি বোধগম্য নয়। সরকারি বিধিমালায় বলা আছে,সরকারি চাকুরী করে কেউ দলীয় রাজনীতি করতে পারবেন না।
এ বিষয়ে পূর্ব জালালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও বর্তমান পদে থাকা আদমপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারান সম্পাদক মামুনুর রশিদ ভুইয়া বলেন,২০০৩ সালে আদমপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ কমিটি গঠন করা হয়। সেই সময়ে আমি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক হই। এছাড়াও আমি ওই সময় বেসরকারি স্কুলের শিক্ষক ছিলাম। মাত্র কয়েক বছর হয়েছে আমাদের স্কুল সরকারি হয়েছে।
তিনি আরোও জানান, ২০০৩ সালের পর থেকে এখন র্পযন্ত আওয়ামী লীগের কোনো কমিটি গঠন করা হয়নি। তখনকার কমিটির সভাপতি বর্তমানে বেঁচে নেই, আর এতোদিন কোনো কমিটির মেয়াদ থাকেনা বিধায় এই কমিটি অটোমেটিক বাতিল হয়ে গিয়েছে। এছাড়াও আমার চাকরি সরকারি করন হওয়ার পর আমি দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি নিয়েছি।
তবে সোস্যাল মিডিয়া সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে দলীয় পরিচয় বিষয়ে তিনি বলেন আমি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সমিতির কমলগঞ্জ উপজেলা শাখার সভাপতি এই পদবী ফেসবুকে দেওয়া হয়, অন্য কোন রাজনৈতিক পদবী ব্যবহার হয়নি।
উনার মন্তব্যের বিষয়টি অনুসন্ধান করে জানা যায় তিনি ২০১৭ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত শিক্ষকতার পাশাপাশি আওয়ামী লীগ এর রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। বিভিন্ন সভা সমাবেশ, রাজনৈতিক মিছিলসহ মক্তব্য দিতে দেখা যায়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছবিতে দেখা যায় তিনি বিভিন্ন রাজনৈতিক প্রোগ্রামে ব্যানার সহ সভা সমাবেশ করছেন যা নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে গুঞ্জন সৃষ্টি হয়েছে।
এবিষয়ে আদমপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো: হাজির বক্ত বলেন, দীর্ঘদিন থেকে কমিটি গঠন করা হয়নি বলে মামুনুর রশিদকে কমিটি থেকে বাতিল করা যায়নি, তবে কাগজে কলমে উনার নাম থাকলেও যুগ্ম সম্পাদককে ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব দিয়েই দলীয় র্কাযক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে কমলগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সাইফুল ইসলাস বলেন, সরকারি কোন কর্মকর্তা রাজনৈতিক দলের কোন পদে থাকতে পারবেন না। তিনি আরোও বলেন স্কুল শিক্ষকের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত থাকার বিষয়টি আমাদের জানা নেই। তদন্তে করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান।
তবে বিষয়টি নিয়ে কমলগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী কোন মন্তব্য করেননি।