তরুণীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় দুই নারীসহ গ্রেপ্তার ৩
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:৪৮ পিএম, ১৫ এপ্রিল,বৃহস্পতিবার,২০২১ | আপডেট: ০৪:৩৫ পিএম, ২০ সেপ্টেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
ফরিদপুরের মধুখালীতে তরুণীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত দুই নারীসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আজ বুধবার দুপুরে তাদের ফরিদপুর আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়। এর আগে মঙ্গলবার (১৩ এপ্রিল) রাতে ওই তরুণীর বাবা বাদী হয়ে তিনজনের নামে এবং অজ্ঞাত আরও তিন-চার ব্যক্তিকে আসামি করে মানবপাচার ও ধর্ষণের মামলা করেন।
তরুণীর বাবা জানান, ঘটনায় জড়িত রোজিনা ও তার মা পারুল আক্তার এবং জাকিরুল হক নামে তিন ব্যক্তির নামে এবং অজ্ঞাত আরও তিন-চার ব্যক্তির নামে মামলা দায়ের করেছি। আমার মেয়ে এখন কিছুটা সুস্থ, ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসি সেন্টারে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
মধুখালী থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) রথিন্দ্র নাথ তরফদার বলেন, মঙ্গলবার রাতে ওই তরুণীর বাবা বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। রাতেই অভিযান চালিয়ে জাকিরুল হক নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে রোজিনা ও তার মা পারুল আক্তারকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তিনি বলেন, আটক রোজিনা ও তার মা পারুল আক্তার মধুখালী আশ্রায়ন কেন্দ্রের বাসিন্দা। এ ছাড়া জাকিরুল হকের বাড়ি গোপালগঞ্জ জেলায়। সে মধুখালীতে অবস্থিত ফরিদপুর চিনিকলের বিদ্যুৎ বিভাগে চুক্তিভিত্তিক কর্মচারী হিসেবে কর্মরত। তাদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া ওই তরুণী সুস্থ হলে ২২ ধারায় তার জবানবন্দী নিয়ে ঘটনায় আরো জড়িতদের গ্রেপ্তার করা হবে।
ফরিদপুর চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কৃষিবিদ মো. গোলাম কবির জানান, তরুণীর সঙ্গে খুবই ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটানো হয়েছে। এ ঘটনায় চিনিকলের বিদ্যুৎ বিভাগের চুক্তিভিত্তিক কর্মচারী জাকিরুল হক জড়িত জানতে পেরেছি, পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেছে। চিনিকল থেকেও তাকে অব্যাহতি দেওয়া হবে।
ভুক্তভোগী ওই তরুণীর মা জানান, মেয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসি সেন্টারে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তবে মঙ্গলবার রাতে ফরেনসিক পরীক্ষার কথা থাকলেও তা করা হয়নি। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন বৃহস্পতিবার পরীক্ষা করা হবে।
জানা যায়, মধুখালী পৌর এলাকার আশ্রায়ন কেন্দ্রে বসবাস করেন পারুল আক্তার ও তার মেয়ে রোজিনা। পাশ্ববর্তী গ্রামের এক মেয়ে (১৮) রোজিনার বান্ধবী। ওই মেয়ে বিবাহিতা। তার তিন বছরের একটি সন্তান রয়েছে। কয়েকদিন আগে ওই মেয়ে তার বাবার বাড়ি বেড়াতে আসেন। বাড়িতে আসার পর রোজিনা ওই মেয়ের বাড়ি গিয়ে গল্প করে। মামলা সূত্রে জানা যায় রবিবার (১১ এপ্রিল) রোজিনা ও তার মা পারুলসহ কয়েকজন ওই মেয়েটির বাড়ি যায়। বাড়িতে গিয়ে গল্প করে চলে আসেন। কিছুক্ষণ পর রোজিনা ওই বাড়ি গিয়ে বলে, তোদের বাড়িতে মোবাইল ফেলে গেছি, মোবাইলটা দে’।
মেয়েটি বলে, ‘মোবাইল এখানে রেখে যাসনি’। বিষয়টি নিয়ে দুজনের মধ্যে তর্কবিতর্ক হয়। একপর্যায়ে রোজিনা ওই বাড়ি থেকে চলে আসে। এরপর বিকালে রোজিনা ও তার মা পারুল কয়েকজন লোক নিয়ে ওই মেয়েটিকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে আসে। এরপর দুইদিন তারা বিভিন্ন স্থানে নিয়ে গিয়ে ওই তরুণীকে চেতনানাশক খাইয়ে অচেতন করে ধর্ষণে সহযোগিতা করেন। এরপর মঙ্গলবার সকালে মেয়েটিকে অচেতন অবস্থায় তাদের বাড়িতে ফেলে রেখে আসে।