একদিনে ১১ বিঘা জমি কিনে কোটিপতি নাইটগার্ডের দৌড়ঝাপ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:২৪ পিএম, ১১ এপ্রিল,রবিবার,২০২১ | আপডেট: ০৪:৪০ এএম, ২২ নভেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
দেশের জাতীয়, আঞ্চলিক ও বিভিন্ন অনলাইন পত্রিকায় “একদিনে সাড়ে ১১ বিঘা জমি কিনে আলোচনায় এক নাইটগার্ড” শীর্ষক খবর প্রকাশের পর দৌড়ঝাপ শুরু করেছে নাইটগার্ড তরিকুল ইসলাম। তার বিরুদ্ধে যেন আর সংবাদ প্রকাশ না হয় সে জন্য তিনি বিভিন্ন মহলের স্মরনাপন্য হচ্ছেন।
এদিকে তথ্যভিত্তিক সংবাদ প্রকাশের পর নাইটগার্ড তরিকুল ভেঙ্গে পড়েছেন। পারিবারিক ভাবে নাইটগার্ড তরিকুল চাপের মুখে পড়েছেন। তরিকুলের অপকর্মের খবরটি প্রচারের পর তার স্ত্রী সন্তানরা বাইরে মুখ দেখাতে পারছে না।
মহল্লাবাসী তাকে ঘৃনার চোখে দেখতে শুরু করেছেন। একের পর এক নাইটগার্ড তরিকুলের কোটিপতি হওয়ার খবর প্রচারের পর তার উচ্ছিষ্ট ভোগীরা হতাশায় পড়েছেন। কথিত সাংবাদিকরা তরিকুলের সম্রাজ্য রক্ষা করতে না পেরে নানা রকমের ধান্দাবাজীতে লিপ্ত হচ্ছেন।
নাইটগার্ড তরিকুল ও তার সিন্ডিকেটের খবর প্রচারের পর নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। লকডাউন উঠে গেলেই একাধিক সংস্থা তদন্তের উদ্যোগ নিচ্ছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। সরকারের একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা তরিকুলের খোঁজ খবর নিচ্ছেন। নজর রাখছেন তার গতিবিধির উপর।
তথ্য নিয়ে জানা গেছে, ২০১৪ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর ৮০৯৯ দলিলের মাধ্যমে তরিকুল তার ভাই শফিকুল ইসলামের নামে ১০৮ নং হামিদপুর মৌজায় প্রথম ১০৪ শতক জমি ক্রয় করেন।
সে সময় ওই জমির বিক্রয় মূল্য ছিল ২২ লাখ ৪৪ হাজার টাকা। বিএনপি নেতা প্রয়াত আজিজুল হক খান এই জমির বিক্রেতা। ১০৪ শতক জমি তরিকুল যখন তার ভাইয়ের কাছ থেকে ৯৩৩০ নং হেবা দলিল করেন তখন জমির মূল্য দেখানো হয়েছে ২৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা। একই বছরের ১৪ ফেব্রয়ারি ১১২ নং বগা মৌজায় ৭ লাখ টাকা দিয়ে ৯ দাগে সাড়ে ৫১ শতক জমি কেনা হয় মহেশপুরের লিটন হোসেনের কাছ থেকে।
এরপর ২০১৮ সালের ৮ জানুয়ারী ১১০ নং জলিলপুর মৌজায় হাল ৬৬৫৪ নং দাগে আব্দুল হামিদের কাছ থেকে সাড়ে ৪ শতক জমি কিনেন শফিকুল। এই জমির ক্রয় মূল্য দেখানো হয় এক লাখ টাকা। যার আরএস দাগ নং ৫২৯৬ ও ৫৩১৭। তথ্য নিয়ে জানা গেছে নাইটগার্ড তরিকুলের হেবা দলিলে ভাইয়ের কাছ থেকে নেওয়া সাড়ে ১১ বিঘা জমির মধ্যে ১০৮ নং হামিদপুর মৌজায় কেনা ৫ দাগে ৯৭ শতক জমি মহামূল্যবান। বর্তমান এই জমির দাম কোটি টাকার কাছাকাছি হবে এমনটি মনে করেন মহল্লাবাসি।
২০১৭ সালের ২৮ আগষ্ট মাসে এই জমিটি সম্ভু দাসের কাছ থেকে শফিকুলের নামে কেনা হয়। সে সময় জমির ক্রয় মূল্য ছিল ২৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা। ৩ বছর পর এসে ৯৩২৬ নং হেবা দলিলে যখন নাইটগার্ড তরিকুল তার ভাইয়ের কাছ থেকে নেন তখন মূল্য দেখানো হয়ছে সাড়ে ২৬ লাখ টাকা। একদিনে ৬ দলিলে তরিকুলের সাড়ে ১১ বিঘা জমি কেনা এখন তার কাল হয়ে দাড়িয়েছে।
আইনগত পক্রিয়া চারিদিক থেকে তরিকুরকে ঘিরে ধরছে। বিভাগীয় ভাবে তার মাথার উপর ঝুলছে শাস্তি ও বহিস্কারের খড়গ।
উল্লেখ্য গত কয়েক দিন ধরে নাইটগার্ড তরিকুলের অবৈধ সম্পদ অর্জনের খবর প্রকাশিত হলে মহেশপুর শহর আলোচনার কেন্দ্র বিন্দুতে পরিণত হয়। তরিকুল ঘটনা ধামা চাপা দিতে তার ভাইয়ের কাছ থেকে সাড়ে ১১ বিঘা জমি ফ্রি ভাবে হেবা দলিল করে নিয়েছেন বলে দাবী করলেও তার ভাই কি ভাবে এতো টাকা দিয়ে জমি কিনলেন সে প্রশ্ন উঠেছে।